উন্নত বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তি এখনো আমাদের নয়!

নিউ মেক্সিকোর রজওয়েলে অজানা উড়ন্ত বস্তু বিধ্বস্তের পর কেটে গেছে বহু বছর। এখনও সেই ঘটনা নিয়ে রহস্যের অবসান ঘটেনি। ১৯৪৭ সালের ৮ জুলাই মরুভূমিতে ঘটে যাওয়া সেই ঘটনার কথা অবশ্য বরাবরই অস্বীকার করে এসেছে মার্কিন সরকার। তবে বিতর্ক এখনও মিলিয়ে যায়নি। বরং সময়ের সাথে সাথে তা আরো জোরালো হচ্ছে।

অনেক ইউএফও বিশেষজ্ঞ এবং সাধারণ জনগণ মনে করেন যে, সেটি ছিল ভিনগ্রহের মহাকাশযান, যা বিধ্বস্ত হওয়ার পরে মার্কিন সেনাবাহিনী উদ্ধার করে তা লুকিয়ে ফেলে। তবে সেখানে থাকা বেশ ক’জন প্রত্যক্ষদর্শী পরে মুখ খুলেছিলেন। জানিয়েছিলেন, মার্কিন সরকার যতোই সেটাকে নিজেদের যান বলে দাবি করুক না কেন আসলে তা সত্য নয়। সেদিন যে যানটিকে পাওয়া গিয়েছিল তা ছিল ভিনগ্রহের।

শেষ জীবনে এসে মার্কিন গোয়েন্দা দপ্তরের এক উর্ধ্বতন কর্মকর্তাও মুখ খুলেছিলেন। কর্নেল ফিলিপ করসো নামের ওই কর্মকর্তা সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট আইজেনহাওয়ারের সময়েও গোয়েন্দা দপ্তরের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন। প্রেসিডেন্টের নিরাপত্তা কাউন্সিলে দায়িত্ব পালন করায় বেশ কিছু গোপন বিষয়ও তার সামনে চলে আসে। সে সময় জাতীয় স্বার্থে মুখ না খুললেও শেষ জীবনে কিছু বিষয়ে জানানো দরকার বলেই মনে করেন তিনি। এই বিষয়ে তিনি একটি বই পর্যন্ত লেখেন।

‘দি ডে আফটার রজওয়েল’ নামের ওই বইটি ১৯৯৭ সালে প্রকাশ পায়। নিউ মেক্সিকোর ঘটনা নিয়ে মানুষের মনে কী আগ্রহ সেবারই তা বোঝা যায়। দি নিউইয়র্ক টাইমসের হিসাবে কয়েক সপ্তাহ ধরেই বইটি ছিল বিক্রির তালিকার শীর্ষে। প্রকাশের পরপরই অবশ্য তিনি নানা চাপের মুখে পড়েন। বই প্রকাশের পরের বছর ৮৩ বছর বয়সে তার মৃত্যু হয়।

তবে মৃত্যুর আগে এক সাক্ষাৎকারে কর্নেল ফিলিপ দাবি করেন, তথ্য প্রযুক্তিতে আজকের বিজ্ঞান অনেক এগিয়ে গেলেও অনেক বিষয়েই আমরা এখনও অগ্রসর হতে পারিনি। যাও বা অগ্রগতির দাবি করা হয়, তাও খুব চমকপ্রদ নয়।

বিশেষ সেই সাক্ষাৎকারে বৈজ্ঞানিক উৎকর্ষের বিষয়টি কেনো তুলেছিলেন তার ব্যাখ্যা দেন তিনি, যা উড়িয়ে দেওয়া সত্যিই কঠিন। রজওয়েলে সেদিনের ঘটনার সাক্ষী ফিলিপও ছিলেন। আর সেদিনের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তিনি বলেন, দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছে তিনি যা দেখেন তা এই ভুবনের নয়। ধ্বংসস্তূপের ভেতরে মৃতদেহও তিনি দেখতে পান। ভালো করে দেখতে তিনি সেটার কাছে যান।

কর্নেল ফিলিপ বলেন, মরদেহটি মানুষের মতো হলেও তার চেহারা স্বাভাবিক ছিল না। তার মতে সেই দেহে দুটো চোখ থাকলেও তাতে ছিল না কোনো মুখ কিংবা নাক। অবশ্য ভালো করে দেখার আগেই সেনাবাহিনীর সদস্যরা তা ঢেকে ফেলে।

আগামী প্রজন্মের কাছে সত্যটা জানিয়ে দিতে তিনি আরও বেশকিছু বিষয়ে আলোকপাত করেন। যার মধ্যে অন্যতম ছিল এলিয়েন প্রযুক্তি। প্রয়াত কর্নেল দাবি করেছিলেন, সেদিন বিধ্বস্ত মহাকাশযানটিকে পরীক্ষার জন্য গোপন স্থানে নিয়ে যায় মার্কিন সরকার। কেননা সেটিতে এমন প্রযুক্তি ছিল যা তৎকালীন সময়ে ছিল মাখা ঘুরিয়ে দেওয়ার মতো, যা একমাত্র কল্পবিজ্ঞানেই থাকা সম্ভব।

সাধারণ মানুষের জানার আগে তাই এসব প্রযুক্তি পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। এছাড়া শক্তিমান শত্রুরাষ্ট্রের কাছেও সেসব প্রযুক্তির খবর চলে যাওয়ার আশঙ্কা ছিল।

সাক্ষাৎকারে ফিলিপ করসো জানান, সার্কিট চিপের আবিষ্কারের যে দাবি বিজ্ঞানীরা করে থাকেন তা আসলে মিথ্যে। এই প্রযুক্তির সন্ধান মিলেছিল সেই দিন! অর্থাৎ রজওয়েল ঘটনার পর অনেক আধুনিক বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তি সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে চলে আসে। অবশ্য সব নয়!

সাক্ষাৎকারে সে সময় কর্নেল ফিলিপ জানিয়েছিলেন, সার্কিট চিপ ছাড়াও সেবার বিধ্বংসী লেজার প্রযুক্তির মতো আরও বেশ কিছু কল্পনাতীত প্রযুক্তির সন্ধান পান মার্কিন বিজ্ঞানীরা, যার মধ্যে তারবিহীন যোগাযোগ ব্যবস্থাও রয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই