কঠিন একটা দিন গেল বাংলাদেশের

দুর্ভাগ্যের শুরু দিনের শুরুতেই। মাত্র দুই বল মাঠে গড়ানোর পরই।
ডান হাঁটুতে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়লেন পেসার শাহাদত হোসেন। দুর্ভাগ্যের ব্যাপ্তি এতটাই বেশি, মধ্যাহ্ন ভোজের বিরতিতে, বোলিং কোচ হিথ স্ট্রিকের সঙ্গে প্র্যাকটিস উইকেটে বোলিং অনুশীলন করতে গিয়ে আবার চোট পেলেন শাহাদাত। সর্বশেষ যে খবর, তাতে শাহাদাতের এই ম্যাচ খেলার সুযোগ খুব একটা নেই।
অথচ বাংলাদেশ দল পলে পলে আজ অনুভব করল পেসারদের কার্যকারিতা। উইকেটে ঘাসে দেখেই কিনা অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম গরমের চোখ রাঙানি উপেক্ষা করে টসে জিতে ফিল্ডিং নিলেন। অধিনায়ক ভেবেছিলেন, পেসারদের জন্য কিছু পাওয়া যাবে। কেবল বাংলাদেশ অধিনায়ক নয়, পাকিস্তান অধিনায়ক মিসবাহ-উল-হকও বললেন, টসে জিতলে তিনিও বোলিংই নিতেন।
প্রশ্নটা এখানেই। মুশফিক যখন পেসারদের দিকে তাকিয়ে প্রথম বোলিং করতে চাইলেন, তবে দুই পেসার কেন? চিন্তার ভাঁজ আরও বাড়াল শাহাদাতের চোট। অথচ উইকেট আজ কতটা পেসবান্ধব ছিল, তা বোঝালেন মোহাম্মদ শহীদ। দ্বিতীয় টেস্ট খেলা এ ডানহাতি পেসারের জন্য সকালে সাজানো হলো চার স্লিপ ও এক গালি। আক্রমণাত্মক ফিল্ডিং আর উইকেটের সহায়তা নিয়ে শহীদ বেশ খানিকক্ষণ ভীতি ছড়ালেন পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানদের মধ্যে। সকালের সেশনে ১০ ওভার বল করে ২ মেডেনে আগের টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরিয়ান মোহাম্মদ হাফিজকে ফিরিয়ে দিলেন। পেতে পারতেন আজহার আলীর উইকেটটিও। দুর্ভাগ্য তাঁর নো বলের ফাঁড়ায় পড়ে তা পাওয়া হয়নি। তাঁর বলে স্লিপে দাঁড়িয়ে সৌম্য সরকার যখন ক্যাচটি নিয়েছিলেন, তখন আজহারের ব্যক্তিগত খাতায় লেখা মাত্র ১৮। টেলিভিশন রিপ্লের মাধ্যমে আউটের হাত থেকে বেঁচে গিয়ে সেই আজহারই দিন শেষে অপরাজিত ১২৭ রানে।
নো বলের ভূত বাঁচিয়েছে ইউনিস খানকেও। সেঞ্চুরি থেকে কিছু দূরে থাকতে সৌম্য সরকারের বলে সাকিবের ক্যাচ হয়েছিলেন ইউনিস। কিন্তু ঠিক একইভাবে টেলিভিশন রিপ্লেতে ধরা পড়ল সৌম্যর ওভার স্টেপিংয়ের অপরাধ। শেষ পর্যন্ত ইউনিস আউট হয়েছেন ১৪৮ রানে। তাঁকে ফিরিয়েছেন দিনের সেরা বোলার ওই শহীদই। শুভাগত হাতে ক্যাচ দিয়ে ইউনিস যখন ফিরছেন তখন সমাপ্তি ঘটে তৃতীয় উইকেটে ২৫০ রানের দুর্দান্ত জুটির। ইউনিসের বিদায়ের পর উইকেটে আসা মিসবাহ আজহারের সঙ্গে দিনটা শেষ করে এসেছেন ব্যক্তিগত ৯ রানে। স্কোরবোর্ডও যথেষ্ট তৃপ্তিরই মনে হচ্ছে পাকিস্তানিদের কাছে গোটা দিনে ব্যাট করে সেখানে লেখা হয়েছে ৩২৩ রান। বড় সংগ্রহের ভিতটা কিন্তু তৈরি হয়ে গেছে প্রথম দিন শেষেই।
আজ নয়জন বোলার ব্যবহার করেছেন মুশফিকুর রহিম। বল করেননি কেবল মুশফিকুর রহিম ও তামিম ইকবাল। ইমরুল কায়েসও বল হাতে তুলে নিয়েছিলেন একটি ওভার। সাকিব আল হাসানের গেল আরও একটি বাজে দিন। দেশের সেরা তারকার বল হাতে এমন নিষ্প্রভ উপস্থিতি উদ্বেগ ছড়িয়ে যাচ্ছে সর্বত্রই।
সকালে দিনটা শুরু হয়েছিল দারুণ সম্ভাবনা জাগিয়েই। শহীদের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন খুলনা টেস্টের ডাবল সেঞ্চুরিয়ান মোহাম্মদ হাফিজ। তাইজুল নেন সামি আসলামের উইকেট। প্রথমবার আহত হওয়ার পর মাঠে ফিরে শাহাদাত নেন সামির দুর্দান্ত ক্যাচটি। এই দুই উইকেটেই প্রথম সেশনে পাকিস্তানকে যথেষ্ট চাপে ফেলা গিয়েছিল। কিন্তু আজহার-ইউনিস জুটি সেই চাপ নিজেদের ব্যাটিং শৈলী দিয়েই পরের দুই সেশনে পুরোপুরি ঠেলে দেন বাংলাদেশের দিকেই।

































মন্তব্য চালু নেই