সালতামামি ২০১৪ :
এ বছর বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ১৩৬
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে ২০১৪ সালের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে ১৩৬টি। এর মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যক বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে পুলিশের হাতে।
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্য মতে, এ বছর র্যাবের হাতে ৩২টি, পুলিশের হাতে সর্বোচ্চ সংখ্যক ৮১টি, র্যাব-পুলিশের যৌথ অভিযানে ৪টি, যৌথবাহিনীর হাতে ৭টি, কোস্ট গার্ডের হাতে ৩ টি, বিজিবি ও সেনাবাহিনীর হাতে ১টি করে বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।
সংগঠনটির জরিপ অনুযায়ী
ক্রসফায়ার (গ্রেপ্তার ছাড়া): র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার ছাড়াই ক্রসফায়ারের ঘটনা ঘটেছে ২৯টি, পুলিশের হাতে ৩০টি, র্যাব ও পুলিশের যৌথ অভিযানে ১টি, ডিবির হাতে ৪টি, বিজিবির হাতে ২টি যৌথবাহিনীর হাতে ১টি এবং কোস্ট গার্ডের হাতে ৩টি। সবমিলে এবছর গ্রেপ্তার ছাড়াই ক্রসফায়ারে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে ৭০টি।
ক্রসফায়ার (হেফাজতে): গ্রেপ্তারের পর আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে থাকা অবস্থায় বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ঘটনা র্যাবের হাতে ঘটেছে ২টি, পুলিশের হাতে ৩৬টি, ডিবির হাতে ২টি, বিজিবির হাতে ২টি এবং যৌথবাহিনীর হাতে ৬টি। সবমিলে এ বছর গ্রেপ্তার অবস্থায় প্রাণ হারিয়েছেন ৪৮ জন।
শারীরিক নির্যাতন (আটক ছাড়া): কোনো প্রকার আটক ছাড়াই র্যাবের হাতে শারীরিক নির্যাতনে মৃত্যুর ঘটনা না ঘটলেও পুলিশ ও বিজিবির হাতে ১টি করে ঘটনা ঘটেছে।
শারীরিক নির্যাতন (হেফাজতে থাকা অবস্থায়): আটকের পর র্যাবের হাতে শারীরিক নির্যাতনে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে ১টি, পুলিশের হাতে ৯টি এবং সেনাবাহিনীর হাতে ১টি। সব মিলে এবছর ১১ জন এমন ঘটনার শিকার হয়েছেন।
সরাসরি গুলি: এ বছর পুলিশের সরাসরি গুলিতে নিহত হয়েছে ৪ জন। এছাড়া অন্য কোন বাহিনীর হাতে এ ধরণের হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেনি।
মৃত্যুর কারণ জানা যায়নি: এমন ঘটনা এ বছর অন্য কোনো বাহিনীর হাতে না ঘটলেও পুলিশের হাতে ঘটেছে একটি।
ফলাফল
র্যাবের হাতে ৩২, পুলিশের হাতে ৮১, র্যাব-পুলিশ যৌথবাহিনীর হাতে ১ জন, ডিবির হাতে ৬ জন, বিজিবি এবং র্যাবের যৌথ অভিযানে ৪ জন, যৌথবাহিনীর হাতে ৭ জন, কোস্ট গার্ডের হাতে ৩ জন, বিজিবির হাতে ১ জন, সেনাবাহিনীর হাতে ১ জন। সব মিলে এ বছর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে প্রাণ হারিয়েছেন ১৩৬ জন।
সূত্র: আইন ও সালিশ কেন্দ্র (জানুয়ারি-অক্টোবর)।
এদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে এমন বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড প্রসঙ্গে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের ব্যুরো মহাসচিব ড. শাজাহান খান বাংলামেইলকে বলেন, ‘আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে এ ধরনের বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড কখনোই কারো কাম্য নয়। এ ধরনের হত্যাকাণ্ড মানুষকে তার আত্মপক্ষ সমর্থণের সুযোগ থেকে বঞ্চিত করে। অতীতে চরমপন্থী নিমূর্লের সময় এ ধরণের হত্যাকাণ্ডকে অনেকেই সমর্থন করলেও বর্তমান সময়ের বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড কেউই সমর্থন করে না।’
তিনি আরো বলেন, ‘আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে এমন ক্ষমতা থাকার কারণেই মূলত এ ধরণের হত্যাকাণ্ড বেশি ঘটছে। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে, এ ধরণের হত্যাকাণ্ডের পেছনে আর্থিক লেনদেনের হচ্ছে। আর এসব কারণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি জনমনে চরম এক ভীতির সঞ্চার হচ্ছে।’
মন্তব্য চালু নেই