এক যুগ পর ফের ভারত-বাংলাদেশ পণ্যবাহী ট্রেন চলাচল শুরু
দীর্ঘ প্রায় এক যুগ বন্ধ থাকার পর দিনাজপুরের বিরল সীমান্ত দিয়ে রেলপথে আবার শুরু হলো বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে পণ্য আমদানি-রপ্তানি। এর ফলে একদিকে যেমন ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটাবে অন্যদিকে কর্মসংস্থানসহ সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি পাবে। দিনাজপুর অঞ্চলের আর্থসামাজিক উন্নয়নের পাশাপাশি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যাপক অবদান রাখবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সার্কভুক্ত দেশের মধ্যে ভারত, নেপাল, ভুটান এবং মিয়ানমারের সঙ্গে রেলপথে বাণিজ্যিক পণ্য পরিবহনের চুক্তি অনুযায়ী বিরল সীমান্ত দিয়ে ডুয়েল গেজ রেলপথে প্রথমবারের মত পরীক্ষামূলকভাবে ভারতীয় পাথরবাহী একটি ট্রেন বুধবার বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এদিকে পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন চলাচল শুরু হওয়ায় অপার সম্ভাবনা দেখছেন স্থানীয় ও ব্যবসায়ীগণ। তাদের দাবি অতিদ্রুত বিরল স্থলবন্দর চালু ও যাত্রীবাহী ট্রেনও চলাচল শুরু করা হোক।
দিনাজপুর রেলওয়ে বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান জানান, গত বছরে বাংলাদেশের পার্বতীপুর থেকে ভারতের রাধিকাপুর রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত মিটার গেজকে ডুয়েল গেজে রূপান্তরিত করা হয়। গত বছরের ডিসেম্বরে এ কাজ সম্পন্ন করা হয়।
বিরল রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মাসুদ পারভেজ জানান, দীর্ঘদিন পর মিটার গেজ থেকে রূপান্তরিত ডুয়েল গেজ দিয়ে ৮ মার্চ ভারতীয় পণ্যবাহী ট্রেন ৪২টি ওয়াগনে ২ হাজার ৪৭২ মেট্রিক টন পাথর নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। ভারত-বাংলাদেশের ট্রেনের এই রুটটি দিয়ে আমদানি-রপ্তানি শুরু হলে ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি সরকারও লাভবান হবে।
উল্লেখ্য, ব্রিটিশ আমলে অবিভক্ত ভারত এবং স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ২০০৪ সাল পর্যন্ত মিটার গেজ রেলপথে নেপাল, ভারত এবং মিয়ানমায়ের সঙ্গে বাংলাদেশে মধ্যে সীমিত সংখ্যক পণ্যবাহী ট্রেন চলতো বিরল রেলপথ দিয়ে। ২০০৬ সালে ভারত রাধিকাপুর পযর্ন্ত ব্রড গেজ রেলপথ স্থাপন করায় রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়ে ওই রুটে। দীর্ঘ ১১ বছর পর বাংলাদেশ বাণিজ্যিকভাবে পণ্যবাহী ট্রেন চলাচলের সুবিধার্থে ভারতের উত্তর দিনাজপুরের রাধিকাপুর স্টেশন পর্যন্ত ব্রড গেজ রেলপথ সম্প্রসারণ করা হয়।
এর আগে ২০০৫ সালে ভারতের অংশে ব্রডগেজ রেললাইন হওয়ায় বাংলাদেশে আর মালবাহী ট্রেন আসতে পারত না। এতে ২০০৫ সালের মে মাস থেকে বিরল স্থলবন্দর দিয়ে রেলপথে দুদেশের আমদানি-রপ্তানি বন্ধ হয়ে যায়।
দিনাজপুর কাস্টমস এক্সাইজ অ্যান্ড ভ্যাট বিভাগের সহকারী কমিশনার তাহের উল আলম বলেন, ৮ মার্চ ভারত থেকে ৪২ ওয়াগন পাথর বাংলাদেশে এসেছে, যার পরিমাণ দুই হাজার ৪৭২ মেট্রিক টন। এতে বাংলাদেশ সরকারের ১১ লাখ দুই হাজার টাকা রাজস্ব আয় হবে। ”
স্থানীয় ব্যবসায়ী সহিদুর রহমান পাটোয়ারী বলেন, রেলপথে বাংলাদেশ ভারতের মধ্যে পণ্য আমদানি-রপ্তানি শুরু হওয়ায় কর্মসংস্থানের ব্যাপক সুযোগ সৃষ্টি করবে।
মন্তব্য চালু নেই