এবার জানা গেল ৫ খুনের ঘটনার আসল রহস্য!

পরিবারের পাঁচ সদস্যকে হত্যার পেছনে নারীঘটিত যৌন আবেদন ও আর্থিক লেনদেনের বিষয় সম্পৃক্ত করে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

নিহত তাসলিমা বেগমের স্বামী মো. শফিকুল ইসলাম রবিবার দুপুরে বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। এতে বলা হয়েছে, ‘নিহতদের মধ্যে লামিয়া আক্তার নামের গৃহবধূকে যৌন আবেদনে ব্যর্থ হয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটানো হয়েছে। আমার ভাগিনা মাহফুজ আমার ছোট ভাই শরীফের স্ত্রী লামিয়ার সঙ্গে ঢাকায় বসবাসের সময় যৌন আবেদন করিলে পরবর্তীতে ভাগিনা মাহফুজকে আমরা ঢাকায় রেখে নারায়ণগঞ্জ চলে আসি।

ভাগিনা মাহফুজ পুনরায় নারায়ণগঞ্জ এসে আমাদের বাসায় এসে শরীফের স্ত্রী লামিয়ার সঙ্গে একই ধরনের ব্যবহার ও আচরণ করত। এতে আমার ভাইয়ের স্ত্রী লামিয়া অসন্তুষ্ট হয়। আমার স্ত্রী তাসলিমা ও ছোট ভাই শরীফের কাছে লামিয়া বিষয়টি প্রকাশ করে দেয়। এতে করে আমাদের সন্দেহ হচ্ছে, উক্ত ব্যক্তিসহ (মাহফুজ) অজ্ঞাতনামা দুষ্কৃতকারীরা একই উদ্দেশ্যে পরস্পর যোগসাজশে শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টা হতে শনিবার রাত ৮টা ২০ মিনিট পর্যন্ত যেকোনো সময়ে শক্ত কোনো ভোঁতা অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম ও গলায় ফাঁস লাগিয়ে পাঁচজনকে হত্যা করেছে। ঘটনার পর থেকে তাসলিমার স্ত্রীর ব্যবহৃত মোবাইল সেট ও শ্যালক মোর্শেদুল ওরফে মোশাররফের মোবাইল ফোন পাওয়া যাচ্ছে না।’

মামলায় হত্যাকাণ্ডের পেছনে ১২ লাখ টাকা ঋণের কারণও উল্লেখ করা হয়েছে। তবে পুলিশ প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যৌন আবেদনের বিষয়টি প্রাধান্য দিয়ে এগোচ্ছে। নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মালেক মামলা দায়েরের সত্যতা স্বীকার করেছেন। তিনি জানান, ওই ঘটনায় পুলিশ ইতোমধ্যে সাতজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।
মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়, ‘আমার স্ত্রী তাসলিমা (২৮), মেয়ে সুমাইয়া (৪), ছেলে শান্ত (১০), ছোট ভাই শরীফ (২২) ও তার স্ত্রী লামিয়া (২০), শ্যালক মোর্শেদুল ওরফে মোশাররফ নারায়ণগঞ্জ শহরের বাবুরাইলে ইসমাইল হোসেনের বাড়ির নিচতলার ফ্ল্যাটে বসবাস করে আসছিলেন।

১০ বছর ধরে আমি (শফিকুল) ঢাকার জনৈক জিয়ারুল হাসানের গাড়ির চালক হিসেবে কর্মরত। প্রতি সপ্তাহের বৃহস্পতিবার আমি শহরের বাবুরাইলের বাসায় আসি। ১৬ জানুয়ারি রাত ৮টা ৪০ মিনিটে আমার ছোট ভাই শরীফ আমার মোবাইলে ফোন করে বিষয়টি অবহিত করে যে, কে বা কারা আমাদের বাবুরাইলের ফ্ল্যাটে তালা মেরে পালিয়ে গেছে। পরে আমরা তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে দুটি কক্ষের মেঝেতে রক্তাক্ত অবস্থায় পাঁচজনের মৃতদেহ দেখতে পাই।’

মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়, ‘আমি পরস্পর জানতে পারি যে, আমার স্ত্রী তাসলিমার কাছে ঢাকার কলাবাগানের নাজমা ও শাহাজাহান নামের একাধিক ব্যক্তি প্রায় ১২ লাখ টাকা পেত যা মাসিক চক্রবৃদ্ধি সুদে নেওয়া ছিল। উক্ত টাকা সময়মতো পরিশোধ করতে না পারায় পাওনাদাররা প্রায় সময়ে টাকা পরিশোধের জন্য হুমকি দিত। এমনকি নাজমাও মাঝেমধ্যে আমার পরিবার-সন্তানদের দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেবে বলে হুমকি প্রদান করত। আমার শ্যালক মোর্শেদুল ওরফে মোশাররফের কাছেও তারা টাকা পেত। টাকা-পয়সা পাওয়ার সুবাদে পাওনাদার ব্যক্তিরা আমার বাসায় যাওয়া-আসা করত এবং এ ব্যাপারে চাপ প্রয়োগ করত।’



মন্তব্য চালু নেই