কিবরিয়া হত্যা : ১১ বছর পর পলাতক আসামি গ্রেফতার

সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা মামলার পলাতক আসামি কাজল মিয়াকে ১১ বছর পর গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার রাতে তাকে হবিগঞ্জ সদর উপজেলার পশ্চিম ভাদৈ এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৮ জন পলাতক আছেন।

সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইয়াছিনুল হক জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পেয়ে রাতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে। কাজল ঘটনার পর থেকেই পলাতক ছিলেন।

উল্লেখ্য, ২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি সদর উপজেলার বৈদ্যের বাজারে আওয়ামী লীগের জনসভা শেষে ফেরার পথে গ্রেনেড হামলায় নিহত হন সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া ও তার ভাতিজা শাহ মঞ্জুর হুদাসহ ৫ জন। এ ঘটনায় হত্যা এবং বিস্ফোরক আইনে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়।

হত্যা মামলাটি সিআইডিতে ন্যাস্ত হলে তদন্তের দায়িত্ব পান সিআইডির এএসপি মুন্সি আতিকুর রহমান। তিনি ওই বছরের ১৯ মার্চ আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। বিস্ফোরক মামলাটি তদন্ত শেষে তৎকালীন সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমএস জামান একই আদলে আদালতে ২০ এপ্রিল চার্জশিট দেন।

উভয় চার্জশিটে ১০ জনকে আসামি করা হয়। আসামিরা হলেন- শহীদ জিয়া স্মৃতি ও গবেষণা পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি এবং জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি একেএম আব্দুল কাইয়ুম, শহীদ জিয়া স্মৃতি ও গবেষণা পরিষদ জেলা সভাপতি সাহেদ আলী, লস্করপুর ইউনিয়ন সভাপতি জয়নাল আবেদীন মোমিন, বিএনপি লস্করপুর ইউনিয়ন সভাপতি জমির আলী, বিএনপি কর্মী জয়নাল আবেদীন জালাল, আয়াত আলী, তাজুল ইসলাম, কাজল মিয়া, মহিবুর রহমান ও জেলা ছাত্রদলের তৎকালীন সহ-দফতর সম্পাদক সেলিম আহমদ।

এর মধ্যে মহিবুর রহমান ও কাজল মিয়া ছাড়া অপর ৮ জন বিভিন্ন সময় গ্রেফতার হন। পরবর্তীতে ২০০৮ সালের মাঝামাঝি সময় ওই ৮ জন হাইকোর্ট থেকে জামিন লাভ করেন। বাদী পক্ষের কয়েক দফা নারাজির প্রেক্ষিতে মামলাটির অধিকতর তদন্ত হয়। সর্বশেষ তদন্ত করেন সিলেট সিআইডির সিনিয়র এএসপি মেহেরুন্নেছা পারুল।

২০১৪ সালের ১৩ নভেম্বর তিনি আদালতে সম্পূরক চার্জশিট জমা দেন। আর ২০১৫ সালের ১০ আগস্ট দেন বিস্ফোরক মামলার চার্জশিট। উভয় চার্জশিটেই সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র (সাময়িক বরখাস্তকৃত) আরিফুল হক চৌধুরী, হবিগঞ্জের পৌরসভার মেয়র (সাময়িক বরখাস্তকৃত) ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জি কে গউছসহ মোট ৩২ জনকে আসামি করা হয়।

এদের মধ্যে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, হুজি নেতা মুফতি আব্দুল হান্নান, আরিফুল হক চৌধুরী ও জিকে গউছসহ ১৫ জন দেশের বিভিন্ন কারাগারে আটক রয়েছেন।

শুক্রবার রাতে গ্রেফতার হয়েছেন পলাতক কাজল মিয়া। আর খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, মাওলানা তাজ উদ্দিন, মুফতি শফিকুর রহমানসহ এখনও পলাতক রয়েছেন ৮ জন পলাতক ও ৮ জন জামিনে আছেন।

হত্যা মামলাটি বর্তমানে সিলেট দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন এবং বিস্ফোরক মামলাটি হবিগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিচার প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই