কিশোরীকে গণধর্ষণের ক্ষতিপূরণ ৩০ মণ গম!

পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশে ১৪ বছরের এক কিশোরীকে গণধর্ষণের ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৩০ মণ গম ধার্য করেছেন গ্রাম্য মাতব্বরেরা। অন্যথায় ওই কিশোরীর পরিবারকে গ্রামছাড়া করার হুমকি দেওয়া হয়।

প্রদেশের ওমেরকোট জেলার গোলাম নবী শাহ এলাকায় সম্প্রতি এ ঘটনা ঘটে বলে ডনের খবরে বলা হয়। ঘটনার পরপরই ওই কিশোরীর ভাই থানায় অভিযোগ করলেও কয়েক দিন আগে পুলিশ মামলাটি নথিভুক্ত করে।

ওই কিশোরীর বাবা অভিযোগ করেন, মামলার প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করার পর বিষয়টি ‘জিরগা’র মাধ্যমে সুরাহার জন্য তাঁকে চাপ দেওয়া হয়। স্থানীয় উপজাতি বয়োজ্যেষ্ঠদের পরিচালিত সালিস ব্যবস্থাকে জিরগা বলা হয়। স্থানীয় প্রভাবশালী এক ভূমিমালিকের তত্ত্বাবধানে এই জিরগা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে তাঁকে (কিশোরীর বাবা) ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৩০ মণ গম দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। তিনি এই ক্ষতিপূরণ মানতে রাজি না হওয়ায় তাঁকে পরিবারসহ গ্রামছাড়া করার হুমকি দেওয়া হয়।

ধর্ষণের শিকার কিশোরীর বাবা অভিযোগ করেন, স্থানীয় গণমাধ্যমে বিষয়টি এলে তাঁকে মুখ বন্ধ রাখতে ও মামলা তুলে নিতে হুমকি দেওয়া হয়।

মিরপুরকাশ বিভাগের পুলিশের উপমহাপরিদর্শক জাবেদ আলম ওধো বলেন, ওমেরকোট পুলিশের জ্যেষ্ঠ সুপারিনটেনডেন্টকে বিষয়টি তদন্ত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং ওই কিশোরীর পরিবারকে নিরাপত্তা দিতে বলা হয়েছে।

গোলাম নবী শাহ স্টেশনের হাউস অফিসার আরিফ ভাটি বলেন, ২১ মার্চ মামলাটি নথিভুক্ত হয় এবং প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

পাকিস্তান সরকার জিগরা পদ্ধতিকে অবৈধ বলে ঘোষণা করার পরও দেশটির প্রত্যন্ত এলাকায় এখনো এ ধরনের বিচারব্যবস্থা প্রচলিত রয়েছে।

ভূমিমালিক মোহাম্মদ হাসান ম্যাংরিও এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘অভিযুক্ত ও ভুক্তভোগী দুই পরিবার মিলে বিষয়টি মীমাংসা করা উচিত।’

সিন্ধু রুরাল পার্টনার অর্গানাইজেশনের (এসআরপিও) প্রধান জাহিদা দেথা এ ঘটনাকে এলাকায় সবচেয়ে ‘নিকৃষ্ট’ ঘটনা বলে উল্লেখ করেন। তিনি ঘটনা তদন্তে বিচার বিভাগীয় কমিশন গঠনের আরজি জানান।



মন্তব্য চালু নেই