কলারোয়ায় শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলার ১২ বছর পর ৫০ জনের নামে চার্জশীট
সাতক্ষীরার কলারোয়ায় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও সাবেক বিরোধী দলীয় নেতা জননেত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে গুলি ও বোমা হামলা চালিয়ে হত্যা চেষ্টার অভিযোগে কেন্দ্রীয় বিএনপি’র সহ.শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক সাবেক এমপি হাবিবুল ইসলাম হাবিব, কলারোয়া পৌর মেয়র বিএনপি নেতা আকতারুল ইসলাম ও জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আ: সাত্তারসহ ৫০ জন নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশীট দাখিল করা হয়েছে।
দীর্ঘ ১৯৩ দিন তদন্ত শেষে কলারোয়া থানার ওসি (তদন্ত) শেখ সফিকুর রহমান বিজ্ঞ আদালতে এ মামলার চার্জশীট দাখিল করেন। চার্জশীটভুক্ত আসামিরা হলেন- ১. সাবেক এমপি মো: হাবিবুল ইসলাম হাবিব, ২. পাঁচপোতা গ্রামের মো: আশরাফ হোসেন, ৩. তুলসীডাঙ্গা গ্রামের মো: আব্দুল কাদের বাচ্চু, ৪. ঝিকরা গ্রামের মো: আরিফুর রহমান রঞ্জু, ৫. ধানঘোরা গ্রামের নজরুল ইসলাম, ৬. তুলসীডাঙ্গা গ্রামের রিপন, ৭. পুটুনি গ্রামের মো: আব্দুর রাজ্জাক, ৮. শ্রীপতিপুর গ্রামের শেখ তামিম আজাদ মেরিন ও ৯. মো: আব্দুর রকিব মোল্লা, ১০. গদখালি গ্রামের মো: আকতারুল ইসলাম ও ১১. মো: মফিজুল ইসলাম, ১২. তুলসীডাঙ্গা গ্রামের মো: আব্দুল মজিদ, ১৩. হাসপাতাল রোডের এড. মো: আব্দুস সামাদ, ১৪. হুলহুলিয়া গ্রামের মো: হাসান আলী, ১৫. তুলসীডাঙ্গা গ্রামের মো: ইয়ারব আলী, ১৬. রায়টা গ্রামের ময়না, ১৭. কয়লা গ্রামের মো: আব্দুস সাত্তার, ১৮. তুলসীডাঙ্গা গ্রামের খালেদ মঞ্জুর রোমেল, ১৯. বহুড়া গ্রামের তোফাজ্জেল হোসেন সেন্টু, ২০. শুভংকরকাটি গ্রামের মো: মাজাহারুল ইসলাম, ২১. কেঁড়াগাছি গ্রামের মো: আ: মালেক, ২২. রায়টা গ্রামের মো: আব্দুর রবগণের সহযোগি তদন্তে প্রাপ্ত আসামি ২৩. দরবাসা গ্রামের মো: জহুরুল ইসলাম, ২৪. যুগখালী ইউপি চেয়ারম্যান মো: রবিউল ইসলাম, ২৫. ঝিকরা গ্রামের মো: গোলাম রসুল, ২৬. সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এড. মো: আব্দুস সাত্তার, ২৭. ঝিকরা গ্রামের রিংকু, ২৮. পুটুনি গ্রামের মো: আ: সামাদ, ২৯. কিসমত ইলিশপুর গ্রামের মো: আলাউদ্দীন, ৩০. তুলসীডাঙ্গা গ্রামের মো: আলতাফ হোসেন, ৩১. ঝিকরা গ্রামের সঞ্জু, ৩২. তুলসীডাঙ্গা গ্রামের মো: নাজমুল হোসেন, ৩৩. সিংহলাল গ্রামের শাহাবুদ্দীন, ৩৪. কয়লা গ্রামের মো: সাহেব আলী, ৩৫. বৈদ্যপুর গ্রামের মো: সিরাজুল ইসলাম, ৩৬. তুলসীডাঙ্গা গ্রামের টাইগার খোকন, ৩৭. একই গ্রামের জাবিদ রায়হান লাকি, ৩৮. রকিব, ৩৯. ট্রলি সহিদুল, ৪০. কলারোয়া বাজারের কনক ও ৪১. শেখ কামরুল ইসলাম, ৪২. তুলসীডাঙ্গা গ্রামের মো: মনিরুল ইসলাম, ৪৩. কলারোয়ার মো: ইয়াছিন আলী ও ৪৪. শেলী, ৪৫. রামকৃষ্ণপুর গ্রামের মো: শাহিনুর রহমান, ৪৬. ক্ষেত্রপাড়া গ্রামের বিদার মোড়ল, ৪৭. গাজনা গ্রামের মো: সোহাগ হোসেন, ৪৮. ওফাপুর গ্রামের মো: মাহাফুজুর মোল্লা, ৪৯. ক্ষেত্রপাড়া গ্রামের মো: আব্দুল গফ্ফার গাজী এবং ৫০. ঝিকরা গ্রামের মো: মাহাফুজুর রহমান সাবু।
উল্লেখ্য, ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কলারোয়ার এক মুক্তিযোদ্ধার ধর্ষিতা স্ত্রীকে দেখে সাতক্ষীরা থেকে গাড়িবহর নিয়ে যশোর যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে বেলা ১১টা ৫০ মিনিটের দিকে গাড়ি বহরটি কলারোয়া বিএনপি অফিসের সামনে পৌছালে সেখানে রাস্তায় যাত্রীবাহী বাস আড় করে দিয়ে গতিরোধ করে। এ সময় হামলা চালিয়ে শেখ হাসিনাকে হত্যা চেষ্টাসহ সফরসঙ্গীদের ওপর হামলা চালানোর অভিযোগ করে মামলা করা হয়।
এ ঘটনায় মুক্তিযুদ্ধকালীন কমান্ডার মোসলেম উদ্দীন বাদী হয়ে ওই মামলা দায়ের করেন। সে সময় মামলাটির চুড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় থানা পুলিশ। চুড়ান্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন করেন বাদী। দীর্ঘ প্রায় ১২ বছর পর গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় ২০১৪ সালের ১৫ অক্টোবর বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশে মামলাটি পুনরায় কলারোয়া থানায় রেকর্ড করা হয়।
এ ব্যাপারে কলারোয়া থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ আবু সালেহ মাসুদ করিম সাংবাদিকদের জানান, দীর্ঘ ১৯৩ দিন তদন্ত পূর্বক দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার শেখ সফিকুর রহমান মামলাটির চার্জশীট দাখিল করেছেন। যাতে ৩০ জনকে স্বাক্ষী করা হয়েছে। সেই সাথে মামলার তদন্তকালে এজাহার নামীয় ৪ জন আসামি মৃত্যুবরণ এবং চার্জশীটভুক্ত অপর ৫ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করার কথা বলা হয়েছে।
মন্তব্য চালু নেই