কিডনিতে পাথর জমার এই লক্ষণগুলো আপনার আছে কি?

কিডনি আমাদের শরীরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ। দেহের মধ্যে প্রবাহিত রক্তকে কিডনি শোধন করে ও বর্জ্য পদার্থগুলোকে মলমূত্রের মাধ্যমে শরীর থেকে বের করে দেয়। আর এভাবে আমরা সুস্থ থাকি। এটি ভালো করে কাজ না করলে জটিল শারীরিক সমস্যায় ভুগতে হয়।

কিডনির সমস্যায় সবচেয়ে প্রথম ধাপ হলো কিডনিতে স্টোন বা পাথর জমা। যদি সঠিকভাবে শরীরের ক্ষতিকর টক্সিনগুলো না বের করা যায়, তাহলে কিডনিতে পাথর হতে বাধ্য।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ডিহাইড্রেশন, অত্যধিক মদ্যপান, বংশগত ধারা, অত্যধিক ওজন ও বেঠিক খাদ্যগ্রহণের ফলে কিডনিতে পাথর জমতে শুরু করে। কিডনিতে পাথর জমলে তা যেমন বেদনাদায়ক, তেমনই মূত্রথলির নলি আটকে দিয়ে মূত্রত্যাগেও নানাবিধ অসুবিধার সৃষ্টি হয়। অগত্যা হাসপাতালে যন্ত্রের সাহায্যে পাথর গুঁড়ো করা বা অপারেশনের মাধ্যমে বের করা ছাড়া উপায় থাকে না। তবে আগে থেকে জেনে গেলে সুস্থ হতে বেশি সময় লাগে না। কেননা, পাথর ছোট অবস্থায় ধরা পরলে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন এবং খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের মাধ্যমে এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব, কারণ ছোট আকৃতির পাথর সাধারণত প্রস্রাবের সঙ্গে বের হয়ে যায়।

জেনে নিন, কীভাবে বুঝবেন কিডনিতে পাথর জমার সমস্যা শুরু হয়েছেঃ

ব্যথাঃ
সাধারণত বক্ষপিঞ্জরের ঠিক নিচে, পেটের পেছন দিকে ও পাশে ব্যথা হতে পারে। ব্যথা এখান থেকে তলপেটে, কুঁচকির কাছে ছড়িয়ে যায়। প্রস্রাবে ব্যথা বা জ্বালাপোড়া হতে পারে।

প্রস্রাবের তাড়াঃ
ঘন ঘন মূত্রত্যাগের নানা কারণ হতে পারে। তার মধ্যে অন্যতম হলো কিডনিতে পাথর জমা।

বমি ভাবঃ
বেশির ভাগ সময়ই পেট খারাপ থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। এর পাশাপাশি বমি ভাবও হতে পারে।

ঘোলাটে মূত্রঃ
মূত্রের রং ঘোলাটে হলে শুধু কিডনিতে পাথর নয়, নানা ধরনের সংক্রমণও হতে পারে। তাই এমন সমস্যা দেখলে অবিলম্বে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন।

জ্বরঃ
কিডনিতে সমস্যা হলে জ্বর আসতে পারে। শরীর গরম হয়ে গেলে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে আনার ব্যবস্থা করতে হবে অবিলম্বে।

মাত্রাতিরিক্ত ঘামাঃ
শরীরের নানা জায়গা ও বিশেষ করে মুখ অতিরিক্ত ঘেমে যাওয়াকে আমরা খুব একটা পাত্তা দিই না। তবে এসবই কিডনিতে গোলমালের লক্ষণ বহন করে।

রক্তমিশ্রিত মূত্রঃ
যদি আপনার মূত্রের রং গোলাপি বা লালচে হয় ও তা দুর্গন্ধযুক্ত হয়, তাহলে দেরি না করে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন।

কিডনিতে পাথর হওয়া থেকে মুক্তি পাবার সহজ উপায়ঃ

পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করুন। এ ছাড়া কয়েকটি খাবার নিজের খাদ্যতালিকায় রাখলে কিডনিতে পাথর হওয়া থেকে মুক্তি পেতে পারেন।

ধনে পাতাঃ
ধনে পাতার রস শরীর থেকে টক্সিনকে বের করে দিতে বিশেষ সাহায্য করে। এটি প্রোটিন ও ভিটামিন সি-এ সমৃদ্ধ, যা কিডনিতে পাথর হওয়া থেকে মুক্তি দেয়। এটি কাঁচা বা রস করে খেতে পারেন।

তুলসী পাতাঃ
তুলসী পাতার অনেক গুণ। নানা ধরনের রোগের অব্যর্থ ওষুধ তুলসী। তুলসীর রস ও মধু নিয়মিত খেলে কিডনির পাথর হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।

বেদানাঃ
কিডনির পাথরকে দূর করতে উপকারী বেদানার রস।

শিমের খোসাঃ
শিমের খোসা সেদ্ধ করে সেই পানি রসের মতো করে খেলে কিডনির উপকার হয়। কিডনিতে পাথর হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়।।



মন্তব্য চালু নেই