কামারুজ্জামানের পরিবারের কাছে সরকারের ক্ষমা চাওয়া উচিৎ : ডা. জাফরুল্লাহ
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের বিরোধিতা করি না। জামায়াত নেতা কামারুজ্জামানের মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পরও ফাঁসির দড়িতে ২০ মিনিট ঝুলিয়ে রেখে সরকার মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে। মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে সরকারের উচিৎ কামারুজ্জামানের পরিবারের কাছে ক্ষমা চাওয়া। আধুনিক যুগে একজন ফাঁসির আসামির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে সময় লাগে মাত্র দেড় মিনিট।
রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) আয়োজিত গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার পুনরুদ্ধার, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদসহ সব রাজবন্দীর মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও নি:শর্ত মুক্তি এবং সুষ্ঠু অবাধ ও গ্রহণযোগ্য সিটি করপোরেশন নির্বাচনের দাবীতে চিকিৎসক সমাবেশে তিনি একথা বলেন।
সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ও আদর্শ ঢাকা আন্দোলনের প্রধান ড. এমাজ উদ্দিন আহমেদ, বিএফইউজে সভাপতি শওকত মাহমুদ, বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক রুহুল আমীন গাজী, ঢাকা সিটি করপোরেশন দক্ষিণের মেয়র প্রার্থী মির্জা আব্বাসের স্ত্রী আফরোজা আব্বাস, ড্যাব মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রোভিসি অধ্যাপক আব্দুল মান্নান ড্যাবের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোস্তাক রহিম স্বপন, যুগ্ম-মহাসচিব ডা. এস এম রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. শামছুল আলম সেলিম, জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দলের মহাসচিব রফিকুল ইসলাম, মুক্তিযোদ্ধা ডাক্তার আব্দুল কুদ্দুস, ড্যাবের সহসভাপতি অধ্যাপক সিরাজ উদ্দিন, বিএসএমএমইউ ড্যাবের সভাপতি ডা. সাইফুল ইসলাম সেলিম প্রমুখ। সভাপতিত্ব করেন ড্যাব সভাপতি অধ্যাপক ডা. এ কে এম আজিজুল হক।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী আরো বলেন, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তির শেষ ইচ্ছা পুরণ করা হয় এটাই সভ্য সমাজের রীতি। ‘শুক্রবারে যেন ফাঁসি দেয়া হয়’ কামারুজ্জামানের এ শেষ ইচ্ছাটুকুও সরকার পুরণ হতে দেয়নি।
তিনি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচন প্রসঙ্গে বলেন, বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাসকে মাঠে নামতেই হবে। জনগণ তার দিকেই তাকিয়ে আছে। মামলাকে ভয় পেলে চলবে না। জনগণ এ সরকারের প্রতি বিতশ্রদ্ধ, এ সরকারকে জনগণ আর চায় না। তিনি বলেন, ২৮ এপ্রিল নির্বাচনে ব্যালটের মাধ্যমে সরকার ও প্রধান নির্বাচন কমিশনারের বিচার হবে।
অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দিন আহমেদ বলেন, ঢাকার দুটি ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে ২৮ এপ্রিল জিততে পারলে ফ্যাসিবাদী এ সরকারের পতনে অন্যকোনো যন্ত্র বা দানবের প্রয়োজন হবে না। মানবরাই দেশ থেকে এ ফ্যাসিবাদ তাড়াবে।
তিনি বলেন, ওই দিনের নির্বাচনে বিজয়ের মাধ্যমে সবার মাঝে জোশ আসবে। সে জোশে এমনিতেই ফ্যাসিবাদের পতন হবে। এ সরকারের জনপ্রিয়তায় ধ্বস নেমেছে। এরা জোর করে ক্ষমতায় টিকে আছে। ২৮ এপ্রিল সিটি নির্বাচনে জনগণ ২০ দলীয় জোটের যোগ্যপ্রার্থীকে ভোট দিয়ে আবারো সরকারকে দেখিয়ে দেবে জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে তারা।
মির্জা আব্বাসের স্ত্রী আফরোজা বলেন, আমাদের পক্ষে সংখ্যা গরিষ্ঠ জনগণের সমর্থন রয়েছে। কিন্তু সরকার আমাদের নির্বাচনী প্রচারণায় বাধা দিচ্ছে। পুলিশ আমাদের লোকজনদের পেছন থেকে উঠিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। আমাদের লোকজন ও ভোটারদের ভয়ভীতি দেখাতে চাচ্ছে। আমি সরকারের উদ্দেশ্যে স্পষ্ট করে বলতে চাই, ‘নির্যাতন করে আমাদের বিজয় ঠেকানো যাবেনা। কেন্দ্রে ভোটের পরিবেশ বজায় রাখার আহবান জানিয়েছেন তিনি।
শওকত মাহমুদ বলেন, সরকার দেশটাকে পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের মতো সিটি নির্বাচন করা হলে সেদিন থেকেই গণ আন্দোলনে এই সরকারের পতন হবে।
রুহুল আমীন গাজী বলেন, নেতাকর্মীদের গ্রেফতার ও নির্যাতন করে সরকার পার পাবে না। এ সরকারের পতন সময়ের ব্যাপার মাত্র। ২৮ এপ্রিল থেকে সরকারের পতন শুরু হবে।
ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, ভোট কারচুপি করে ক্ষমতায় এসে এ সরকার নির্বাচনকে ভয় পাচ্ছে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে সরকার পতন আন্দোলন ঠাণ্ডা করতে হঠাৎ সিটি করপোরেশন নির্বাচন ঘোষনা করেছে। ইনশা আল্লাহ ২০ দলীয় জোট প্রার্থীরা বিপুল ভোটে সিটি নির্বাচনে জয়লাভ করবে।
মন্তব্য চালু নেই