একেই বলে পুকুরচুরি!
গুলিস্তান-যাত্রাবাড়ী উড়ালসড়কের নিচে ও দুই পাশের রাস্তাঘাট উন্নয়নের নামে ৫০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। মোট ৬২ কোটি টাকার প্রকল্পের মধ্যে কাজ হয়েছে মাত্র ১২ কোটি টাকার।
জানা গেছে, ফুলবাড়িয়া থেকে গুলিস্তান হয়ে জয়কালী মন্দির, স্বামীবাগ, সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী, কুতুবখালী পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার এলাকার অর্ধেকেরও বেশি রাস্তা নির্মাণে ওই টাকা খরচ দেখানো হলেও রাস্তার বেহাল দশার কোনো উন্নতি হয়নি।
সম্প্রতি এমন সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আমলে নিয়ে অনুসন্ধানের জন্য মাঠে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুদকের এক কর্মকর্তা জানান, ইতিমধ্যে ঢাকা সিটি করপোরেশন ও ওরিয়ন ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড থেকে নথিপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে। বর্তমানে তা যাচাই-বাছাই চলছে।
অভিযোগের বিষয়ে দুদক সূত্রে জানা যায়, উড়ালসড়কের নিচে ও দুই পাশের রাস্তার যথাযথভাবে সড়ক সংস্কার না হওয়ায় উড়ালসড়ক চালু হলেও মিলছে না প্রকৃত সুবিধা। অথচ ২০১৩ সালেই সেতু এলাকায় এসব রাস্তাঘাট উন্নয়নে প্রায় ৬২ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। এর মধ্যে প্রথমে ১৫ কোটি টাকার কাজ করে সিটি করপোরেশন। পরে করপোরেশনের নিজস্ব ও বিভিন্ন প্রকল্পের অধীনে কাজ করা হয়। অথচ বাস্তবে বেশির ভাগ রাস্তা, ফুটপাতের কাজ নিম্নমানের হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
এমনকি উড়ালসড়ক এলাকার জয়কালী মন্দির ও আশপাশের এলাকার ফুটপাতের মান নিয়ে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অভিযোগ করা হয়েছে। অন্যদিকে কিছু রাস্তার উন্নয়নকাজ ধরাই হয়নি।
অভিযোগ সূত্রে আরো জানা যায়, ফুলবাড়িয়া থেকে গুলিস্তান পর্যন্ত রাস্তা ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় রয়েছে। গুলিস্তান চৌরাস্তার মোড় থেকে উড়ালসড়কের একদিকে কাপ্তানবাজার এবং অন্যদিকে বঙ্গভবনের পাশঘেঁষা দুটি সড়ক চলাচলের অনুপযোগী রয়েছে। এমনকি উড়ালসড়কের মাঝখানের পথ পেরোতে গিয়ে রিকশা ও অটোরিকশা নিয়মিত উল্টে যাওয়ার ঘটনাও ঘটছে। মাঝেমধ্যেই সড়কগুলো সংস্কারের নামে কিছু খোয়া ফেলা হলেও প্রকৃত অর্থে রাস্তা পুরোপুরি সংস্কার হয়নি।
জয়কালী মন্দির-যাত্রাবাড়ী এলাকায় প্রায় চার কিলোমিটার পাইপলাইন নির্মাণের কাজ ২০১৩ সালের ঈদুল ফিতরের আগেই শেষ হওয়ার কথা থাকলেও রাস্তা উন্নয়নে কোনো কাজ হয়নি। শুধু কাজ হয়েছে দক্ষিণ প্রান্তে শহীদ ফারুক সড়ক থেকে সায়েদাবাদ ও স্বামীবাগ থেকে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল পর্যন্ত।
অভিযোগ সূত্রে আরো জানা যায়, সিটি করপোরেশনের ঠিকাদাররা যেসব রাস্তা মেরামত করেছেন, সেগুলোর বিল পরিশোধ হয়নি। রাস্তার কাজ না হওয়ার জন্য অন্যতম কারণ এটি।
এ ছাড়া অভিযোগ রয়েছে, প্রকল্প এলাকার বিভিন্ন স্থানে অবৈধ স্থাপনা এবং রাস্তার দুই পাশে অবৈধ বাজার স্থাপন করা হয়েছে।
দুদকের উপপরিচালক আবদুস সোবাহান অভিযোগটি অনুসন্ধান করছেন।
প্রসঙ্গত, ওরিয়ন ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড যাত্রাবাড়ী-গুলিস্তান ফ্লাইওভার নির্মাণ করেছে।
মন্তব্য চালু নেই