কালীগঞ্জে ইজিবাই চালক খোকন হত্যার দু,মাসে ও মামলার কোন অগ্রগতি নেই
এসএম হাবিব, কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি: ঝিনাইদহ কালীগঞ্জ থেকে নিখোঁজের ৫ দিন পর খোকন কুমার দাস (৩৮) নামের এক ইজিবাইক চালকের গলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। কিন্তু লাশ উদ্ধারের প্রায় ২ মাস অতিবাহিত হলে ও পুলিশ হত্যার মোটিভ ও হত্যাকারিদের আটক করতে পারেনি।
ইজিবাইক চালক খোকন দাস কালীগঞ্জ উপজেলার বেজপাড়া গ্রামের শ্যামা পদ দাসের ছেলে। গত ২২ জুন সে ঐ দিন বড়ি থেকে ইজিবাইক নিয়ে কালীগঞ্জ শহরে আসে। সারাদিন ভাড়া মেরে সন্ধ্যার দিকে তার বন্ধু একই গ্রামের রমেশ দাসের সাথে কয়েকজন ইজিবাইক চড়ে কালীগঞ্জ উপজেলার মোল্লাকূয়া গ্রামের দিকে যায়।
রমেশ, খোকনসহ কয়েক জন একসাথে বেশ কিছুদিন ধরে গাজা সেবন করতো। নেশা সেবনের ব্যাপার এলাকার অনেকেই জানতো। পুলিশ ও এলাকাবাসীর ধারনা তারা সন্ধ্যার সময় মোল্লাকুয়া গ্রামের একটি আখ ক্ষেতে গাজা সেবন করতে গিয়েছিল। সেখানে গাজা সেবনের পর তারা খোকন কে হত্যা করে ইজিবাইকটি নিয়ে যায়। গত ২৬ জুন এলাকার কয়েকজন দিনমজুর আখক্ষেতে কাজ করতে আসলে লাশ পড়ে থাকতে দেখে । লাশটি পচে গন্ধ হয়ে যায়, পরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে থানায় আসে।
খোকন হত্যার তদন্তকারী অফিসারের দায়িত্ব পান কালীগঞ্জ থানার এসআই আশরাফের উপর। তিনি এ মামলার তেমন কোন অগ্রগতি করতে পারেন নি। পরে অবশ্য এস আই আশরাফ বদলি হন সাতক্ষীরা জেলা ডিবি পুলিশে। শেষে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পান এসআই নিরব হোসেন। পুলিশ এ মামলার মুল (সনাক্তকারী) সাসপেক্ট হিসাবে চিহ্নিত করেন বেজপাড়া গ্রামের রমেশ দাস কে। রমেশ কে পুলিশ ধরে এনে জিঞ্চাসাবাদ করে অনেক টা নিশ্চিত হন যে, রমেশ এ হত্যার সাথে জড়িত।
কিন্তু পুলিশ একটি মহলের তদবিরের কারনে রমেশ কে থানা থেকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হন। অবশেষে রমেশ গত ৮ সেপ্টেম্বর রাতে পরিবার পরিজন নিয়ে ভারতে চলে গেছে। রমেশের ভিটাবাড়ি, মাঠের জমি খয়েরতলা এলাকার বাবলু নামে এক ব্যাক্তি গোপনে কিনে নিয়েছেন। রমেশ ছিল খোকন হত্যার মুল নায়ক সে কারনে সে পুলিশের হাতে আটক হবে এ ভয়ে সবকিছু বিক্রি করে পরিবার পরিজন নিয়ে রাতে ভারত চলে গেছে।
নিহত খোকন ও রমেশের সাথে যারা গাজা সেবন করতো তাদের সনাক্ত করে আটক করলে খোকন হত্যার প্রকৃত মোটিভ উন্মেচিত হবে। অনথ্যায় এ হত্যা মামলাটি ক্রমান্বয়ে ধামাচাপা পড়ে যাবে। বর্তমানে মামলাটির কোন অগ্রগতি নেই। একটি মাঠের আখক্ষেত থেকে পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে। নিহত খোকন দাস কালীগঞ্জ উপজেলার বেজপাড়া গ্রামের শ্যামা পদ দাসের ছেলে।
কালীগঞ্জ থানার অফিসার-ইন-চার্জ (ওসি) আমিনুল ইসলাম জানান, লাশটি ৫ দিন আগে নিখোঁজ হওয়া ইজিবাইক চালক খোকন দাসের। সুন্দরপুর-দুর্গাপুর ইউনিয়নের বেজপাড়া ওয়ার্ডের মেম্বর সুদেব দাস লাশটি খোকন দাসের বলে সনাক্ত করে।
ওসি আরো জানান, মাঠের মধ্যে পড়ে থাকা লাশের মুখ বাধা ছিল। সম্ভাবত ৩/৪ দিন আগে তাকে হত্যা করা হয়েছে। যার কারনে লাশটি পঁচে গলে যায়। তিনি বলেন, ইজিবাইক ছিনতাই করার জন্য তাকে হত্যা করা হয়। নিখোঁজ ইজিবাইক চালকের লাশ উদ্ধারের খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছিলেন কোটচাঁদপুর সার্কেল এএসপি আলী আযম খান।
উল্লেখ্য গত ২২ জুন দুপুর থেকে নিখোঁজ হয় ইজিবাইক চালক খোকন দাস। এরপর থেকে পরিবারের সদস্যরা তাকে খুঁজে পাচ্ছিলো না। মোবাইল ফোনও বন্ধ ছিল। পরিবারের সদস্যরা খোকনের নিখোঁজের বিষয়টি থানা পুলিশকে অবহিত করে।
খোকন নিখোজের পর খেকে তার মোবাইল ফোন বন্ধ ছিল। কিন্তু ভারতে পালিয়ে যাওয়া রমেশ দাস নিজের মোবাইল ফোন দিয়ে কালীগঞ্জ বাস টার্মিনালে বসে স্থানীয় ব্যাক্তিদের সামনে ফোনে কথা বলেছিলেন রমেশ দাস। অবশ্য রমেশ দাস অনেকের কাছে প্রচার করে বেড়াচিছল খোকন ঢাকা ধামরাইল এলাকায় রয়েছে। তার সাথে মোবাইল ফোনে আমার কথা হয়েছে।
রমেশসহ খোকনের ছোট ভাই প্রায়দিনই কালীগঞ্জ থানা পুলিশ কে বিভ্রান্ত করতো যে তারা শুনতে পেরেছেন কালীগঞ্জের বিভিন্ন স্থানের নাম বলতো আর বলতো যে অমক স্থানে একটি লাশ পড়ে রয়েছে। এত করেই পুলিশে আর ও সন্ধিহান সৃষ্টি হয়। বর্তমানে মামলার তদন্তকারী অফিসার এসআই নিরব হোসেনের সাথে আলাপ করলে তিনি বলেন, খোকন হত্যার বিষয়ে তিনি অনেক টা অগ্রগতি হয়েছেন। আসামিরা আটক হবে।
মন্তব্য চালু নেই