ফুলেল শুভেচ্ছায় মোদিকে স্বাগত হাসিনার

হাসিনা-মোদি বৈঠক : স্থলসীমান্ত চুক্তির দলিল হস্তান্তর

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বিকাল চারটার দিয়ে এ বৈঠক শুরু হয়। প্রায় ২০মিনিটের বৈঠক শেষে শাপলা হলে দুই প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে দু’দেশের মধ্যে ১৯৭৪ সালের সম্পাদিত স্থল সীমান্ত  চুক্তি ও ২০১১ সালে সই হওয়া এই সংক্রান্ত প্রটোকলের দলিল হস্তান্তর হয়েছে। ভারতের পক্ষে ভারতের পক্ষে দেশটির পররাষ্ট্র সচিব সুব্রামিনিয়াম জয়শঙ্কর ও বাংলাদেশের পক্ষে পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হক দলিল বুঝে নেন। ওই দলিলে বাংলাদেশের পক্ষে সই করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রেসিডেন্ট প্রণব মুখার্জী। পরে ঐতিহাসিক এই চুক্তি বাস্তবায়নের বিষয়ে একটি নতুন প্রটোকল সই হয়। সেখানে নিজ নিজ দেশের পক্ষে পররাষ্ট্র সচিবরা সই করেন।
এর আগে নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পৌঁছলে তাকে স্বাগত জানান শেখ হাসিনা। এসময় ঢাকা-শিলং-গোহাটি ও কলকাতা-ঢাকা-আগরতলা বাস সার্ভিসের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী। এসময় পশ্চিমবঙ্গের মূখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় উপস্থিত ছিলেন। উদ্বোধনের পরপরই এই দুই রুটে যাত্রী নিয়ে দুটি বাস যাত্রা শুরু করে।

নরেন্দ্র মোদি- শেখ হাসিনাএকান্ত বৈঠকে হাসিনা-মোদি

এই মুহূর্তে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে একান্ত বৈঠকে বসেছেন সফররত ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এর আগে শনিবার বিকেল ৩টা ৪০ মিনিটে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পৌঁছান নরেন্দ্র মোদি। সেখানে তাকে স্বাগত জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

মোদির সঙ্গে ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। এ সময় তিন নেতা ঢাকা-কলকাতা ও ঢাকা-শিলংয়ের বাস সার্ভিস উদ্বোধন করেন। এরপর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের গোলাপ হলে একান্ত বৈঠকে বসেন দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী।

ফুলেল শুভেচ্ছায় মোদিকে স্বাগত হাসিনার

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমন্ত্রণে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দুই দিনের সফরে শনিবার সকালে ঢাকায় পৌঁছেছেন। সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে তাকে বহনকারী বিমানটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। নরেন্দ্র মোদিকে ফুলেল শুভেচ্ছায় স্বাগত জানান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাকে লালগালিচা সংবর্ধনা দেওয়া হয়। ঢাকায় নেমে বিমানবন্দরে উপস্থিত বাংলাদেশের মন্ত্রিপরিষদ, তিন বাহিনীর কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট ভারতীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন নরেন্দ্র মোদি।

হযরত শাহজালাল আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দর থেকে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধের উদ্দেশে রওনা দেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। সেখানে নরেন্দ্র মোদিকে স্বাগত জানান গৃহায়ন ও পূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী এ কে এম মোজাম্মেল হক এবং স্থানীয় সংসদ সদস্য। এ সময় সেখানে নবম পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল ওযাকের-উজ-জামান উপস্থিত ছিলেন। সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে নরেন্দ্র মোদি এক মিনিট নীরবতা পালন, জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং মন্তব্য খাতায় অনুভূতি ব্যক্ত করেন। এ ছাড়া সেখানে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে একটি বৃক্ষরোপণ করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।

এরপর তিনি সোজা চলে যান ধানমণ্ডিতে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধা জানান নরেন্দ্র মোদি। নরেন্দ্র মোদি- শেখ হাসিনা ২সেখানে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন। সেখানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে স্বাগত জানান। শনিবার দুপুর ১২টার কিছু পর তিনি ৩২ নম্বরে পৌঁছান। এরপর মোদি বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন। বর্তমানে তিনি বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন করছেন। তাকে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর ঘুরিয়ে দেখাচ্ছেন বঙ্গবন্ধুর ছোট মেয়ে শেখ রেহেনার ছেলে রেদওয়ান সিদ্দিক ববি।

ধানমণ্ডি ৩২ নম্বর থেকে নরেন্দ্র মোদি তার বহর নিয়ে কাওরানবাজারের প্যান প্যাসিফিক হোটেল সোনারগাঁওয়ে যান। সেখানে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে বিকেলে শুরু হচ্ছে আনুষ্ঠানিক কর্মসূচি। বেলা পৌনে ৪টায় নরেন্দ্র মোদি যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে। সেখানে তাকে অভ্যর্থনা জানাবেন শেখ হাসিনা। এরপর শুরু হবে দুই দেশের সম্পর্ক উন্নয়নে দ্বিপাক্ষিক কার্যক্রম।

নরেন্দ্র মোদি- শেখ হাসিনা ৩এর আগে বাংলাদেশর পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক নতুন মাত্রায় উন্নীত হয়েছে। ২০১০ সালে তার ভারত সফর এবং ২০১১ সালে ভারতের তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রীর ফিরতি বাংলাদেশ সফরের মাধ্যমে এ সম্পর্ক আরও সুসংহত হয়। এর ফলশ্রুতিতে দু’দেশের মধ্যে পণ্য বাণিজ্য ক্রমেই বাড়ছে। বাংলাদেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নে ভারতের সহযোগিতার মাত্রা সম্প্রসারিত হয়েছে। এ ছাড়া দেশের বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করা হচ্ছে। উভয় দেশের মধ্যে জনযোগাযোগ বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রীর এই সফর এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে যখন দুই দেশের সম্পর্ক ঐতিহাসিক উচ্চতায় উন্নীত। এই সফরের সময়ে বহুদিনের অমীমাংসিত স্থলসীমানা চুক্তির অনুসমর্থনের দলিল (Instrument of Ratification) বিনিময়সহ দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক বিভিন্ন ইস্যুতে বেশ কয়েকটি চুক্তি বা সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করা হবে। এ চুক্তিসমূহ স্বাক্ষরের ফলে আঞ্চলিক আন্তঃসংযোগ ও ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার হবে।



মন্তব্য চালু নেই