এশিয়ায় আফ্রিকার ফুটবলাররা ‘বিক্রি হচ্ছে’

আফ্রিকার অপ্রাপ্তবয়স্ক ফুটবলারদের অবৈধভাবে বিক্রি করা হচ্ছে এশিয়ায়। এশিয়ায় আনার পর এসব ফুটবলারকে জোর করে দীর্ঘমেয়াদী চুক্তি করানো হয়। কিন্তু অর্থকড়ি দেওয়া হয় না।

সোমবার বিবিসি জানিয়েছে, তাদের এক অনুসন্ধানে এই তথ্য বেরিয়ে এসেছে।

আফ্রিকার তরুণ ফুটবলারদের ১৪ বছরের কাছাকাছি বয়সে এশিয়ার কয়েকটি দেশে আনা হয়। ক্লাবের সঙ্গে চুক্তিও হয়। কিন্তু তাদের টাকা পয়সা যেমন দেওয়া হয় না, তেমনি তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে অন্য ক্লাবের কাছে তাদের বিক্রি করে দেওয়া হয়।

দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশ লাওসে চ্যামপাসাক ইউনাইটেড নামের একটি ক্লাব পশ্চিম আফ্রিকা থেকে ২৩ জন অপ্রাপ্তবয়স্ক ফুটবলার এনেছে। বিবিসির অনুসন্ধানে জানা গেছে, এই ক্লাবের কোনো নিবন্ধন নেই। ফলে নিজ দেশে সংখ্যালঘু এসব তরুণ ফুটবলারকে যেমন ইচ্ছা তেমনভাবে ব্যবহার করে ক্লাবাটি।

ফিফার আচরণবিধি অনুযায়ী, ১৮ বছরের নিচে কোনো ফুটবলারকে বিদেশি ক্লাব বা একাডেমিতে চুক্তিবদ্ধ করা নিষেধ। কিন্তু লাওসে তা হচ্ছে।

এদিকে চ্যামপাসাক ইউনাইটেড ক্লাবটি দাবি করেছে, তারা ফুটবলার আনার বিষয়ে কোনো অসততার আশ্রয় নেয়নি।

ফিফার মুখপাত্র জানিয়েছেন, বিষয়টি তারা অবহিত হওয়ার পর সংখ্যালঘু ফুটলবারদের নিরাপত্তা দিতে ফিফার কয়েকটি সদস্যসংস্থার কাছে তথ্য চেয়ে পাঠিয়েছে।

লাওসের সবচেয়ে বড় ফুটবল লিগে খেলে থাকে চ্যামপাসাক। ফিফার ধারণা, অপ্রাপ্তবয়স্ক ফুটবলারদের ভবিষ্যতে বিক্রি করে মোটা অঙ্কের মুনাফা হাতিয়ে নিতে চায় চ্যামপাসাক।

এ বছরে লাওসের লিগগুলোতে আফ্রিকা থেকে আনা ১৪ ও ১৫ বছর বয়সি খেলোয়াড়দের মাঠে নামানো হয়েছে। বিষয়টি ফিফার নজরে এসেছে।

লাইবেরিয়া থেকে লাওসে আনা হয় ১৪ বছর বয়সি কেসেলি কামারা নামের একজন ফুটবলারকে। তাকে ছয় বছরের জন্য ক্লাবের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হতে হয়। কিন্তু তাকে কোনো টাকাকড়ি দেওয়া হয়নি। তাকে ও তার সহযোগীদের ঘুমাতো হতো ক্লাবের স্টেডিয়ামের একটি কক্ষের মেঝেতে। কেলেসি কামারা লাওসে চুক্তির মেয়াদ শেষ করে দেশে ফিরে গেছেন। কিন্তু তার মতো অনেকে এখনো লাওসে আছে, যারা জিম্মি অবস্থায় জীবনযাপন করছে।

ভাগ্যের অন্বেষণে অনেক ফুটবলার আফ্রিকা থেকে এশিয়ার বিভিন্ন দেশে খেলতে আসে। কিন্তু কখনো কখনো তারা চরম প্রতারণার শিকার হন। মূলত মধ্যস্থতাকারী এবং অসাধু ক্রীড়া সংগঠকদের জন্য এই অবস্থার সৃষ্টি হয় বলে জানা গেছে।



মন্তব্য চালু নেই