‘কলম কিনতে গিয়ে মনে হচ্ছিল, যেন মরে যাচ্ছি’

কলম কিনতে গিয়ে গত শনিবার রাজধানীর লালবাগ কেল্লার মোড় এলাকায় কম্প্রেসার যন্ত্র বিস্ফোরণের ঘটনায় দগ্ধ হন ফারহানা আক্তার পান্না (২৫)। দুর্ঘটনার দিন থেকেই তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রয়েছেন।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে পান্না এনটিভি অনলাইনের কাছে ওই দিনের ঘটনার বর্ণনা দেন। তিনি বলেন, ‘দুপুরের খাওয়া শেষে বড় বোনের বাসায় যাওয়ার জন্য বের হয়েছিলাম, লালবাগে রিকশা থেকে নেমে একটি দোকানে কলম কেনার জন্য দাঁড়ালাম। তখন পাশের মিষ্টির দোকানে ফ্রিজের কম্প্রেসার যন্ত্রের বিস্ফোরণে মুহূর্তেই বিকট শব্দ। মনে হচ্ছিল যেন মারা যাচ্ছি। একটু স্থির হওয়ার পর বুঝতে পারলাম আমার সারা গায়ে প্রচণ্ড জালাপোড়া করছে। তখন বাবাকে শুধু ফোন করে বললাম, আমার এক্সিডেন্ট হয়েছে। এরপর আর কিছুই মনে নেই।’

ওই বিস্ফোরণের ঘটনায় আটজন দগ্ধ হন। তাঁদের মধ্যে দগ্ধ রিকশাচালক আবুল বাশার (৪০) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার মারা যান। দগ্ধ ফারহানা, সোনামুদ্দিন (৫০), হজরত আলী (৪০), মকবুল হোসেন (৩৫), সাব্বির (২০), মারুফ (২০) ও সবুজ (২০) এখনো ঢামেকের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

দগ্ধ ফারহানার বাবা আবদুর রউফ খোকা এনটিভি অনলাইনকে জানান, তাঁর দুই মেয়ের মধ্যে ফারহানা নিউ মডেল কলেজে বিবিএর চতুর্থ সেমিস্টারে পড়াশোনা করছেন।

ঘটনার দিনের বর্ণনা দিয়ে রউফ জানান, ওই দিন বিকেলে পুরান ঢাকার ইসলামবাগে আগুন লাগার খবর পেয়ে তিনি সেখানে যাচ্ছিলেন। কিন্তু মাঝ রাস্তায় পৌঁছার পর হঠাৎ তাঁর মেয়ে ফারহানা ফোন করে জানান, তিনি কেল্লার মোড়ে এক্সিডেন্ট করেছেন। এরপর দ্রুত সেখানে গিয়ে দেখেন, কয়েকজন তাঁকে উদ্ধার করে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় তুলে দিচ্ছে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য। তখন তিনিও মেয়ের সঙ্গে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান।

আবদুর রউফ জানান, ঘটনার পর থেকে ওই মিষ্টির দোকানের মালিক পক্ষের লোকজন সব সময় আহত ব্যক্তিদের নিয়মিত চিকিৎসার খোঁজখবর নিচ্ছেন। তাঁরা চিকিৎসার জন্য সব খরচও বহন করছেন।

এ বিষয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের চিকিৎসক পার্থ শংকর পাল জানান, ফারহানার শরীরের ২৪ শতাংশ পুড়ে গেছে। এখন তাঁর অবস্থা আগের চেয়ে ভালো।

এর আগে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি শনিবার বিকেল ৫টার দিকে লালবাগ কেল্লার মোড় এলাকায় কম্প্রেসার যন্ত্র বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় দগ্ধ হয় মিষ্টির দোকানের দুই কর্মচারী, দুজন রিকশাচালক, একজন ছাত্রী ও তিনজন পথচারী।



মন্তব্য চালু নেই