একাদশে ভর্তি কার্যক্রম শুরু ৬ জুন
দেশের সকল সরকারি-বেসরকারি কলেজে একাদশ শ্রেণীতে (উচ্চ মাধ্যমিক) শিক্ষার্থী ভর্তি কার্যক্রম শুরু হবে আগামী ৬ জুন। ভর্তির জন্য মনোনীতদের তালিকা প্রকাশ করা হবে ২৫ জুন। ক্লাস শুরু হবে ১ জুলাই।
সোমবার ‘২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণীতে ভর্তির নীতিমালা-২০১৫’ জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
বিগত কয়েক বছরের মতো এবারও এসএসসির ফলের ভিত্তিতেই একাদশ শ্রেণীতে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে। বিলম্ব ফি ছাড়া ৩০ জুন পর্যন্ত ভর্তি হওয়া যাবে। আর বিলম্ব ফি দিয়ে ২৬ জুলাই পর্যন্ত ভর্তি হতে পারবেন শিক্ষার্থীরা।
ভর্তিতে আগামী ৬ থেকে ১৮ জুন পর্যন্ত টেলিটক মোবাইলের মাধ্যমে এসএমএসে আবেদন করতে হবে। যারা ফল পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন করেছেন তারা ২১ জুন পর্যন্ত এই আবেদন করতে পারবেন।
টেলিটক মোবাইল থেকে এসএমএস করে ১৫০ টাকা জমা দিয়ে অনলাইনে আবেদন করা যাবে। প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য ১২০ টাকা দিয়ে, সর্বোচ্চ পাঁচটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির জন্য পছন্দক্রমে রাখা যাবে।
গত ৩০ মে এসএসসি ও সমমানের ফল প্রকাশিত হয়েছে। এবার গড় পাসের হার ৮৭ দশমিক ০৪ শতাংশ। আট বোর্ডের অধীনে এসএসসিতে পাসের হার ৮৬ দশমিক ৭২ শতাংশ।
নীতিমালায় বলা হয়েছে, এবার মাধ্যমিক উত্তীর্ণ শিক্ষার্থী ছাড়াও ২০১৩ ও ২০১৪ এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণরাও একাদশ শ্রেণীতে ভর্তি হতে পারবেন। সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে অনলাইনে শিক্ষার্থী ভর্তি করাতে হবে।
নীতিমালা অনুযায়ী, মফস্বল/পৌর (উপজেলা) এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সেশন চার্জসহ সর্বসাকল্যে এক হাজার টাকা, পৌর (জেলা সদর) এলাকায় ২ হাজার টাকা এবং ঢাকা ছাড়া অন্য মেট্রোপলিটন এলাকায় ৩ হাজার টাকার বেশি ফি নেওয়া যাবে না।
ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থী ভর্তিতে ৫ হাজার টাকার বেশি নিতে পারবে না। ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় আংশিক এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন ও এমপিও বহির্ভূত শিক্ষকদের বেতনভাতা দেওয়ার জন্য ভর্তির সময় মাসিক বেতন, সেশন চার্জ ও উন্নয়ন ফি বাবদ বাংলা মাধ্যমে ৯ হাজার টাকা এবং ইংরেজি মাধ্যমে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। উন্নয়ন খাতে কোনো প্রতিষ্ঠান ৩ হাজার টাকার বেশি নিতে পারবে না।
কোনো শিক্ষার্থীর কাছ থেকে অনুমোদিত ফির বেশি নেওয়া যাবে না। অতিরিক্ত ফি নিলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে।
নীতিমালায় বলা হয়েছে, কোনো কলেজ চাইলে তাদের প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী ভর্তিতে ন্যূনতম যোগ্যতা নির্ধারণ করতে পারবে। প্রত্যন্ত/অনগ্রসর অঞ্চলের সহশিক্ষার কলেজে ছাত্রীদের জন্য ১০ শতাংশ কোটা সংরক্ষণ করতে হবে। কারিগরি শিক্ষায় ডিপ্লোমা কোর্সে ভর্তিতে ৫০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা এবং জিপিএর ভিত্তিতে বাকি ৫০ নম্বরের আলোকে মেধাক্রম নির্ধারণ করতে হবে।
নীতিমালায় বলা হয়েছে, সাতটি বিভাগীয় সদরের কলেজে ভর্তির ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কলেজের ৯০ শতাংশ আসন সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। অবশিষ্ট ১০ শতাংশ আসনের মধ্যে ৩ শতাংশ সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় সদরের বাইরের এলাকার শিক্ষার্থীদের জন্য, ৫ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা এবং ২ শতাংশ শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও এর অধীনস্ত দফতরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারী এবং স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্দের সদস্যদের সন্তানদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে।
বিভাগীয় শহর ছাড়া জেলা শহরের কলেজেও ৯০ শতাংশ আসন সবার জন্য উন্মুক্ত রাখতে বলেছে মন্ত্রণালয়। বাকি ১০ শতাংশ বিভাগীয় সদরের কলেজের মতো একইভাবে পূরণ করা হবে।
বিজ্ঞান শাখা থেকে উত্তীর্ণরা যে কোনো বিভাগে ভর্তি হতে পারবে। মানবিক শাখা থেকে উত্তীর্ণরা মানবিকের পাশাপাশি ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় ভর্তি হতে পারবে। ব্যবসায় শিক্ষায় শিক্ষার্থীরা ব্যবসায় শিক্ষা ও মানবিক বিভাগে ভর্তি হতে পারবে।
জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে সব বিষয়ের উপর সর্বোচ্চ ৪৮ গ্রেড পয়েন্ট ধরে জিপিএর ভিত্তিতে মেধাক্রম নির্ধারণ করতে হবে। বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তির ক্ষেত্রে সমান জিপিএ প্রাপ্তদের মেধাক্রম নির্ধারণের ক্ষেত্রে সাধারণ গণিত, উচ্চতর গণিত অথবা জীববিজ্ঞানে প্রাপ্ত জিপিএ বিবেচনায় আনা হবে। মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে সমান জিপিএ প্রাপ্তদের ভর্তির ক্ষেত্রে পর্যায়ক্রমে ইংরেজি, গণিত ও বাংলায় অর্জিত গ্রেড পয়েন্ট বিবেচনা করা হবে।
নীতিমালা অনুযায়ী, এক বিভাগের প্রার্থী অন্য বিভাগে ভর্তির ক্ষেত্রে মোট গ্রেড পয়েন্ট একই হলে পর্যায়ক্রমে ইংরেজি, গণিত ও বাংলাবিষয়ে অর্জিত পয়েন্ট বিবেচনায় আনতে হবে। স্কুল ও কলেজ সংযুক্ত প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অগ্রাধিকারভিত্তিতে নিজ প্রতিষ্ঠানে ভর্তির সুযোগ পাবেন।
মন্তব্য চালু নেই