কারাগারে তাহের পুত্রের বিয়ে
লক্ষ্মীপুর জেলা কারাগারে থেকে মোবাইল ফোনে বিয়ে করলেন আলোচিত মেয়র আবু তাহেরের জেষ্ঠপুত্র আফতাব উদ্দিন বিপ্লব (৩৮)।
কারাফটকে শতাধিক লোকের উপস্থিতিতে বিয়ের কাবিননামায় বর ও কনের স্বাক্ষরকাজ সম্পন্ন করেন কাজী। শুক্রবার সন্ধ্যায় লক্ষ্মীপুর কারাগারে এ ঘটনা ঘটে। অত্যান্ত গোপনীয়তার মধ্য দিয়ে আয়োজন করা হলেও লক্ষ্মীপুরবাসীর বিষয়টি জেনে যায়।
বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা চলে মধ্যরাত পর্যন্ত। বিয়ে উপলক্ষে কারাফটকে মিষ্টি বিতরণ করেছে তাহেরের লোকজন।
কারাগারের একটি সূত্র জানায়, লক্ষ্মীপুর পৌরসভার মেয়র আবু তাহেরের ছেলে রাষ্ট্রপতি ক্ষমাপ্রাপ্ত আসামি বিপ্লবের সঙ্গে পৌর সভার ৮নম্বার ওয়ার্ডের লামচরী এলাকার জামায়াত সমর্থিত সাবেক সংসদ সদস্য সফিকুল ইসলামের বাড়ির (পন্ডিত বাড়ি) মরহুম অ্যাডভোকেট আবুল খায়েরের মেয়ে সানজিদা আক্তারের বিয়ে হয়। কনে লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। বিয়ের দেনমোহর ছিলো ১০ লাখ টাকা।
বিয়েতে স্বর্ণালঙ্কার ছিল ৩০ ভরি। বিয়ের আনুষ্ঠানিকতার পর রাতেই তাকে আবু তাহেরের বাসভবনে নিয়ে যাওয়া হয়। শনিবার দুপুর পর্যন্ত ওই বাড়িতে কনে অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে।
এ উপলক্ষে শুক্রবার বিকেলে বিপ্লবের বাবা আবু তাহের, ভাই সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম সালাহ উদ্দিন টিপুসহ অর্ধশতাধিক মেহমান উপস্থিত ছিলেন।
পরে কারাগারের জেল গেটে কাবিন নামায় স্বাক্ষর করেন বিপ্লব। এসময় পৌরমেয়র আবু তাহেরসহ কনেপক্ষের বেশ কয়েকজন অতিথি উপস্থিত ছিলেন। তখন বিপ্লব মুঠোফোনে নববধূর সঙ্গে কথা বলেন বলে জানা গেছে।
এদিকে কারাগারের একটি সূত্রে জানা গেছে, কারাগারের অভ্যন্তরে অপর কয়েকজন আসামি বিপ্লবের গায়ে হলুদ-মেহেদি লাগিয়ে দেন।
এ ব্যাপারে লক্ষ্মীপুর কারাগারের জেল সুপার মাহবুবুল আলম জানান, জেলা প্রশাসকের অনুমতি থাকায় বিকেলে বিপ্লবকে জেলগেটে হাজির করা হয়। পরে সেখানে তার পরিবারের লোকজন কাবিননামায় স্বাক্ষরকাজ সম্পন্ন করার পর পুনরায় তাকে কারাগারে অভ্যন্তরে নিয়ে যাওয়া হয়।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে লক্ষ্মীপুরের জেলা প্রশাসক একেএম টিপু সুলতানের মুঠোফোনে কয়েকবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
উল্লেখ্য, জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম হত্যা মামলায় বিপ্লবের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন আদালত। পরে ২০১২ সালে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান তার মৃত্যুদণ্ডের আদেশ ক্ষমা করেন। বর্তমানে তিনি শিবির নেতা মহসিন ও যুবদল নেতা ফিরোজ হত্যা মামলায় কারাভোগ করছেন।
এ ছাড়া বিএনপি নেতা কামাল হত্যা মামলা বর্তমানে জেলা ও দায়রা জর্জ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।
বির্তকিত এ তাহের পুত্রের বিরুদ্ধে কারাগারে বসে টেন্ডার নিয়ন্ত্রণসহ কারা আইন ভঙ্গ করে মোবাইল ফোন ব্যবহারসহ বিভিন্ন সুবিধা নেয়ারও অভিযোগ রয়েছে।
মন্তব্য চালু নেই