এসপির স্ত্রী হত্যায় ‘বিদেশি’ জড়িত
চট্টগ্রামে প্রকাশ্য দিবালোকে পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যায় ‘বিদেশি’ জড়িত থাকার কথা জানিয়েছেন কাউন্টার টেরোরিজম (সিটি) ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম।
তিনি বলেছেন, ‘বিদেশি মদদপুষ্ট হয়েই তাকে হত্যা করা হয়েছে।’ বৃহস্পতিবার (৯ জুন) ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘বাবুল আক্তারের স্ত্রী দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের শিকার। তবে এ ঘটনায় যে-ই জড়িত থাকুক না কেন, তাকে খুঁজে বের করা হবে।’
গত রোববার (৫ জুন) সকালে জিইসি মোড়ে প্রকাশ্যে ছুরিকাঘাত ও গুলি করে পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারের স্ত্রী মিতুকে খুন করে দুর্বৃত্তরা।
এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে গতকাল বুধবার (৮ জুন) হাটহাজারী থেকে সাবেক শিবির ক্যাডার আবু নছর গুন্নুকে (৪০) গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
সাবেক এই শিবির ক্যাডার দীর্ঘদিন মধ্যপ্রাচ্যে থাকলেও ৫ বছর আগে তিনি দেশে ফেরেন। ফিরেই হাটহাজারী উপজেলার ফতেয়াবাদের একটি মাজারে খাদেম হিসেবে যোগ দেন তিনি। মিতু হত্যায় আবু নছরের সম্পৃক্ততা আছে বলে নিশ্চিত করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তার আবু নছর হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নিয়েছিল কি না তা নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) দেবদাস ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’ তবে হত্যায় তার যে সম্পৃক্ততা আছে, এ ব্যাপারে নিশ্চিত তিনি।
একইদিন মিতু হত্যায় জড়িত থাকতে পারে সন্দেহে চট্টগ্রাম নগরী থেকে কালো রঙের একটি মাইক্রোবাস চালকসহ আটক করে পুলিশ।
রোববার সকালে মিতু হত্যাকাণ্ডের পর মোটর সাইকেলে করে তিনজন পালিয়ে যাওয়ার পরপরই একটি কালো রঙের মাইক্রোবাস ও আর নিজাম রোডের সড়ক অতিক্রম করে গোলপাহাড় মোড়ের দিকে চলে যেতে দেখা যায় পুলিশের সংগ্রহে থাকা ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরার ফুটেজে।
পুলিশের ধারণা, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যুক্তদের ‘ব্যাক-আপ’ হিসেবে মাইক্রোবাসটি ব্যবহার করা হয়ে থাকতে পারে। এ ছাড়া ঘটনার পর বিভিন্ন সময়ে পুলিশ কর্মকর্তারাও মাইক্রোবাসের সম্পৃক্ততার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখার কথা জানিয়েছিলেন।
ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, দুর্বৃত্তরা যখন মিতুকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করছিল, তখন জিইসি মোড়ের দিকে কিছুটা অদূরে দাঁড়িয়ে ছিল একটি কালো মাইক্রোবাস।
মিতুর মৃত্যু নিশ্চিত করে ঘাতকরা মোটরসাইকেলযোগে পালিয়ে যাওয়ার ১০ সেকেন্ডের মাথায় ঘটনাস্থলে আসে মাইক্রোবাসটি। পাঁচ সেকেন্ডের মতো ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে আস্তে আস্তে চলা শুরু করে মাইক্রোবাসটি।
পরে গোলপাহাড় মোড়ের দিকে চলে যায় ওই মাইক্রোবাস। কালো কাচের এ মাইক্রোর চালকের আসনের পাশের জানালাটা খোলা ছিল। অন্যসব জানালা বন্ধ ছিল।
এর আগে রোববার রাতে নগরীর পাঁচলাইশ থানার বাদুড়তলা বড় গ্যারেজ এলাকা থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় একটি মোটরসাইকেল উদ্ধারের কথা জানিয়ে সেটি হত্যাকাণ্ডে ব্যবহার করা বলে দাবি করে পুলিশ।
মন্তব্য চালু নেই