‘কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ‘যারা ধর্মের নামে নাসিরনগরে তাণ্ডব চালিয়েছে তাদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। সকল অপরাধীকে খুঁজে বের করা হবে। দেশের উন্নতিকে বাঁধাগ্রস্ত করতেই এমন সাম্প্রদায়িক তাণ্ডব চালানো হয়েছে।’

মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৩টায় নাসিরনগরে জেলা পুলিশ আয়োজিত সর্বদলীয় সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘আমাদের সংবিধান স্পষ্ট করে বলেছে অন্যের বিশ্বাসের ওপর কোনোভাবেই আঘাত করা যাবে না। আগুন সন্ত্রাস, বিদেশি হত্যা, ধর্মগুরুদের হত্যা প্রচেষ্টার মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করার চক্রান্তে ব্যার্থ হয়ে একটি গোষ্ঠী নতুন করে সারা দেশে এসব ঘটনা ঘটাচ্ছে।’

আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘আমাদের এখানে সংখ্যালঘু নেই। যারা ইসলামের নামে মানুষ হত্যা করে তারা সংখ্যালঘু। তাদের পরাজয় হচ্ছে। মানবতার জয় হচ্ছে।’

এ সময় তিনি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী ছায়েদুল হককে সৎ ও দক্ষ হিসেবে অবহিত করে বলেন, তার (ছায়েদুল হক) সততার ইতিহাস দীর্ঘদিনের।

এর আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গৌর মন্দিরসহ সংখ্যালঘু ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি ঘর পরিদর্শন করেন।

দুপুর ১টায় আশুতুষ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সর্বদলীয় সুধী সমাবেশের শুরু হয়। অনুষ্ঠানের প্রথমেই পবিত্র কোরআন, গীতা, বাইবেল ও ত্রিপিটক থেকে পাঠ করা হয়।

সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী ছায়েদুল হক বলেন, ‘ঘটনার দিন পাশের জেলার মাধবপুর উপজেলা থেকে ১৪টি ট্রাকে করে হাফপ্যান্ট পরা লোকজন এসে হামলা করেছে। কারা এই ট্রাকের ভাড়া দিল, লোকজন আনল তাদের খুঁজের বের করুন।’

এ সময় তিনি বলেন, ‘মিডিয়া সব সময় চায় নেগেটিভ নিউজ। এ ঘটনায় তিলকে তাল করা হয়েছে।’

সমাবেশে বিশেষ অতিথি যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী ড. বীরেন শিকদার বলেন, ‘এখানে যারা তাণ্ডব চালিয়েছে তারা পশুর চেয়ে অধম। তাদের দেশ থেকে নির্মূল করতে হবে। তারা আমাদের হাজার বছরের অসাম্প্রদায়িক ঐতিহ্যের চেতনাতে আঘাত করেছে।’

সমাবেশে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) একেএম শহীদুল হক বলেন, ‘আমি নিজে এই মামলা পর্যবেক্ষণ করছি। যারা হামলা করেছে তারা কোনো ধর্মের লোক নয়। যারা ওইদিন সমাবেশ করেছে তাদেরও দায়িত্ব নিতে হবে। একটি গ্রুপ ফেসবুকে ধর্ম অবমাননার গুজব ছড়িয়ে পরিস্থিতি নষ্ট করার চেষ্টা করছে।’

র‌্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) বেনজির আহমেদ বলেন, ‘আসেন আমরা পেছনের মূল খেলোয়াড়দের ধরি। আমরা বলেছিলাম ইঞ্চি ইঞ্চি মাটি খুঁড়ে জঙ্গিদের বের করে আনব। আজ আমরা জঙ্গিদের ছিন্ন ভিন্ন করে দিয়েছি। এই ধরনের হামলা করতে আসলে কেউ যাতে ফিরে যেতে না পারে।’

সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি শফিকুল ইসলাম, জেলা প্রশাসক রেজওয়ানুর রহমান, পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান, রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী ধ্রুবেশান্দজী মহারাজ, পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি জয়ন্ত সেন দিপু, খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নির্মল রোজারিও, ইসকনের উপদেষ্টা কৃষ্ণ ক্রীর্তন ব্রক্ষচারী, হেফাজতে ইসলামির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাওলানা সাজেদুর রহমান প্রমুখ।



মন্তব্য চালু নেই