এবার ডালমিয়া-শ্রীনি দ্বন্দ্ব!
মধুচিন্দ্রমার তবে কী অবসান হতে চলল! পরিস্থিতি ধীরে ধীরে যে দিকে গড়াচ্ছে, তাতে সেটাই স্পষ্ট হয়ে উঠছে। আইসিসি চেয়ারম্যান নারায়নস্বামী শ্রীনিবাসন আর বিসিসিআই সভাপতি জগমোহন ডালমিয়ার মধ্যে দুরত্ব তৈরী হতে হতে এখন প্রকাশ্য আকার ধারণ করছে। যে কোন সময় বিস্ফোরণ আকারে ছড়িয়েও পড়তে পারে সেটা।
আপাতত দ্বন্দ্বের বিষয় একটাই। আইপিএলের চেয়ারম্যান নির্বাচন। ভারতীয় মাল্টি বিলিয়ন ডলারের টুর্নামেন্টটির অষ্টম আসর শুরু হতে আর বাকি তিনদিন। অথচ, এখনও আইপিএলের মূল কর্তা ব্যাক্তি কে, সেটাই ঠিক করতে পারেনি ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। কে হবেন সেটাও নিশ্চিত নয়। এ নিয়েই মূলতঃ ঠাণ্ডা যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে শ্রীনিবাসন আর ডালমিয়ার মধ্যে। অথচ সবাই জানে শ্রীনিবাসন বিসিসিআই থেকে বিতাড়িত হলেও ডালমিয়া তারই খাস লোক এবং এ কারণেই বিসিসিআইতে শ্রীনির প্রভাব এখনও রয়ে গেছে।
কলকতার এবেলা পত্রিকার খবর, ‘ক্রমশ সংঘাত তীব্র হচ্ছে ভারতীয় ক্রিকেটের হেভিওয়েট প্রশাসকের মধ্যে। বিস্ময়কর শোনালেও এই দুটো নাম নারায়নস্বামী শ্রীনিবাসন এবং জগমোহন ডালমিয়া। চেন্নাইয়ের বোর্ড নির্বাচনে যারা হাতে হাত মিলিয়ে শারদ পাওয়ার গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে লড়ে জিতেছেন।’
‘একাধিক বিষয় নিয়ে শ্রীনি-ডালমিয়া দুরত্ব তৈরী হতে হতে এখন সংঘাত অনিবার্য হয়ে পড়েছে। শ্রীনির ক্ষোভ, তাঁকে উপেক্ষা করে ডালমিয়া এখন সচিব অনুরাগ ঠাকুরের সঙ্গে হাত মিলিয়ে চলেছেন। মেলবোর্নে আইসিসি চেয়ারম্যান হিসেবে বিশ্বকাপ ফাইনালে পুরস্কার দিতে গিয়েছিলেন শ্রীনিবাসন। সেখানেও ঘনিষ্ঠ মহলে তিনি ডালমিয়াকে নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেন।’
এবেলা লিখেছে, শ্রীনিবাসন চাইছেন আইপিএল চেয়ারম্যান হিসেবে তার পছন্দের প্রার্থী রঞ্জিব বিসওয়ালকেই দায়িত্ব দিতে। বিপরীতে অনুরাগ ঠাকুরের প্রার্থী অজয় শিরকে। আইপিএলের স্পট ফিক্সিং কাণ্ডে গুরুনাথ মায়াপ্পনকে নিয়ে যখন ক্রিকেট দুনিয়ায় তোলপাড়, তখন শ্রীনির বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করে পদত্যাগ করেছিলেন শিরকে। সেই লোকই যদি আইপিএলের চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন, তখন শ্রীনিবাসনের লজ্জ্বা আর অপমান হওয়াছাড়া কিছু থাকবে না।
আইপিএলের চেয়ারম্যান ঠিক করতে নাকি এখনও কোন মিটিংই ডাকেননি ডালমিয়া। হিসাব মতে, শেষ মুহূর্তে এসে নিজের ক্ষমতাবলে একজনের নাম ঘোষণা করে দিতে পারেন বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট। কিন্তু সেটা পরে ওয়ার্কিং কমিটিতে পাশ করিয়ে আনতে হবে সভাপতিকে। যদিও, ওয়ার্কিং কমিটি এখনও পুরোপুরি শ্রীনির প্রভাবমুক্ত হতে পারেনি।
আইপিএল চেয়ারম্যান নিয়ে শ্রীনিবাসন আর ডালমিয়ার ঠান্ডা যুদ্ধের কারণে লাভ হতে পারে বাংলাদেশেরও। আইসিসি নিয়ে বাংলাদেশের আ হ ম মোস্তফা কামাল এবং শ্রীনিবাসনের প্রকাশ্য দ্বন্দ্বের যে জের বাংলাদেশ ক্রিকেটের ওপর পড়তে যাচ্ছে, আপাতত সে ক্ষেত্রে শীতলতা নেমে আসতে পারে। শ্রীনির কারণে বিসিসিআই বাংলাদেশ সফর নিয়ে ভিন্ন কোন সিদ্ধান্ত না নেওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে।
মন্তব্য চালু নেই