কাশিমপুর কারাগারে অ্যাম্বুলেন্স, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা

হরকাতুল জিহাদের (হুজি) শীর্ষ নেতা মুফতি আবদুল হান্নান ও তার সহযোগী শরীফ শাহেদুল বিপুলের ফাঁসি কার্যকরের প্রক্রিয়া শুরু করেছে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার কর্তৃপক্ষ।

বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে কারাগারে প্রবেশ করেন অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক ইকবাল হাসান। এর কিছুক্ষণ আগে কারাগারে দুটি অ্যাম্বুলেন্স প্রবেশ করতে দেখা যায়।

এরপর একেক করে কারা মহারিদর্শক ব্রি. জেনারেল ইফতেখার আহমেদ, গাজীপুর জেলা প্রশাসক এসএম আলম এবং সিভিল সার্জন ডা. সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম কারাগারে প্রবেশ করেন।

দুই জঙ্গির ফাঁসি কার্যকর ঘিরে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে আইনশৃংখলা বাহিনী। সন্ধ্যা ৬টা ৫০ মিনিটে গাজীপুরের পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদ করা ফটকের কাছে সার্বিক আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

তিনি বলেন, শুধু কাশিমপুর কারাগার এলাকাই নয়, গোটা গাজীপুরেই কঠোর নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া দুই জঙ্গির ফাঁসি কার্যকরের পর তাদের লাশ গ্রামের বাড়ি পাঠানোর জন্যও পুলিশ প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

ফাঁসি কার্যকরের জন্য ইতিমধ্যে মহড়া সম্পন্ন হয়েছে। রাত ১০টার মধ্যে দুই জঙ্গির ফাঁসি কার্যকর হতে পারে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের একটি সূত্রে জানিয়েছে।

বিকাল ৪টার দিকে ডিআইজি প্রিজন মো. তৌহিদুল ইসলাম কারাগারে প্রবেশ করেন। তিনি সেখানে অবস্থান করছেন।

কারা সূত্র জানায়, দুপুরে মুফতি হান্নান ও বিপুলের নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেছেন কারা চিকিৎসক মো. মিজানুর রহমান। তারা সুস্থ ও স্বাভাবিক রয়েছেন। সন্ধ্যার পর আরেক দফা স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন।

অন্যদিকে সকালে মুফতি হান্নানের বড় ভাই আলিউজ্জামান মুন্সি, তার স্ত্রী জাকিয়া পারভিন রুমা, বড় মেয়ে নিশি খানম ও ছোট মেয়ে নাজরিন খানম সাক্ষাৎ করেন।

পরে দুপুরে ২টার দিকে মুফতি হান্নানের দুই ভাই যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারে থাকা বন্দি মো. মহিবুল ও গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারের বন্দি মো. আনিসও তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

এছাড়া মুফতি হান্নানের গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় কবর খোঁড়া শেষ হয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০০৪ সালের ২১ মে সিলেটের হযরত শাহজালালের (র.) মাজারে তৎকালীন ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলা হয়। এতে পুলিশের দুই কর্মকর্তাসহ তিনজন নিহত এবং আনোয়ার চৌধুরীসহ অর্ধশতাধিক আহত হন।

এ মামলার রায়ে ২০০৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর বিচারিক আদালত ৫ আসামির মধ্যে মুফতি হান্নান, বিপুল ও রিপনকে মৃত্যুদণ্ড এবং মহিবুল্লাহ ও আবু জান্দালকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। আপিল এবং রিভিউতেও তিনজনের মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকে। রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদনও নাকচ হয়ে যায়।



মন্তব্য চালু নেই