একুশে বইমেলা : নিরাপত্তায় থাকছে ২৫০ সিসি ক্যামেরা

অমর একুশে গ্রন্থমেলাকে উৎসব মুখর করে তুলতে বাংলা একাডেমি প্রায় সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। প্রতি বারের ন্যায় এবারও সারাদেশ থেকে আগত সকল শ্রেনী পেশার বই প্রেমীদের বরণ করে নিতে প্রস্তুত অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৭। শেষ হয়েছে প্রকাশনা সংস্থা কর্তৃক দোকান বরাদ্দের জন্য দরপত্র জমা দেওয়ার নির্ধারিত সময়ও।

সোমবার বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সরজমিনে দেখা গেছে, মঞ্চ ও অস্থায়ী স্টল নির্মাণে ব্যাস্ত শ্রমিকরা।

বাংলা একাডেমি সূত্রে জানাগেছে, পহেলা ফেব্রুয়ারি বিকেল ৩ টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গ্রন্থমেলার শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করবেন। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, চীনের প্রখ্যাত গবেষক ও রবীন্দ্র অনুবাদক ডং ইউ চেন, অষ্ট্রিয়ার মেনফ্রেড কোবো, পুয়ের্তোরিকোর লুস মারিয়া লোপেজ, ভারতের চিন্ময় গুহ।

গতবারের মতো এবারও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৪ লাখ বর্গফুট জায়গা নিয়ে শুরু হচেছ এই মেলা। মেলা প্রাঙ্গণ ১২টি গুচ্ছ আকারে সাজানো হচ্ছে। একাডেমিক প্রাঙ্গণে ৮০ টি প্রতিষ্ঠানকে ১১৪ টি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৩২৩ টি প্রতিষ্ঠানকে ৫৪৯ টি ইউনিটে মোট ৬৬৩ টি ষ্টল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

ক্রেতাদের সুবিধায় গুগল ট্রিট নামে ব্যতিক্রমী এক এ্যাপস তৈরি করা হয়েছে। এর মাধ্যেমে ষ্টলের নাম সার্চ দিলেই পাওয়া যাবে দোকানের অবস্থান। টি এস সি ও দোয়েল চত্বরের মূল প্রবেশ পথে এলইডি মনিটর স্থাপিত থাকবে। এখান থেকে মেলার প্রয়োজনীয় তথ্য পাওয়া যাবে। একাডেমি প্রাঙ্গণে ‘নতুন বইয়ের প্রদর্শনশালা’ করা হয়েছে, এতে প্রতিদিন প্রকাশিত নতুন বই দিন ভিত্তিক ভাবে সাজানো থাকবে।
শারীরিক প্রতিবন্ধিদের ও বয়স্কদের জন্য থাকবে হুইল চেয়ারের ব্যবস্থা। আর শিশুকর্নারে থাকছে ‘মাতৃদুগ্ধ সেবাকেন্দ্র।

বাংলা একাডেমিতে প্রবেশের জন্য থাকবে ৩ টি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশ ও বের হওয়ার জন্য ৮ টি পথ। প্রথমবারের মত উদ্যানে প্রবেশ পথে দৃষ্টিনন্দন নতুন সুপ্রশস্ত গেট নির্মাণ করা হয়েছে। একি সাথে একাডেমির মূল প্রাঙ্গনে থাকবে সরকারী প্রতিষ্ঠানের বিক্রয় কেন্দ্র আর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে থাকবে প্রকাশনা সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান সমূহের স্টল।

প্রতিবারের ন্যায় এবারের বইমেলাতেও কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। র্যা ব-পুলিশ-ডিবির পাশাপাশি মাঠে থাকবে আনসার, ভিডিপি, ফায়ার সার্ভিস ও সাদা পোশাকের পুলিশ সদস্যরা। মেলার ভেতরে ও আশপাশের এলাকায় থাকবে আড়াই শতাধিক ক্লোজ সার্কিড (সিসি) টেলিভিশন ক্যামেরা। এগুলো মনিটর করার জন্য থাকবে কন্ট্রোলরুম। থাকছে অতিরিক্ত লাইটিং।

মেলার প্রস্তুতি নিয়ে বাংলা একাডেমির মাহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান বলেন, ‘মেলায় স্টল নির্মাণের কাজ প্রায় শেষের দিকে। আাশা করছি এ বছর মেলাতে গতবছরের তুলনায় অনেক বেশি ক্রেতার সমগম হবে। আশা করি এবারের বইমেলায় বইপ্রেমিরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে আসতে পারবেন এবং সকল ধরনের পছন্দের বই কিনতে পারবেন।

গ্রন্থমেলা শুক্রবার ছাড়া প্রতিদিন বিকাল ৩টা থেকে শুরু হয়ে রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত চলবে। মেলা মঞ্চে চলবে বিভিন্ন আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বিশেষ করে ‘গ্রন্থ মেলার’ প্রথম চারদিনকে ঘোষণা করা হয়েছে অন্তর্জাতিক সাহিত্য সম্মেলন হিসেবে।

১৯৫৫ সালে যাত্রা শুরু করে বাংলা একাডেমি। এরপরে ১৯৭২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারী চিত্ত রঞ্জন সাহা সর্বপ্রথম গ্রন্থমেলা শুরু করেন। যা ১৯৮৪ সালে ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা’ নামে প্রকাশ পায়। এরপর থেকেই বাঙ্গালীর প্রাণের মেলা হিসেবে এটি স্বীকৃতি লাভ করে।



মন্তব্য চালু নেই