‘কি করবো ? কখনো এ বিষয়, কখনো ওই বিষয়’

২০১৫ সালের এসএসসি পরীক্ষার শুরুতেই ২০ দলীয় জোট হরতাল-অবরোধের বেড়া জালে পড়ে রাজশাহীর জেলার এক লাখ ২৮ হাজার ১৯৯ জন পরীক্ষার্থী। বারবার হরতাল-অবরোধের কারণে পরিবর্তন করা হচ্ছে পরীক্ষার তারিখ। এতে হিমসিম খেতে হচ্ছে শিক্ষার্থী তথা তাদের অভিভাবরা।

এ বছরের গত ২ ফেব্রুয়ারি বাংলা প্রথম পত্রের পরীক্ষা এবং তার একদিন পর ৪ ফেব্রুয়ারি বাংলা দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের লাগাতার হরতাল-অবরোধে কারণে আবার পরিবর্তন হলো এসএসসি পরীক্ষা। এসএসসি পরীক্ষা নিয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছে দেশের লাখ লাখ শিক্ষার্থী। কোন পরীক্ষা কখন পরিবর্তন হয় তা নিয়ে উদ্বিগ্ন সবাই। শুধু পরীক্ষার নির্ধারিত দিনে হরতাল নয়। সপ্তাহে প্রায় প্রতিদিন থাকছে অবরোধ। এর সাথে পাল্লা দিয়ে চলছে হরতাল। আর এর কারণে পরিবর্তন হচ্ছে পরীক্ষার তারিখ। কখন তারিখ পরিবর্তন আর কখন হরতাল ডাকা হবে তার কোনো ঠিক ঠিকানা নেই। কখনো এ বিষয়, কখনো ওই বিষয় নিয়ে পড়তে গিয়ে কোনো কিছুই ঠিকমতো পড়া হয়ে উঠছে না। পড়ালেখায় ঘটছে ছন্দপতন। আর এতে শুধু শিক্ষার্থীরাই নয় অভিভাবকদের মধ্যে দেখা দিয়েছে হতাশা।

নগরীর বুধপাড়া এলাকার জাহাঙ্গীর আলীর ছেলে হিমেল এবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল এ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। হিমেল বলেন, পড়েছি ভালো, কিন্তু কখন কি পড়বো না পড়বো কিছুই বুঝে উঠতে পারছিনা। এর মধ্যে শুধু শুক্রবার করে পরীক্ষা হচ্ছে এতে পড়ার যে গতি ছিলো তা হারিয়ে গেছে। লেখাপড়ায় মন বসছে না। আবার শুক্রবারেও হরতাল থাকবে কি না তার কোনো মানে নেই।

অভিভাবক জাহাঙ্গীর আলী এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, এ ভাবে পরীক্ষা চললে পরীক্ষা তো ছেলে মেয়েদের ভালো হবেনা। পড়ার টান কমে যাবে। আগে পরীক্ষা শেষ হতে প্রায় এক থেকে দেড় মাস সময় লাগতো কিন্তু এবারের পরীক্ষা তিন মাসেও শেষ হবেনা।

নগরীর বুধপাড়া এলাকার আরেক পরীক্ষার্থী আবু হেনার মেয়ে নাসরিন বলেন, এভাবে পরীক্ষা দিতে ভালো লাগছে না। কয়েক দিন ধরে যে বিষয় পড়ছি পড়ে শুনছি যে সে বিষয়ে পরীক্ষা হবেনা। আমার মনের ভেতর যে জোর ছিল, তা শেষ হয়ে গেছে। এখন পড়ায় আর মন বসছে না।

বিসিএস আই আর ল্যাবরেটারী উচ্চ বিদ্যালয়ের গনিত বিভাগের শিক্ষক সুশান্ত কুমার আওয়ার নিউজকে জানান, পরীক্ষা যে ভাবে চলছে এতে অনেক সময় লাগবে শেষ হতে। আসলে এই হরতাল- অবরোধ কারো কাম্য নয়। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কথা সবার ভাবা প্রয়োজন আছে। তারাই দেশের ভবিষ্যৎ। তাদের কথা চিন্তা না করলে দেশ পিছিয়ে পড়বে।



মন্তব্য চালু নেই