পশ্চিমা কূটনৈতিক তৎপরতা

এ মাসেই ইংল্যান্ড সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর এতদিন পূর্বমূখী কূটনৈতিক তৎপরতায় ব্যস্ত ছিল সরকার। জাপান ও চীন সফরের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই ইঙ্গিত দিলেও চলতি মাসেই পশ্চিমমূখী হচ্ছে বর্তমান সরকারের কূটনৈতিক তৎপরতা।

লন্ডন সফরের মাধ্যমে পশ্চিমাদের সঙ্গে শীতলতা নিরসনের উদ্যোগ নেয়া হবে বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র নিশ্চিত করেছে, আগামী ২২ জুলাই বৃটিশ সরকারের উদ্যোগে অনুষ্ঠেয় গার্ল সামিট-২০১৪তে অংশ নিতে লন্ডনে যাচ্ছেন শেখ হাসিনা।

এদিকে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা সফর প্রস্তুতির বিষয়টি স্বীকার করলেও সফরের সময়ক্ষণ ও কর্মসূচি এখনও চূড়ান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন। সামিটে অংশ নিতে প্রধানমন্ত্রীকে আয়োজক রাষ্ট্রের তরফে আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তিনি তা গ্রহণ করেছেন এবং আন্তর্জাতিক ওই আয়োজনে অংশ নেয়ার আগ্রহ ব্যক্ত করেছেন। তবে সরকারের নীতি-নির্ধারকরা চাইছেন- কেবল বহুপক্ষীয় ওই ফোরামে প্রধানমন্ত্রীর অংশ গ্রহণই নয়, পাশাপাশি সফরটিকে দ্বিপক্ষীয় রূপ দিতে।

পররাষ্ট্র দপ্তর ও লন্ডন হাই কমিশনের মাধ্যমে সরকারের নীতি-নির্ধারকদের এমন ইচ্ছার বিষয়টি বৃটিশ সরকারকে জানানো হয়েছে। পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক সরকারি সফরে বর্তমানে ওয়াশিংটন রয়েছেন। গত সপ্তাহে ঢাকা ছাড়ার আগে ছুটির দিনে তিনি জরুরি বৈঠক করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত বৃটিশ হাই কমিশনার রবার্ট গিবসনের সঙ্গে। সচিবের দপ্তরে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন সফর-ই মুখ্য আলোচ্য বিষয় ছিল বলে জানা গেছে।

বৈঠক সূত্র জানিয়েছে, সরকারের তরফে লন্ডন সফরটিকে দ্বিপক্ষীয় রূপ দেয়ার প্রচেষ্টা চলছে। নীতি-নির্ধারকরা মনে করেন, এটি হলে ৫ জানুয়ারির নির্বাচনকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত ২৮টি রাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দুনিয়ার সঙ্গে সরকারের সম্পর্কের যে ‘শীতলতা’ তা কিছুটা হলেও কাটানোর পথে সহায়ক হবে। নির্বাচন নিয়ে ইইউ জোট ও যুক্তরাজ্য সরকারের রিজারভেশন থাকলেও সরকার গঠনের পর ঢাকাস্থ বৃটিশ দূত বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণসহ বেশ কিছু কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে সরকারের সঙ্গে সুসম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা করেন। তিনি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেও দেখা করেন। সফরটিকে দ্বিপক্ষীয় রূপ দিতে এবং এটি সফল করতে হাই কমিশনারের ইতিবাচক ওই মনোভাবকেও কাজে লাগানোর চেষ্টা করছে সরকার।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ইউরোপীয় বিভাগের মহাসচিব আসাদ আলম বলেন, ‘ভিভিআইপি সফরে শেষ মুহূর্তেও অনেক পরিবর্তন-পরিবর্ধন সংযোজন-বিয়োজন হয়ে থাকে। প্রস্তাবনা মতে সব এগিয়ে গেলে ২০ জুলাই প্রধানমন্ত্রী বৃটেনের পথে রওনা হতে পারেন। যাওয়া আসা মিলে ৪-৫ দিনের সফর হতে পারে। সে হিসাবে তিনি ২৫ জুলাই ঢাকায় ফিরবেন।’

তৃতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর এটি হবে শেখ হাসিনার তৃতীয় বিদেশ সফর। গত মে মাসের চতুর্থ সপ্তাহে টোকিও সফরের মধ্য দিয়ে তিনি তার বিদেশ মিশন শুরু করেন। এক সপ্তাহের ব্যবধানে খুনমিং হয়ে পেইচিং সফর (দ্বিপক্ষীয়) করেন। প্রতিবেশী ভারতের নতুন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির শপথ অনুষ্ঠানেও তার আমন্ত্রণ ছিল। কিন্তু জাপান সফরটি পূর্ব নির্ধারিত হওয়ায় তিনি দিল্লি না গিয়ে টোকিও সফরে যান।



মন্তব্য চালু নেই