কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্টের ক্ষেত্রে যা করা উচিৎ ও উচিৎ নয়

কিডনি মানুষের একটি অত্যাবশ্যকীয় অঙ্গ। কিডনির প্রধান কাজ হচ্ছে রক্ত থেকে বর্জ্য ও বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেয়া এবং শরীরের তরলের ভারসাম্য রক্ষা করে শরীরের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করা। কিডনি ফেইলিউর হওয়ার নানাবিধ কারণ থাকতে পারে। অপর্যাপ্ত পানি পান করা, ধূমপান, উচ্চ রক্তচাপ, স্থূলতা এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে সিস্ট ও টিউমারের কারণেও কিডনি ফেইলিউর হতে পারে।

যখন শরীরের উভয় কিডনিই নষ্ট হয়ে যায় তখন শরীরের তরলের ভারসাম্য নষ্ট হয় এবং বিষাক্ত পদার্থ শরীরে জমা হতে থাকে। যদি সঠিক সময়ে যত্ন নেয়া না হয় তাহলে জীবনের সংশয় দেখা দিতে পারে।

কিডনির সমস্যা দেখা দিলে রোগীকে সপ্তাহে ২/৩ দিন ডায়ালাইসিস করাতে হয়। ডায়ালাইসিস চিকিৎসার এমন একটি ধরণ যেখানে কৃত্রিমভাবে ইনজেকশনের মাধ্যমে রক্ত থেকে বিষাক্ত উপাদান বের করে নেয়া হয়।

কিডনি রোগটি দীর্ঘমেয়াদে থাকলে কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্টের পরামর্শ দেয়া হয়। রোগীর কিডনির সাথে ম্যাচ করে এমন কিডনি দাতা পাওয়াও বিশাল সমস্যা। যদি পরিবার বা আত্মীয়দের মাঝে কেউ কিডনি দান করেন এবং তার কিডনি রোগীর কিডনির সাথে ম্যাচ করে তখনই কেবল কিডনি প্রতিস্থাপন করা সম্ভব। অন্যথায় ডোনার পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে হবে।

কিডনি প্রতিস্থাপনের রোগীকে অনেক নিয়ম-কানুন মেনে চলতে হয় এবং সার্জারির পরে বিশেষ যত্ন নিতে হয় যাতে প্রতিস্থাপিত কিডনি পাল্টানো বা প্রত্যাখ্যানের শিকার না হতে হয়। কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্টের সময় ও ট্রান্সপ্ল্যান্টের পরে যা করা উচিৎ ও উচিৎ নয় সে বিষয়ে জেনে নিই চলুন।

কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্টের সময় ও ট্রান্সপ্ল্যান্টের পরে যা করা উচিৎ

১। কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্ট করা হলে ইমিউন সিস্টেম দুর্বল হয়ে পড়ে। তাই এই সময়ে ইনফেকশন থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য মানুষের কাছ থেকে দূরে থাকতে হবে কয়েক মাস।

২। নিয়মিত ঔষধ গ্রহণ করতে হবে।

৩। যদি কোন কারণে ইমিউনো সাপ্রেসিভ ঔষধ গ্রহণ করতে ভুলে যান তাহলে তা ডাক্তারকে জানান এবং তার পরামর্শ নিন।

৪। প্রতিদিন ব্লাড প্রেশার ও ওজন মাপতে হবে।

৫। রোগীর ঘরের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

৬। সার্জারির পরে রোগী যদি অসুস্থ বোধ করে তাহলে তা দ্রুত ডাক্তারকে জানানো উচিৎ।

৭। অস্ত্রপাচারের স্থানে ব্যথা, ফুলে যাওয়া বা রক্তপাত হলে দ্রুত তা চিকিৎসক দ্বারা চেক করানো প্রয়োজন।

৮। রোগীর যদি ভ্রমণের কোন প্ল্যান থাকে তাহলে তা চিকিৎসককে জানাতে হবে এবং তার পরামর্শ নিতে হবে।

কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্টের সময় ও ট্রান্সপ্ল্যান্টের পরে যা করা উচিৎ নয়

১। ঔষধ বন্ধ করবেন না।

২। ইমিউনো সাপ্রেসিভ এর শিডিউল পরিবর্তন করবেন না।

৩। ধূমপান করা যাবেনা।

৪। চিকিৎসকের পরামর্শ অবহেলা করবেন না।

৫। চিকিৎসক না বলা পর্যন্ত অন্য কোন ঔষধ গ্রহণ করা শুরু করবেন না।

৬। অস্ত্রপাচারের স্থানে যেন পানি না লাগে সেদিকে খেয়াল রাখুন। পানি লাগলে ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়।

৭। এমন কোন কাজে যুক্ত হওয়া উচিৎ নয় যা করলে কিডনির উপর চাপ পড়তে পারে।



মন্তব্য চালু নেই