এক ডজন দুর্ধর্ষ জঙ্গির খোঁজে পুলিশ

পুরস্কার ঘোষণার পরই পুলিশের ‘অপারেশন হিট স্ট্রং-২৭’-এ নিহত হয়েছেন শীর্ষ জঙ্গি নেতা তামিম আহমেদ চৌধুরী। এখন টার্গেটে রয়েছেন তারই সহযোগী ও গুলশান হামলার মাস্টারমাইন্ড সেনাবাহিনী থেকে চাকরিচ্যুত মেজর সৈয়দ জিয়াউল হক, দুর্ধর্ষ জঙ্গি নুরুল ইসলাম মারজান। এ দু’জনসহ এক ডজন জঙ্গি রয়েছে টার্গেটে। এজন্য খুব শিগগিরই আবারো অপারেশন পরিচালিত হতে পারে।খবর জাগো নিউজের।

জঙ্গি দমনে পুলিশ ধাপে ধাপে এগিয়ে গেলেও এখনো অধরা শীর্ষ জঙ্গিনেতা চাকরিচ্যুত মেজর জিয়া ও মারজান, সহযোগী মানিক, ইকবাল ও তাদের অন্য সহযোগীরা। মেজর জিয়া সম্পর্কে তথ্যে ইতোমধ্যে ২০ লাখ টাকা পুরস্কারও ঘোষণা করেছে পুলিশ।

পুলিশ বলছে, নতুন ধারার জেএমবির এই সদস্যদের ধরতে গোয়েন্দারা সব ধরনের জাল তৈরি করেছে এবং অভিযান অব্যাহত রেখেছে। এর অংশ হিসেবে শিগগিরই নতুন কোনো গোপন আস্তানার খোঁজ পাওয়া যেতে পারে।

নারায়ণগঞ্জে অভিযানের পর রাজধানীর রুপনগর আবাসিক এলাকায় অভিযানে নিহত হন জঙ্গি মেজর জাহিদুল ওরফে মুরাদ। তামিমের অবর্তমানে মুরাদই ছিলেন নব্য জেএমবির সামরিক শাখার প্রধান। জঙ্গিবাদ দমনে শিগগিরই আরো কিছু অভিযানের মধ্য দিয়ে সফলতা আসতে পারে বলে আশাবাদী গোয়েন্দা সংস্থাগুলো।

পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের কর্মকর্তারা বলছেন, জঙ্গি দমন একটি চলমান প্রক্রিয়া। তবে তামিম অধ্যায় শেষ হওয়ার পর এবার তারা জিয়া এবং মারজানকে হন্যে হয়ে খুঁজছেন। তাদের এখন বড় লক্ষ্য এ দু’জনকে গ্রেফতার করা। তাহলে আপাতত দেশে জঙ্গি কার্যক্রমের লাগাম টানা সম্ভব হবে।

কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের প্রধান ডিআইজি মনিরুল ইসলাম জানান, তারা পলাতক মেজর জিয়া, মারজানসহ কয়েক জঙ্গিকে গ্রেফতারের চেষ্টা চালাচ্ছেন। তাদের মতো আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অন্য সংস্থাগুলোও তাদের গ্রেফতারে অভিযান চালাচ্ছে।

আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, পুলিশ পাহারায় চিকিৎসাধীন জঙ্গি রাকিবুল হাসান রিগ্যান ও জাগৃতির প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপন হত্যা মামলায় গ্রেফতার আনসার আল ইসলামের নেতা শামীম ওরফে সিফাত গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য দিয়েছে।

সিফাতের দেওয়া তথ্য মতে জাগৃতি প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী ফয়সল আরেফিন দীপন হত্যা ও শুদ্ধস্বরের স্বত্বাধিকারী আহমেদুর রশীদ চৌধুরী টুটুল হত্যাচেষ্টার অন্যতম হোতা আবদুস সবুরকে শনিবার টঙ্গি থেকে গ্রেফতার করে ডিবি (দক্ষিণ) পুলিশ।

গত ২৬ জুলাই কল্যাণপুরে জঙ্গি আস্তানায় সফল অভিযানের পর বেরিয়ে আসে তামিম আর মারজানের নাম। পলাতক মারজান নব্য জেএমবির ‘ন্যাশনাল অপারেশন কমান্ডার’।

অন্যদিকে গুলশান ও শোলাকিয়া হামলার পর প্রথম সারির তিন কমান্ডার ছাড়াও নিচের ধাপের ১২ জনের শক্তিশালী একটি টিমের তথ্য আসে গোয়েন্দাদের হাতে। এরা কেউ দেশ থেকে পালাতে পারেননি। কাউন্টার টেরোরিজমের দাবি গোয়েন্দা জালে আটকা রয়েছেন সবাই।

সূত্র আরো জানায়, কল্যাণপুর অভিযানের পর মানিক ও ইকবাল নামে দুটি নাম আসে। বর্তমানে নতুন আস্তানায় আত্মগোপনে রয়েছেন তারা। এরমধ্যে মানিক সারা দেশে বিভিন্ন ধরনের হামলার কো-অর্ডিনেটর হিসেবে কাজ করেন। আর ইকবাল অস্ত্র চালনায় পারদর্শী।

নতুন ধারার জেএমবির কমান্ডার রিপন ও খালিদ গুলশান এবং শোলাকিয়া হামলার পর ভারতে চলে যান। রিপন নতুন ধারার জঙ্গিদের কাছে ‘বড়ভাই’ বলে পরিচিত। এছাড়া নতুন ধারার জেএমবির জোনায়েদ খান, বাদল, আজাদুল কবিরাজ, রাজীব ও মামুনকে ধরতে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট অভিযান অব্যাহত রেখেছে।

গোয়েন্দা পুলিশের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, গুলশান হামলার মাস্টারমাইন্ড মারজান নজরদারিতে রয়েছেন। একই সঙ্গে নারায়ণগঞ্জে নিহত জঙ্গি তাওসীফ গ্রুপের সদস্য রিয়াজ ওরফে কাচ্চি, সালভি আলী ওরফে মালাভী, ইয়াসিন তালুকদার ও গালিবকে খোঁজা হচ্ছে। এদের সঙ্গে গুলশান ও শোলাকিয়ায় হামলাকারী জঙ্গিদের যোগসূত্র ছিল।



মন্তব্য চালু নেই