কালীগঞ্জে নৃশংসতায় দুই হাতের পর এবার দু’পা গেল আজিজের!

এসএম হাবিব, কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি : দুই হাত কেটে নেওয়ার পর দুর্বিসহ জীবন কাটছিলো আব্দুল আজিজের। খাওয়াসহ নিত্যকাজ হয়ে পড়ে পরনির্ভর। দুই হাত হারিয়ে কর্মক্ষম আব্দুল আজিজ হয়ে পড়ে অচল। ১৬ বছর আগে সন্ত্রাসীরা দুই হাত কেটে নেওয়ার পর এবার তার দুই পা কুপিয়েছে সন্ত্রাসীরা। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার রাতে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার আড়পাড়া গ্রামে। আবদুল আজিজ (৪২) কে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। আব্দুুল আজিজ কালীগঞ্জ উপজেলার বলিদাপাড়া গ্রামের ইসাহাক আলীর ছেলে।

প্রত্যক্ষদর্শী সুত্রে জানা গেছে, শনিবার রাতে তিনি কালীগঞ্জ শহরের আড়পাড়া এলাকা দিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন আব্দুল আজিজ। এ সময় ৪/৫ সন্ত্রাসী ধারালো অস্ত্র দিয়ে তার দুই পা কুপিয়ে জখম করে। পথচারীরা উদ্ধার করে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করেন। এলাকায় মাদক ব্যবসায়ীরা তাকে কুপিয়েছে বলে আব্দুল আজিজ অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, ২০০০ সালের ৩১ ডিসেম্বর উপজেলার সিংগী বাজারে চরমপন্থি দলের ক্যাডাররা তাঁর দুই হাত কেটে দেয়। পুলিশকে এক সন্ত্রাসীর ব্যাপারে তথ্য দেওয়ার অপরাধে চরমপন্থিরা তার ওপর হামলা চালায়। হামলার ঘটনার তার বাবা ইসাহক আলী থানায় মামলা করলেও ২০০৩ সালে রাজনৈতিক বিবেচনায় মামলাটি প্রত্যাহার করা হয়।

আবদুল আজিজ বলেন, দুই হাত হারিয়ে তিনি পথে বসেন। ব্যবসা বানিজ্য বন্ধ হয়ে যায়। স্ত্রী জোছনা বেগম, এক মেয়ে হাজেরা খাতুন ও এক ছেলে বোরাক আলীকে নিয়ে অতিকষ্টের সংসার তার। স্ত্রী জোছনা বেগম বলেন, এভাবে কষ্ট করে কেউ বেঁচে থাকতে পারে না। মামলায় বিচার পেলাম না, দুই হাত হারিয়ে স্বামী কর্ম করার শক্তি হারিয়ে ফেলেছে। এবার দুই পা কুপিয়ে পঙ্গু করে দিল।

ছেলে বোরাক আলী বলেন, তার বাবার সব কাজই পরনির্ভর। কখনো তার মা, কখনো সে আবার কখনো তার বোন বাবার কাজ করে দেয়। বাবার কষ্ট দেখে মাঝেমধ্যে গোটা পরিবার মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। এবার সন্ত্রাসীরা বাবার দুই পা কেটে নেওয়ার চেষ্টা করেছে। মাদক বিক্রিকে বাধা দেওয়ায় তার উপর হামলা করা হয় বলে পরিবারটির অভিযোগ।

কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডাঃ উজ্জল কুমার শিকদার জানান, আব্দুল আজিজের দুই পায়ের মাংশপেশী জখম হয়ে প্রচন্ড রক্তক্ষরণ হয়েছে। ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মাংশ তুলে ফেলা হয়েছে। আমরা পঙ্গুত্বের হাত থেকে রক্ষর চেষ্টা করছি।

এ বিষয়ে কালীগঞ্জ থানার ওসি আনোয়ার হোসেন বলেন, এ ব্যাপারে আমাদের কাছে আব্দুর রাজ্জাক অভিযোগ করেননি। রোববার সকাল ১০টার দিকে পুলিশ উদ্যোগ নিয়ে মামলা করেছে এবং আসামীদের গ্রেফতার করার চেষ্টা করছে। হামলার কারণ সম্পর্কে পুলিশ তদন্ত করছে বলেও তিনি জানান।



মন্তব্য চালু নেই