এসিডিটির সমস্যা সমাধানে প্রয়োজন লাইফস্টাইলে পরিবর্তন

আমরা যে খাবার খাই তা পরিপাকের জন্য এসিড প্রয়োজন। কিন্তু সমস্যাটা হয় তখনই যখন এসিডের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। ঘন ঘন অ্যান্টাসিড গ্রহণের ফলেও বিভিন্ন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা যেতে পারে। লাইফ স্টাইলের পরিবর্তনের মাধ্যমেই যদি এসিডিটি ও এসিড রিফ্লাক্সের সমস্যার সমাধান করা যায় তাহলে কেমন হয়? চলুন তাহলে জেনে নিই জীবনধারার কী কী পরিবর্তনের মাধ্যমে এসিডিটির সমস্যা সমাধান করা যায়।

১। দুটি খাবারের মধ্যবর্তী সময় যেন ৩-৪ ঘন্টার বেশি না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখুন। খাবার হজম হতে গড়ে ৩-৪ ঘন্টা সময় লাগে। এর পরেই পাকস্থলীতে স্বয়ংক্রিয় ভাবে এসিড উৎপন্ন হওয়া শুরু করে। তখন যদি পাকস্থলীতে খাদ্য না থাকে তাহলে উৎপন্ন এসিড পাকস্থলীর মিউকাস আবরণের উপর কাজ করা শুরু করে বলে এসিড রিফ্লাক্স হয়।

২। প্রতিদিন একই সময়ে খাবার খান। মস্তিষ্ক, পাকস্থলী, পেশী ও কোষের মেমোরিতে থাকে খাবার গ্রহণের সময়টি। না হলে শরীর এসিড উৎপাদন শুরু করে দেয়। তাই আপনার সকালের নাশতা, দুপুরের খাবার, স্ন্যাক্স ও রাতের খাবার প্রতিদিন একই সময়ে খাওয়ার চেষ্টা করুন।

৩। খুব ভালো করে চিবিয়ে খাবার খান এবং আস্তে আস্তে খান তাহলে হজমে সুবিধা হবে। আপনি যদি খাবার ভালো করে চিবিয়ে না খান এবং খুব দ্রুত খান তাহলে খাদ্যের বড় টুকরো পাকস্থলীতে যাবে। এই বড় খাদ্যকণা হজমের জন্য পাকস্থলী বেশি এসিড উৎপন্ন করবে। এছাড়াও অতিরিক্ত এসিড খাদ্য থেকে পুষ্টি উপাদান গ্রহণেও বাধা দেবে।

৪। কি ধরণের খাবার খাচ্ছেন সেদিকে খেয়াল করুন। যখন আপনি শস্য, বাদাম, শাকসবজি, ফলমূল, বীজ, ডাল ইত্যাদি খাবারগুলো খান তখন পাকস্থলী এদেরকে ভাঙ্গার জন্য সঠিক মাত্রার এসিড নিঃসৃত করে। জাঙ্ক ফুড বা অতিরিক্ত লবণ বা চিনি সমৃদ্ধ খাবার খেলে এদের হজমের জন্য পাকস্থলীতে অতিরিক্ত এসিড উৎপন্ন হয়। এর ফলেই এসিডিটির সমস্যা তৈরি হয়।

৫। অ্যালকালাইন বা ক্ষারীয় খাবার বেশি করে খান। কারণ এগুলো অতিরিক্ত এসিডের ক্ষতি থেকে রক্ষা করে। লেবু পানি পান করুন, গাজর ও শশা খান। এছাড়াও প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন। পানি এসিডের ভারসাম্য রক্ষা করতে সাহায্য করবে।

৬। আপনি যদি কোন ঔষধ বা অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণ করে থাকেন তাহলে প্রোবায়োটিক ও ভিটামিন বি কমপ্লেক্স গ্রহণ করুন। কারণ কিছু ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ফলেও হতে পারে এসিডিটির সমস্যা। আর অ্যান্টিবায়োটিক খারাপ ব্যাকটেরিয়ার সাথে সাথে ভালো ব্যাকটেরিয়া এবং ভিটামিন ধ্বংস করে ফেলতে পারে। এর ফলেও অতিরিক্ত এসিড উৎপন্ন হতে পারে।

৭। রাতের খাবার ঘুমাতে যাওয়ার ২-৩ ঘন্টা আগেই সেরে ফেলুন। খাওয়ার সাথে সাথেই শুয়ে পড়বেন না। এর ফলেও এসিড রিফ্লাক্স হতে পারে। এর পরিবর্তে খাওয়ার পরে কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করুন অথবা বজ্রাসনে বসে থাকুন কিছুক্ষণ। এর ফলে হজমে সাহায্য হবে এবং এসিডের মাত্রাও নিয়ন্ত্রণে থাকবে।



মন্তব্য চালু নেই