কিশোরগঞ্জে বিদ্যুতের অতিরিক্ত লোড শেডিং॥ ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা ও চাষাবাদ
খাদেমুল মোরসালিন শাকীর, কিশোরগঞ্জ (নীলফামারী) প্রতিনিধি॥ কিশোরগঞ্জে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে চলছে পিডিবি ও পল্লী বিদ্যুতের লোড শেডিং। রাত হলেই এর কবলে পড়ছে শিক্ষার্থী ও সেচ দিয়ে ইরি ধান চাষ করা চাষিরা। আগামী ২ ফেব্র“য়ারী এস এস সি,দাখিল ও সমমানের পরীক্ষা। এ পরীক্ষাকে সামনে রেখে পরীক্ষার্থীরা দিন রাত বইয়ের সাথে মনোনিবেশ করেই চলছে। পরীক্ষা যত ঘনিয়ে আসছে বিদ্যুতের অসহনীয় লোড শেডিং ততই বেড়েই চলছে। সন্ধ্যা হলেই প্রতিনিয়ত লোড শেডিং ও লো-ভোল্টেজের কারণে বিদ্যুতের কাজে ব্যবহৃত ইলেক্ট্রিক যন্ত্রপাতি নষ্ট হচ্ছে। সংবাদকর্মীরা বিকেল হলে কম্পিউটার ডেক্সটপ চালু করে সংবাদ পরিবেশন করতে পারছে না। সন্ধ্যা হলে কিশোরগঞ্জ বাজারের লোকজন দোকান বন্ধ করে বাড়ীতে চলে যায়। প্রতিনিয়ত বিদ্যুতের কারণে বিভিন্ন পেশার মানুষ নানান ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ্য হচ্ছে। বিশেষ করে সন্ধ্যায় বিদ্যুৎ না থাকায় এস এস সি পরীক্ষার্থীরা লেখাপড়া করতে পারছে না। রাতে পরীক্ষার্থীরা চোখের ক্ষতি করে এমন কিছু লাইট ব্যবহার করে কষ্টে পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছে। কৃষক সন্ধ্যার পূর্বেই সেচ পাম্প বন্ধ করে জমিতে পানি দেয়া বন্ধ করছে। ফলে চাষাবাদ করা ফসলের বিভিন্ন ক্ষতি দেখা দিয়েছে। কিশোরগঞ্জ সদর ইউনিয়নের বানিয়াপাড়া গ্রামের আলহাজ্ব আবেদ আলীর সাথে কথা হলে তিনি বলেন আমার সেচ পাম্পে ব্যবহৃত পানির পাম্প লো-ভোল্টেজের কারণে কয়েল পুড়ে গেছে। অন্যদিকে এস এস সি পরীক্ষায় অংশ গ্রহনকারী পরীক্ষার্থীরা পড়েছে মারাত্মক বিপাকে। চাদখানা ইউনিয়নের স্কুল পড়া ছাত্রী সুমাইয়া আক্তার শান্তা মনি জানান,ছোট থেকে বিদ্যুতের আলোয় পড়ালেখা করেছি এখন বৈদ্যুতিক বাতি ছাড়া পড়ালেখা করতে পারি না। কিশোরগঞ্জ শহরের অনেক ছাত্রাবাসে পরীক্ষার্থীরা বিদ্যুতের লোড শেডিংয়ের কারণে পড়ালেখা করতে না পেয়ে রাতে অন্ধকার রুম থেকে বাহিরে এসে অবসর সময় পার করছে। বিদ্যুতের চরম লোড শেডিংয়ের কারণে অবিভাবকরাও পড়েছে চিন্তায়। কিশোরগঞ্জ দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী গ্রেনেট বাবু বলেন,প্রতিরাতে বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার কারণে বাজারের দোকানদাররা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তারাতারি বন্ধ করে চলে যান। এজন্য ব্যবসায়ীরা কিশোরগঞ্জ বাজারে ব্যবসা করতে আসতে চায় না। একদিকে রাস্তার খারাপ অবস্থা অন্যদিকে রাতে বিদ্যুৎ না থাকলে ব্যবসায়ীরা কিভাবে ব্যবসা করতে কিশোরগঞ্জ বাজারে আসবে। এস এস সি পরীক্ষার্থী তামান্ন আক্তার মণি বলেন,বিদ্যুতের কারণে পরীক্ষার পড়া কমপ্লিট করতে হিমশিম খাচ্ছি। ছাত্র ছাত্রীদের পড়ালেখা করার উপযুক্ত সময়ে বিদ্যুৎ থাকে না। তাহলে কিভাবে পড়ালেখা করি? এ ব্যাপারে কিশোরগঞ্জ পল্লী বিদ্যুতের এ জি এম নূর আলমের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, নীলফামারী জেলার অধীনে ২টি ফিডার চলে। তারমধ্যে ১টি ফিডার নীলফামারী উত্তরা ইপিজেডে এবং অন্য ফিডারের অধীনে নীলফামারীর ৫টি উপজেলায় ব্যবহার করা হয়। তারমধ্যে কিশোরগঞ্জে ৯টি ইউনিয়নের বিদ্যুতের চাহিদা ৬ মেগাওয়াট কিন্তু বর্তমানে কিশোরগঞ্জ অফিসের আওতায় বিদ্যুৎ পাই এক থেকে দেড় মেগাওয়াট। ফলে বিভিন্ন এলাকায় প্রতিদিন ২/৩ঘন্টা করে লোড শেডিং দিয়ে বিদ্যুৎ সাপ্লাই দেয়া হচ্ছে। তবে তিনি বলেন অল্প সময়ের মধ্যে আরেকটি নতুন সার্কিট স্থাপনের মাধ্যমে বিদ্যুতের লোড শেডিং থেকে রক্ষা করতে নীলফামারী পল্লী বিদ্যুতের জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) প্রকৌশলীদের নিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড কিশোরগঞ্জ উপজেলার আবাসিক প্রকৌশলী তারিকুল ইসলামের সাথে কথা হলে তিনি বলেন,রাতের মধ্যে বিদ্যুতের চাপ বেশী থাকে এবং সেচ কাজে পাম্প চালার কারণে বিদ্যুতের ঘাটতি তৈরী হয়। তবে খুব তারাতারি বিদ্যুতের লোড শেডিং থেকে বাঁচতে সুষ্ঠ্যু পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।
মন্তব্য চালু নেই