‘কাছে পৌঁছাতে’ আসছে ভারতের বাংলা রেডিও
বাংলাদেশের সঙ্গে ‘পারস্পরিক সম্পর্ক বাড়াতে’ এবার বেতার তরঙ্গ (এয়ারওয়েভ) ব্যবহারের ওপর জোর দিচ্ছে ভারত। বাংলাদেশের বিপুল জনগণের কাছে পৌঁছাতে ভারতের সরকারি বেতার বার্তা সংস্থা অল ইন্ডিয়া রেডিও (এআইআর) বাংলাতে এবার বিশেষ সম্প্রচার পরিষেবা চালু করতে যাচ্ছে। আগামী ২৮ জুন ‘আকাশবাণী মৈত্রী’ নামে ওই নতুন পরিষেবার আনুষ্ঠানিক সূচনা করবেন ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়।
গত বছর নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরের সময় বাংলাদেশের সঙ্গে স্থলসীমান্ত চুক্তির বাস্তবায়ন এবং বাংলাদেশ-ভুটান-ভারত-নেপালের মধ্যে মোটর ভেহিক্যাল অ্যাগ্রিমেন্ট (এমভিএ) সই হওয়ার পর ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের আশা ‘পূবে তাকাও’ নীতিকে সফল করতে এবার রেডিও যোগাযোগ বড় ভূমিকা নিতে পারে।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে অল ইন্ডিয়া রেডিও মারফত প্রথম বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে প্রচার করা হয়েছিল। ২০১০ সাল পর্যন্ত এই বেতার বার্তা চালু ছিল। এবার সেই জায়গাতেই ‘আকাশবাণী মৈত্রী’ নামে নতুন পরিষেবা চালু করা হবে।
জানা গেছে, নতুন এই পরিষেবা চালু হবে পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার চুচুড়া থেকে। সেখানে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ট্রান্সমিটার বসানোর কাজ চলছে। যার মাধ্যমে সারা বাংলাদেশে নানা অনুষ্ঠান সম্প্রচার করা হবে। যেখানে বাংলাদেশের শ্রোতাদের কাছে সাংস্কৃতিক ও শিক্ষামূলক সম্পর্কিত বিভিন্ন অনুষ্ঠান সম্প্রচার করা হবে।
এআইআরের মহাপরিচালক ফৈয়াজ শেহরিয়ার বলেন, ‘দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক বাড়ানোর ক্ষেত্রে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী যে ভিশন নিয়েছেন, নতুন এই উদ্যোগের ফলে সেই লক্ষ্যে পৌঁছানো যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।’
দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বৃদ্ধির ক্ষেত্রে রেডিওর ভূমিকার কথা উল্লেখ করে ফৈয়াজ শেহরিয়ার বলেন, ‘২০১৩ সালের একটি ঘটনায় ভারতের রাষ্ট্রপতি বলেছিলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের খবরাখবর শোনার জন্য তখন এআইআর এবং স্বাধীন বাংলাদেশ রেডিওই ছিল একমাত্র ভরসা। সে সময় যুদ্ধের সময়কালে এই বুলেটিনগুলোর ওপর আমাদের ভারতের মানুষ বেশি নজর রাখত। কারণ ভারতবাসীর সমস্ত হৃদয় ও মন বাংলাদেশবাসীর সঙ্গে ছিল। সে সময় অসংখ্য গৃহহীন মানুষ সীমান্ত পার হয়ে বাংলাদেশ থেকে ভারতের সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলোতে আশ্রয়ের খোঁজে আসতে শুরু করল। আর তাদের দুঃখে ভারতবাসীরাও ব্যথিত হয়েছিল।’
১৯৩০ সালে পথচলা শুরু এই অল ইন্ডিয়া রেডিওর। পরে ১৯৫৬ সাল থেকে আকাশবাণী নামে পরিচিত হতে থাকে সবার মধ্যে। বিশ্বের বৃহত্তম রেডিও নেটওয়ার্কের মধ্যে একটি হলো ভারতের এই সরকারি প্রতিষ্ঠানটি। ১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীন হওয়ার পর সারা দেশে এআইআর এর ছয়টি স্টেশন ছিল। যার মধ্যে অন্যতম ছিল কলকাতা। এবার সেই বেতার তরঙ্গকে কাজে লাগিয়ে দুই দেশ আরো কাছাকাছি আসতে চলছে।
মন্তব্য চালু নেই