কর বকেয়া: ড. ইউনূসকে এনবিআরে তলব

প্রায় ১৩ কোটি টাকা আয়কর (ইনকাম ট্যাক্স) বকেয়া রাখার অভিযোগ উঠেছে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ও গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে। তিন করবর্ষের কর বকেয়া রাখার কারণে তাকে তলব করে চিঠি দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

চিঠিতে তাকে আগামী ২৯ মার্চ বেলা ১১টায় সংশ্লিষ্ট কর কমিশনারের সঙ্গে তাকে সাক্ষাৎ করার জন্য বলা হয়েছে। রোববার এনবিআরের কর অঞ্চল-৬ (ঢাকা)-এর ১১৪ নং সার্কেল থেকে তাকে তলব করা হয়। এরপর বিষয়টি আঞ্চলিক কার্যালয় থেকে এনবিআরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে বলে এনবিআর সূত্রে জানা যায়।

এনবিআর সূত্রে জানা যায়, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের (করদাতা শনাক্তকরণ নম্বর বা টিআইএন ১৭৯১০২৮৬৯৫) ২০১১-১২, ২০১২-১৩ ও ২০১৩-১৪ তিন করবর্ষের বকেয়া করের পরিমাণ ১৩ কোটি ৮৫ লাখ ২৫ হাজার ১২০ টাকা। এ বকেয়া পরিশোধের জন্য এনবিআরের পক্ষ থেকে কয়েক দফা তাগাদা দেয়া হয় তাকে। এর পরও বকেয়া কর পরিশোধ না করায় কর অঞ্চল-৬-এর ১১৪ নং সার্কেলের পক্ষ থেকে তলব করা হয়েছে তাকে। ২৯ মার্চ বেলা ১১টায় কর কমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার জন্য তাকে অনুরোধ করা হয়েছে।

ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে তলবের পাঠানো ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, কর অঞ্চল ৬-এর ১১৪ নং সার্কেলে ৫০ লাখ টাকার ঊর্ধ্বে বকেয়া কর পাওনা রয়েছে, এমন করদাতা ও তার প্রতিনিধিদের সরাসরি সাক্ষাতের দিন ও সময় ধার্য করা হয়েছে। করদাতাদের এ ব্যাপারে অবহিত করার জন্য সার্কেল কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে। বকেয়া কর দ্রুত আদায়ের বিষয়ে সব ধরনের পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে।

এনবিআরের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, করদাতাদের কাছে আয়কর, ভ্যাট ও শুল্ক বিভাগের বকেয়া প্রায় ২৭ হাজার কোটি টাকা। সাধারণ করদাতারা যখন প্রতি বছর নিয়মিত কর পরিশোধ করছেন, তখন একটি বিশেষ শ্রেণী কর বকেয়া রাখছেন বছরের পর বছর। বিশেষ করে উচ্চ আদালতে মামলা করে বকেয়া রাখছেন তারা। এ অবস্থায় পুরনো পাওনা আদায়ে নতুন করে তৎপর হয়েছে এনবিআর। এর অংশ হিসেবে বকেয়া করের বিষয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে এনবিআরের মাঠ পর্যায়ের কার্যালয়ে ডাকা হয়েছে।

এর আগে ২০১২ সালের সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতিষ্ঠা করা গ্রামীণ ব্যাংক ও তার ৫৪ সহযোগী প্রতিষ্ঠানের আয়করের নথি তলব করে এনবিআর। কর বিভাগ থেকে সংশ্লিষ্ট কর অঞ্চলগুলোকে চিঠি দিয়ে হালনাগাদ তথ্য দিতে বলা হয়। সেখানে গ্রামীণ ব্যাংক ও সহযোগী প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠার পর থেকে যাবতীয় করসংক্রান্ত তথ্য দিতে চাওয়া হয়।

এ প্রসঙ্গে কর অঞ্চল-৬-এর কর কমিশনার মো. মেফতাহ উদ্দিন খান সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ৫০ লাখ টাকার ওপরে যাদের বকেয়া আছে, তাদের ডাকা হচ্ছে। প্রতিদিনই বড় বকেয়া আছে, এমন করদাতাদের ডাকছি। বকেয়া আদায়ে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে। রাষ্ট্রীয় পাওনা আদায়ে আইনগতভাবে যা যা করার, সবকিছু করা হবে। এরই অংশ হিসেবে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকেও ডাকা হয়েছে। আশা করছি, তার কাছে থাকা বকেয়া আদায় করা সম্ভব হবে।



মন্তব্য চালু নেই