একাত্তরে শহীদ ১৬৬৮ জন ভারতীয় সেনাকে সম্মাননা জানানো হবে যেভাবে
মুক্তিযুদ্ধে নিহত দেড় হাজারেরও বেশি ভারতীয় সেনাকে সম্মাননা জানাতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। আগামী মাসে প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের সময়ই সম্মাননা জানানোর প্রক্রিয়া শুরু হবে। সম্মাননার অংশ হিসেবে বাংলাদেশ সরকার তাদের পরিবারকে যে অর্থ হস্তান্তর করবে তা ভারতীয় মুদ্রায় রূপান্তর করে দেওয়া হবে। বাংলাদেশি টাকাকে ডলারে রূপান্তর করার পর বাংলাদেশ হাই কমিশনের মাধ্যমে তা রুপিতে রূপান্তর করা হবে। আর এর মধ্য দিয়ে নগদ লেনদেনের ক্ষেত্রে কোনও জটিলতা হবে না বলে আশা করছেন মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা জানান তিনি।
উল্লেখ্য, ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে নিহত ভারতীয় সেনাবাহিনীর এক হাজার ৬৬৮ জন সদস্যকে সম্মাননা দেবে বাংলাদেশ সরকার। নিহতদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তাদের প্রত্যেকের পরিবারকে ৫ লাখ ভারতীয় রুপি করে দেওয়া হবে। ভারতীয় শহীদ পরিবারের উত্তরাধিকারীদের বাংলাদেশে আসার প্রয়োজন হবে না। প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং ভারতে গিয়ে তাদের সম্মাননা জানাবেন। অর্থ হস্তান্তরের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৮-২০ ডিসেম্বর ভারতে অবস্থান করবেন।
অর্থ হস্তান্তরের প্রক্রিয়া নিয়ে বলতে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী দ্য হিন্দুকে বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশি টাকাকে ডলারে রূপান্তরিত করবো (১,৬৬৮ জন ভারতীয় শহীদের জন্য প্রায় ১শ কোটি ভারতীয় রুপি বরাদ্দ করা হয়েছে) এবং সেগুলো দিল্লিতে আমাদের হাই কমিশনে জমা দেবো। তারা সেগুলোকে ভারতীয় মুদ্রায় রূপান্তরিত করবে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তা ভারতীয় শহীদদের পরিবারের হাতে তুলে দেবেন। শিগগিরই এ ইস্যুটির সুরাহা করা হবে এবং ওই পরিমাণ টাকা ব্যাংকে জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা হবে না।’
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতীয় শহীদ পরিবারগুলোর হাতে একটি করে বাংলা, ইংরেজী ও হিন্দিতে লেখা কৃতজ্ঞতাপত্র এবং ক্রেস্ট তুলে দেবেন। ওই ভারতীয় শহীদদের অবদান নিয়ে একটি বইও প্রকাশ হবে বলে হিন্দুকে জানান মোজাম্মেল হক।
তিনি আরও জানান, ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে জীবন দেওয়া ভারতীয় সেনাদের স্মরণে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় একটি যুদ্ধস্মৃতি ফলক তৈরি করা হবে।
নগদ অর্থ লেনদেনের ক্ষেত্রে সমস্যা হবে না বলে আশা জানিয়ে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী বলেন ‘নগদীকরণের ক্ষেত্রে সমস্যা হবে না। আমি ঢাকায় ভারতীয় হাই কমিশনারের সঙ্গে আলাপ করেছি।’
দ্য হিন্দুর প্রতিবেদনে বলা হয়, মুক্তিযুদ্ধে কোন কোন ভারতীয় সেনা শহীদ হয়েছিলেন তা শনাক্ত করতে কাজী সাজ্জাদ আলী জহির নামে এক অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল ভারতীয় সেনাবাহিনীর সঙ্গে কাজ করেছেন। ২০১৫ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের সময় যৌথ ঘোষণা এ সম্মাননা প্রদানের ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছিল।
মন্তব্য চালু নেই