এই খবর পড়লে নাড়িয়ে দেবে আপনার অন্তর!

ছোটবেলায় স্কুলে গিয়েছেন নিশ্চয়। আপনাদের অনেকেই হয়তো কষ্ট করে পড়াশোনা করেছেন। পড়াশোনা করে জীবনে আজকে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। চলুন না, এক অনবদ্য সংগ্রামের শরিক হই, যা নাড়িয়ে দেবে আপনার অন্তর!

রক ক্লাইম্বিং চলছে? রক ক্লাইম্বিং যারা করছে, তাদের কারো বয়স চার, কারো পাঁচ, আবার কারো বড়জোর ছয় কী সাত হবে!

না, এরা কেউ পর্বতারোহনের প্রশিক্ষণ নিচ্ছে না। শুনলে গা শি‌উরে উঠবে। এরা সবাই প্রাইমারি স্কুলে যাচ্ছে!

লেখার ভুল নয়। প্রাইমারি স্কুলেই। চীনের আতুলের গ্রামের বাচ্চারা আজও এভাবেই খাড়া পাহাড় বেয়ে, জীবন বাজি রেখে স্কুলে যায় পড়াশোনা করতে। সম্প্রতি ‘দ্য সান’-এ প্রকাশিত হয়েছে একটি প্রতিবেদন। তাতে তুলে ধরা হয়েছে এ গ্রামের শিশুদের পড়াশোনার হালহকিকত।

খাড়া পাহাড়ের নিচে অবস্থিত গ্রাম। আর স্কুল? ২,৬২৪ ফুট উঁচু এই খাড়া পাহাড়ের মাথায়। কী বেয়ে ছাত্রছাত্রীরা ওঠে? প্রকৃতিই যেন সেই ব্যবস্থা করে দিয়েছে তাদের।

খাড়া পাহাড়ের গায়ে গাছের শিকড় গজিয়েছে। সেই শিকড় দিয়েই প্রাকৃতিকভাবে তৈরি হয়েছে মই। এই মই বেয়ে পড়ুয়ারা যায় স্কুলে।

আবার নেমেও আসে একই পথ ধরে। কয়েকটি জায়গায় গ্রামবাসীরা নিজেদের উদ্যোগেই করে নিয়েছেন লোহা এবং গাছের ডাল দিয়ে মই।

এসব দিয়ে মই থাকলেও যাত্রাপথের খুব কম জায়গাতেই রয়েছে। প্রায় পুরোটাই গাছের শিকড় আঁকড়ে আরোহন এবং অবতরণের ব্যাপার।

চীনের ঝাওজুয়ে প্রদেশের এই গ্রামটিতে ৭২টি পরিবারের বাস। পড়ুয়ারা একবার খাড়া পাহাড় বেয়ে উপরে উঠলে দু’সপ্তাহ স্কুলে থাকে।

দু’সপ্তাহ পরে নেমে আসে গ্রামে। পাহাড় বেয়ে স্কুলে পৌঁছতে এদের গড়ে লাগে দু’ঘণ্টা করে। এবারে ভাবুন, বৃষ্টি বা বরফ পড়লে এ রাস্তার কী হাল হতে পারে! এ পর্যন্ত অন্তত ৮টি শিশু মারা গেছে স্কুলে যাওয়ার পথে।

এই পথের ভয়ে আজকাল অনেক অভিভাবক সন্তানদের স্কুলেই পাঠাচ্ছেন না। কেন কোনো ব্যবস্থা করা যাচ্ছে না?

প্রশাসনের বক্তব্য, গ্রামটি সরিয়ে অন্যত্র নিয়ে যাওয়াই যায়। কিন্তু সে ক্ষেত্রে কৃষি থেকে যে পরিমাণ আয় এই গ্রামের পরিবারগুলো করছে তা কমে যাবে।

কেননা, শহুরে এলাকার ধারেকাছে চাকরির সুযোগ কম। গ্রামবাসীরাও আগ্রহী নন বলে দাবি প্রশাসনের। আবার গ্রাম থেকে স্কুল পর্যন্ত রাস্তা তৈরি করতে যে পরিমাণ অর্থ খরচ হবে তা প্রশাসন করতে নারাজ।

প্রশাসনের যুক্তি, হাতেগোনা কয়েকজন লোকের জন্য এত বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচ একেবারেই অর্থহীন।
আর প্রশাসন এবং গ্রামবাসীদের এই টানাপোড়েনে শিক্ষার শিকড়ে ঝুলছে শিশুদের প্রাণ।



মন্তব্য চালু নেই