এবার জেনে নিন খেজুরের অসাধারণ উপকারিতা

হাজার হাজার বছর পূর্বে যখন খেজুর আবিষ্কৃত হয় তখন থেকেই তা নিরাময় ক্ষমতা সম্পন্ন বলে পরিচিত। পরবর্তীতে বিজ্ঞানসম্মত ভাবেও তা প্রমাণিত হয়। এই ফলটি অত্যন্ত সুস্বাদু বলে বেশীরভাগ মানুষ এটি খেতে পছন্দ করেন। আমাদের দেশে রোজার সময় ইফতারিতে খেজুর খাওয়া হয়। খেজুর অনেক পুষ্টি উপাদানে সমৃদ্ধ। আসুন তাহলে জেনে নেয়া যাক খেজুরের কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতার কথা।

১। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে
কোলনের স্বাস্থ্যের জন্য এবং নিয়মিত মল নিষ্কাশনের জন্য ফাইবার অত্যাবশ্যকীয় একটি উপাদান। খেজুরের দ্রবণীয় ও অদ্রবণীয় ফাইবার গ্যাস্ট্রোইন্টেস্টাইনাল সিস্টেমকে পরিষ্কার হতে সাহায্য করে। কোলন বা বৃহদান্ত্রের দক্ষতা বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে খেজুর। কোলাইটিস, কোলন ক্যান্সার এবং হেমোরয়েডস এর ঝুঁকি কমতেও সাহায্য করে খেজুর।

২। হৃদ স্বাস্থ্যের জন্য উপকারি
হৃদপিণ্ডকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে খেজুর। খেজুরে প্রচুর পটাসিয়াম থাকে যা আপনার স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায় এবং হৃদপিণ্ডের অন্যান্য রোগ থেকে রক্ষা করে বলে গবেষণায় পাওয়া গেছে।

৩। প্রদাহ কমায়
খেজুর ম্যাগনেসিয়ামে সমৃদ্ধ যার প্রদাহ রোধী গুণ আছে। গবেষণায় জানা যায়- শরীরের প্রদাহ নির্দেশক উপাদান যেমন- CRP, TNF এবং IL6 ইত্যাদি কমে যায় যখন ম্যাগনেসিয়াম গ্রহণের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। ধমনী প্রাচীরের ইনফ্লামেশন কমতেও সাহায্য করে ম্যাগনেসিয়ামে। এছাড়াও ম্যাগনেসিয়াম কার্ডিওভাস্কুলার ডিজিজ, আরথ্রাইটিস, আলঝেইমার্স ও অন্যান্য প্রদাহজনিত রোগ সারাতেও অত্যন্ত কার্যকরী।

৪। ব্লাড প্রেসার কমায়
খেজুর খনিজ উপাদানে সমৃদ্ধ। ম্যাগনেসিয়াম রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। পটাসিয়াম হৃদপিণ্ডকে সঠিকভাবে কাজ করতে এবং রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।

৫। রাতকানারোগ নিরাময় করে
খেজুরের উপকারিতা অপরিসীম। কান, নাক ও গলার বিভিন্ন ধরণের সমস্যা সমাধানে সাহায্য করে খেজুর। খেজুর চূর্ণ করে পেস্ট তৈরি করে চোখের উপরে ও চারপাশে লাগিয়ে রাখলে অথবা নিয়মিত খেজুর খেলে রাতকানা রোগের পুনরাবৃত্তি কমানো যায়।

৬। এনার্জি বৃদ্ধি করে
খেজুরে প্রাকৃতিক চিনি গ্লুকোজ, ফ্রুক্টোজ ও সুক্রোজ থাকে যা এনার্জি বুস্টার হিসেবে কাজ করে। অনেক বেশি উপকারিতা পাওয়ার জন্য খেজুরের সাথে দুধ মিশিয়ে পুষ্টিকর স্ন্যাক্স তৈরি করতে পারেন। খেজুরে ক্যালোরি খুবই কম থাকে যা স্বাস্থ্য সচেতন মানুষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী একটি খাবার।

৭। গর্ভাবস্থার জন্য অত্যন্ত উপকারি
ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্স এন্ড টেকনোলোজি এর গবেষকেরা গর্ভবতী নারীদের নিয়ে একটি গবেষণা করেন, এই গবেষণায় ৬৯ জন গর্ভবতী নারীকে ১ বছর ১ মাস পর্যবেক্ষণ করা হয়। যেখানে দেখা যায় যে, প্রসবের ৪ সপ্তাহ আগে থেকে খেজুর খেলে প্রসব সহজে হয়।

৮। অ্যানেমিয়া দূর কর
খেজুরে আয়রন থাকে বলে অ্যানেমিয়া নিরাময়ে সাহায্য করে। যারা রক্তশূন্যতায় ভুগছেন তারা নিয়মিত খেজুর খেতে পারেন।

এছাড়াও খেজুরে ফ্লোরিন থাকে যা দাঁতের ক্ষয় প্রক্রিয়াকে ধীর করতে সাহায্য করে। খেজুরে প্রোটিন থাকে যা আপনাকে ফিট থাকতে সাহায্য করে এবং মাসলকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে। খেজুরে প্রচুর ভিটামিন থাকে বলে নিয়মিত খেজুর খেলে ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করতে হয় না। খেজুরে সেলেনিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, কপার ও অন্যান্য খনিজ উপাদান থাকে যা হাড়কে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে এবং অস্টিওপোরোসিস প্রতিরোধ করে।



মন্তব্য চালু নেই