এক রোগীর দু’বার মৃত্যু
জামালপুরের বকশীগঞ্জ পৌর শহরের মাঝপাড়া এলাকায় নির্মাণাধীন ভবনে কাজ করছিলেন মজিবর রহমান (৪৫)। অসাবধানতাবশত পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হন তিনি। এ সময় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
স্বজনরা মৃত মজিবর রহমানকে বাড়ি নিয়ে গেলে তিনি নড়েচড়ে ওঠেন এবং ঘনঘন শ্বাস নিতে থাকেন। এ সময় তাকে ফের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ঘণ্টা খানেক পরে চিকৎসকরা তাকে আবারও মৃত ঘোষণা করেন।
মৃত মজিবর রহমান পৌর শহরের মাঝপাড়া এলাকার মৃত সামছুল হকের ছেলে। তিনি পেশায় একজন নির্মাণ শ্রমিক ছিলেন।
এদিকে, অবহেলায় রোগী মৃত্যুর অভিযোগে কর্তব্যরত চিকিৎসককে লাঞ্ছিত ও বিক্ষোভ করেছে এলাকাবাসী। এ সময় তারা হাসপাতালে ভাঙচুরের চেষ্টা চালায়। অভিযুক্ত চিকিৎসক হাসপাতাল থেকে পালিয়ে রক্ষা পেয়েছেন। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
এলাকাবাসী জানান, বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মজিবর রহমান বকশীগঞ্জ পৌর শহরের মাঝপাড়া এলাকায় ইসহাক আলীর বাড়িতে ভবন নির্মাণের কাজ করছিলেন। এ সময় অসাবধানতাবশত তিনি পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হন। দ্রত বকশীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. আসিফ রায়হান চৌধুরী তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মৃত ভেবে স্বজনরা মজিবরকে বাড়িতে নিয়ে গেলে তিনি নড়ে ওঠেন এবং ঘন ঘন শ্বাস নিতে থাকেন। এ সময় তাকে ফের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ঘণ্টা খানেক পরে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের টিএইচও ডা. হিবরুল বারী তাকে আবারও মৃত ঘোষণ করেন।
মজিবর রহমানের পরিবারের অভিযোগ, কর্তব্যরত চিকিৎসক আফিস রায়হান চৌধুরী রোগী না দেখেই মৃত ঘোষণা করেন।
চিকিৎসকের অবহেলার কারণেই মজিবুরের মৃত্যু হয়েছে। এর সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন নিহতের ভাই হাবিবুর রহমান ও স্ত্রী মর্জিনা বেগম।
এদিকে, চিকৎসকের অবহেলায় রোগী মৃত্যুর সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে স্বজন ও এলাকাবাসী লাঠিসোটা নিয়ে হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভ করতে থাকে। এক পর্যায়ে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী হাসপাতালে ভাঙচুর ও চিকিৎসকদের ওপর হামলার চেষ্টা করে। এ সময় অভিযুক্ত চিকিৎসক আফিস রায়হান চৌধুরী হাসপাতাল থেকে পালিয়ে রক্ষা পান। খবর পেয়ে বকশীগঞ্জ থানা পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
তবে অবহেলায় রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. হিবরুল বারী জানান, অবহেলায় রোগীর মৃত্যুর খবরটি সঠিক নয়। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মজিবর রহমানের মৃত্যু হয়েছে।
বকশীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাছিনুর রহমান জানান, হাসপাতালের সামনে উত্তপ্ত পরিস্থিতি পুলিশ নিয়ন্ত্রণে এনেছে।
মন্তব্য চালু নেই