পদত্যাগপত্র গৃহীত : চাকরি হারালেন এসপি বাবুল
অবশেষে চাকরি হারালেন এসপি বাবুল আক্তার। তার করা “পদত্যাগপত্র” গ্রহণ করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয় বাবুল আক্তারের ‘আবেদনের প্রেক্ষিতে’ তার পদত্যাগপত্র গৃহীত হয়েছে।
মঙ্গলবার বিকালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোজাম্মেল হক খান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
প্রসঙ্গত, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বরাবরে গত ২৪ জুন চাকরি থেকে অব্যাহতি চেয়ে এবং ৯ আগস্ট তা প্রত্যাহারে দুটি পৃথক আবেদন করেন এসপি বাবুল।
অব্যাহতি প্রত্যাহারের আবেদনে তিনি দাবি করেন, ‘পরিস্থিতির শিকার হয়ে অনিচ্ছাকৃতভাবে বাধ্য হয়ে আমি অব্যাহতিপত্র স্বাক্ষর করেছি। এটি আমি স্বেচ্ছায় দাখিল করিনি।’
এছাড়া বাবুল আক্তার ৪ আগস্ট পুলিশ সদর দফতরের ডিআইজি (প্রশাসন) বরাবরে কাজে যোগদান করতে আরেকটি পত্র দেন। বাবুল আক্তারের এসব পত্রকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট হয় এক ধরনের জটিলতা। কারণ এ ব্যাপারে তাৎক্ষণিকভাবে সরকার অথবা বাবুল আক্তারের পক্ষ থেকে কেউ কোনো মন্তব্য করেননি।
গত ১৪ আগস্ট স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল আলোচিত এ পুলিশ কর্মকর্তার পদত্যাগ প্রসঙ্গে প্রথম মুখ খোলেন। তখন তিনি বলেন, ‘বাবুল আক্তার পদত্যাগপত্র দিয়েছেন, যা বিবেচনায় রয়েছে।’ এর পরপরই গত শুক্রবার পদত্যাগ, পদত্যাগপত্র প্রত্যাহার ও চাকরিতে যোগ দেয়া সংক্রান্ত আবেদনের বিষয়টি বাবুল আক্তারের পরিবারের পক্ষ থেকে মিডিয়াকে জানানো হয়।
প্রসঙ্গত, ৫ জুন সকালে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় চট্টগ্রামের জিইসি এলাকায় দুর্বৃত্তদের গুলি ও ছুরিকাঘাতে খুন হন এসপি বাবুলের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু। ঘটনার সময় বাবুল আক্তার নতুন কর্মস্থলে (পুলিশ সদর দফতর) যোগ দিতে ঢাকায় অবস্থান করছিলেন। স্ত্রী হত্যার খবর পেয়ে তিনি চট্টগ্রাম ছুটে যান। এ ঘটনায় দেশজুড়ে শুরু হয় তোলপাড়।
হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বাবুল আক্তার অজ্ঞাত পরিচয় তিন ব্যক্তিকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় পুলিশ ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে কয়েকজন ওই ঘটনায় নিজেদের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। তাদের জবানবন্দিতে মিতু হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা হিসেবে নাম এসেছে কামরুল সিকদার ওরফে মুছার। আর এ মুছা ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তারের বিশ্বস্ত সোর্স।
মিতু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে মুছার জড়িয়ে পড়ায় এবং বেশকিছু তথ্য মেলায় বাবুল আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদের সিদ্ধান্ত নেয় পুলিশ। এ প্রেক্ষিতে ২৪ জুন রাতে এসপি বাবুলকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাড়ি থেকে তুলে নেয়ার পর শুরু হয় নানা গুঞ্জন।
জিজ্ঞাসাবাদের নামে প্রায় ১৫ ঘণ্টা তাকে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়। পরে তাকে বাসায় পৌঁছে দেয়া হলেও দীর্ঘদিন চাকরিতে যোগদান না করে এক প্রকার স্বেচ্ছাবন্দি জীবনযাপন করতে থাকেন তিনি। আর এতেই জনমনে নানা সন্দেহের ডালপালা মেলতে থাকে।
মন্তব্য চালু নেই