এভাবে হোস্টেলে পড়ে ছিল ছাত্রীর মৃতদেহ, মৃত্যুর আগে করেছিলেন এই মর্মান্তিক মেসেজ

গত ১৩ ফেব্রুয়ারি বোকারোর নিকটবর্তী গড়বার বনাঞ্চল ডেন্টাল কলেজের ছাত্রী সোনালির অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়। ছাত্রীর বাবার দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। সেই তদন্তের সাপেক্ষেই এ বার সামনে এলো চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা গেল, মৃত্যুর আগে নিজের বন্ধুকে হোয়াটস অ্যাপে বেশ কিছু মেসেজ করেছিলেন মৃত্তিকা। সেই সমস্ত মেসেজ থেকে তাঁর মৃত্যুর কারণ কিছুটা অনুমান করা যাচ্ছে।

গত ১৩ ফেব্রুয়ারি কলেজের হোস্টেলের বিছানায় পাওয়া যায় সোনালির মৃতদেহ। খবর পেয়ে পুলিশ যখন হোস্টেলে গিয়ে পৌঁছয়, তখন দেখা যায়, মৃতার মুখ এবং গলা প্লাস্টিক দিয়ে ঢাকা রয়েছে।

মৃত্তিকার বাবা সংবাদমাধ্যমের সামনে দাবি করেছেন, মৃত্যুর কয়েক দিন আগে কলেজের সিনিয়ররা র‌্যাগিং করেছিলেন প্রথম বর্ষের এই ছাত্রীকে। তার পরেই অপমানবশত অসুস্থ হয়ে পড়েন মৃত্তিকা।

ছাত্রীর বাবা জানাচ্ছেন, সিনিয়ারদের আচরণে বিব্রত মৃত্তিকা নিজের অপমানের কথা হোয়াটস অ্যাপে মেসেজ করে জানিয়েছিলেন নিজের বন্ধুকে। সম্প্রতি সেই সমস্ত মেসেজ হাতে এসেছে পুলিশের।

মেসেজে দেখা যাচ্ছে, সোনালি নিজের বন্ধুকে জানাচ্ছেন, সিনিয়ররা র‌্যাগিং-এর সময়ে সোনালিকে সবার সামনে নাচতে বাধ্য করেন। সোনালির গায়ে জ্বর ছিল।। কিন্তু তা সত্ত্বেও সিনিয়ারদের কোনও দয়ামায়া হয়নি। জ্বর গায়ে প্রায় আধঘন্টা সকলের সামনে নাচার পরে ঘরে এসে অসুস্থ হয়ে পড়েন সোনালি। অপমানের চোটে কান্নাকাটি শুরু করেন তিনি। হোয়াটস অ্যাপে মেসেজ করে নিজের কান্নার কথা যেমন জানিয়েছিলেন তিনি, তেমনই তাঁর রুমমেটরাও জানিয়েছেন যে, র‌্যাগিং-এর পরে ঘরে এসে কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন সোনালি। তাঁর বন্ধু সোনালিকে পরামর্শ দেন, কাউকে যেন এই বিষয়ে কোনও অভিযোগ না করেন তিনি। তা হলে হোস্টেলে টেকা মুশকিল হয়ে দাঁড়াবে তাঁর।

সোনালির বাবা অভিযোগ করেছেন, কলেজে মেয়েকে ভর্তি করানোর সময় কলেজ কর্তৃপক্ষ ঘুণাক্ষরেও জানতে দেননি যে, এই কলেজে র‌্যাগিং হয়। জানলে মেয়েকে এখানে ভর্তিই করাতেন না। সোনালির মুখে নাকি কলেজের এমন ঘটনাও তিনি শুনেছেন যে, এক ছাত্রী র‌্যাগিং বিষয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করার পরে হোস্টেল ওয়ার্ডন মীনা সিংহ ক্লাসে এসে শিক্ষার্থীদের ফেল করানোর হুমকি দিয়েছিলেন।

ছাত্রীর বাবা দাবি করেছেন, র‌্যাগিং-এর ঘটনার সঙ্গে সোনালির অস্বাভাবিক মৃত্যুর কোনও যোগ রয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই