এবার টার্গেট মধ্যম সারির নেতারা

বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের মধ্যমসারির নেতাদের টার্গেট করে এবার বিশেষ অভিযান শুরু করেছে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এরই মধ্যে তাদের একটি তালিকাও করা হয়েছে। তালিকা অনুযায়ী রোববার থেকে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে মধ্যমসারির নেতাদের ধরতে সাড়াশি অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।

পুলিশের একটি দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, বিএনপি ও জামায়াতের শীর্ষ নেতারা আত্মগোপনে যাওয়ার পর সারা দেশে যে পেট্রল বোমা মারা হচ্ছে, বাস-ট্রাকে আগুন লাগিয়ে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে তার পেছনে মাঝারি মানের নেতাদের সরাসরি সম্পৃক্ততা রয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পরই এই বিশেষ সাড়াশি অভিযান শুরু করেছে পুলিশ।

ওই সূত্র মতে, বড় নেতারা আত্মগোপনে যাওয়ার পর মূলত ‘মাঝারি এবং পাতি’ নেতারা হরতাল অবরোধ সফল করার দায়িত্বে রয়েছে। রাজধানীতে যে সব বিচ্ছিন্ন অরাজক পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে তা তাদেরই নেতৃত্বে হচ্ছে এটা প্রায় নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ। যে কারণে পুলিশ ওই সব নেতাদের গ্রেফতার করে আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রনে রাখতে চেষ্টা চালাচ্ছে।

গত রাতে রাজধানীর গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল কারওয়ান বাজারে অবস্থিত বেসরকারি টিভি চ্যানেল আরটিভির নিচে থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের প্রাক্তন সভাপতি এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মনির হোসেনকে গ্রেফতার করেছে।

আজিমপুর সরকারি কলোনির বাসা থেকে ইতিমধ্যে গ্রেফতার হয়েছেন সাবেক ছাত্রদল নেতা হারুন। একই রাতে স্বেচ্ছাসেবক দলের সহসভাপতি গোলাম সরোয়ারের বাসায় অভিযান চালায় পুলিশ। সোমবার গুলশানে খালেদা জিয়ার কার্যালয়ে ঢোকার সময় গ্রেফতার হয়েছেন বিএনপি নেতা মাজহারুল আলম।

এছাড়া গতরাতে রাজধানীর বাইরে জেলা উপজেলা এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে পুলিশ সাড়াশি অভিযান পরিচালনা করে তিন শতাধিক মধ্যমসারির নেতাকে গ্রেফতার করেছে।

পুলিশের একটি সূত্র বলেছে, দেশকে যেভাবে অস্থির করে তোলা হচ্ছে তাতে মদদ দিচ্ছে এই সব মাঝারি মানের নেতারা। আন্ডার ওয়ার্ল্ডে থেকে চোরাগোপ্তা হামলা চালাচ্ছে তারা। কখনো কখনো নিজেরা সরাসরি অংশ নিচ্ছে আবার কখনো কখনো টোকাইদের দিয়ে বাসে ট্রাকে পেট্রোল বোমা ছুঁড়ে মারছে। মূলত এরাই পিছনে থেকে নাশকতার কাজ করছে। যে কারণে এইসব মাঝারি মানের নেতাদের গ্রেফতারে নেমেছে পুলিশ।

র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজির আহমেদের ভাষ্য, পুলিশ,র‌্যাব এবং আনসার নাশকতা রোধে জিরো টলারেন্সে রয়েছে। তিনি বলেন, কোন সন্ত্রাসী কার্যকলাপ বরদাস্ত করা হবে না। জনগণের শান্তি বিঘিœত হয় এমন কোন কাজ সৃষ্টি হলে বা কেউ এমন কাজ করত পারে সন্দেহ হলে পুলিশ আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে।

বিএনিপর শীর্ষ নেতা রিজভী আহমেদ এবং মোসাদ্দেক আলী ফালু গ্রেফতার হওয়ার পর মাজারি মানের নেতারা যে গ্রেফতারের টার্গেটে পড়েছে তা অনেকটাই পরিস্কার। ইতিমধ্যে গ্রেফতার এড়াতে মাঝারি মানের নেতারাও রাজধানী থেকে আত্মগোপনে যেতে শুরু করেছেন বলে ধারনা করা হচ্ছে । কারণ অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মাঝারি মানের নেতা গ্রেফতার হয়নি। তবে পুলিশ যাদের টার্গেট করেছে তাদের যে কোন উপায়ে গ্রেফতার করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।

এছাড়া সারা দেশের মাঝারি মানের নেতাদের একটি তালিকা করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। সেই তালিকা ধরে ধরে প্রতিটি মুহুর্তে গ্রেফতার অভিযান চলবে বলে জানা গেছে।



মন্তব্য চালু নেই