এই ছবিটি নিয়েই চলছে তোলপাড়

আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত ভারতের বেঙ্গল নাগপুর রেলওয়ে (বিএনআর) দলের বিদেশি ফুটবলারের এই ছবিটি নিয়ে তোলপাড় চলছে।

ছবিটি প্রকাশিত হয়েছে বুধবারের আনন্দবাজার-এ। প্রকাশিত ওই ছবিতে জেমস নামের নাইজিরিয়ান ফুটবলারের অঙ্গভঙ্গিকে অত্যন্ত অশালীন দাবি করে ভারতের ক্রীড়াঙ্গনে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। তীব্র ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন ক্রীড়া অনুরাগীরা। ভারতের নারী রেফারির সামনে জেমসের আচরণকে তারা কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না।

ভারতের সফল কোচ হিসেবে পরিচিত প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় ওই বিদেশি ফুটবলারকে গ্রেফতারের দাবি তুলেছেন। তিনি বলেন, ‘ও যা করেছে সেটা তো ধর্ষণের হুমকির মতোই। সব মেয়ের অপমান।’

আরেক কোচ অমল দত্ত বলেন, ‘ওকে অভিবাসন দফতর এখনই গ্রেফতার করে দেশ থেকে বার করে দিক।’ কোচ সুব্রত ভট্টাচার্য বলেন, ‘কোথা থেকে এই বিদেশিরা আসে কে জানে। ধর্ষণ, ড্রাগসহ নানা অসামাজিক কাজে এরা জড়িয়ে পড়ছে বারবার। মেয়েদের সম্মান করতে জানে না। জেমস যা করেছে তা অমার্জনীয় অপরাধ।’

অভিযুক্ত ফুটবলার যে দলের সেই বিএনআরের প্রাক্তন স্পোর্টস অফিসার ও বিখ্যাত প্রাক্তন ডিফেন্ডার অরুণ ঘোষও হতবাক। তিনি বলেন, ‘লজ্জা হচ্ছে রেল টিমের একজন ফুটবলারের আচরণ দেখে। আমাদের অফিসের উচিত ওর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া।’

উল্লেখ্য, ‘মঙ্গলবার কলকাতা লিগে মোহনবাগান-বিএনআর ম্যাচে পেনাল্টির সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়ে রেফারি কণিকা বর্মণের দিকে তেড়ে যান এন্ডুরেন্স জেমস। নারী রেফারি দেখেও ন্যক্কারজনক আচরণ করেন। সেই ছবি আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ার পরই শুরু হয় তোলপাড়।

একজন নারী রেফারির প্রতি একজন ফুটবলারের বিশ্রী আচরণ হিসেবে এই ঘটনাকে দেখতে নারাজ তারা। বরং সামগ্রিকভাবে মেয়েদের হেনস্তার শিকার হিসাবেই দেখছেন সবাই।

অভিজ্ঞ ফুটবলার ও কোচ কুন্তলা ঘোষ দস্তিদার বলেন, ‘একজন নারী রেফারি কড়া হাতে ছেলেদের বড় ম্যাচ খেলাচ্ছেন দেখে যেমন গর্ব হচ্ছে, তেমনই ভয়ও লাগছে।’

নারী ক্রীড়াবিদ তিরন্দাজ দোলা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘মাঠের মধ্যেই সবার সামনে একজন পুরুষ কণিকার সঙ্গে এ রকম দৃষ্টিকটু আচরণ করছে দেখে অবাক হচ্ছি। এরা বাইরে কী করতে পারে ভেবে ভয় হচ্ছে।’

প্রকাশিত ছবি দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্যের মহিলা কমিশন। কমিশনের চেয়ারপারসন সুনন্দা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘নতুন আইনে যা আছে তাতে মেয়েদের উদ্দেশ করে খারাপ কথা বা বিসদৃশ আচরণ কিন্তু হেনস্তার পর্যায়ে পড়ে। যা অপরাধ হিসাবে গণ্য হবে। রেফারি কণিকার সঙ্গে ওই ফুটবলারের যে ছবি দেখেছি তা কিন্তু অপরাধের মধ্যেই পড়ে।’

যাকে নিয়ে এত ঝড়, সেই রেফারি কণিকা কিন্তু অভিযোগ তোলেননি। এমনকি জেমসের মঙ্গলবারের আচরণের কথা নিজের রিপোর্টেও লেখেননি কণিকা। কণিকা  বলেছেন, জেমস পেটের দিকে আঙুল দেখাচ্ছে বলে কিছু করিনি।

তথ্যসূত্র : ইন্টারনেট।



মন্তব্য চালু নেই