উত্তর ভারতে ৮০ ফুট লম্বা মানুষের কঙ্কাল! গুজব না সত্যি নিজেই জেনে নিন…

বেশ কিছুদিন ধরেই ইন্টারনেটে ভাইরাল হয়ে উঠেছে এই ছবি। যেখানে দেখা যাচ্ছে একটি দৈত্যাকার কঙ্কালের সামনে দু’জন বসে রয়েছে। উত্তর ভারতে এই কঙ্কালটি পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, এই কঙ্কালের সঙ্গে মহাভারতের চরিত্র ভীমের ছেলে ঘটোৎকচের বর্ণনার মিল আছে।

ভারতের বুকে ৮০ ফুট লম্বা এক কঙ্কাল! ইন্টারনেটে ঘুরে বেড়ানো এই ছবি এখন তোলপাড় ফেলে দিয়েছে। তার মধ্যে আন্তর্জাতিক এক চ্যানেল এই ধারণা উসকে দিয়েছে, যে মহাভারতের চরিত্র ভীম-এর ছেলে ঘটোৎকচের বর্ণনার সঙ্গে নাকি মিল আছে এই দৈত্যাকার কঙ্কালের। ফলে এই কঙ্কালের ছবি আরও ভাইরাল হয়ে উঠেছে।
রহস্য ফাঁসের দাবি করেছে হোয়াক্সঅরফ্যাক্ট নামের একটি ওয়েবসাইট। তাঁদের দাবি, তাঁদের ‘ফোটোশপ’ প্রতিযোগিতায় এই দৈত্যাকার কঙ্কালের ছবিটি এসেছিল। তিনবার ভিন্ন ভিন্নভাবে ছবিগুলি এসেছে। ওয়েবসাইটির দাবি, তাঁদের বিশেষজ্ঞরাও এই কঙ্কালের ছবি পরীক্ষা করে দেখেছেন। তাতে পরিষ্কার এই ছবিগুলি ‘ফোটোশপ’ করা। এমনকী, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন একটি টেলিভিশন চ্যানেল ছবিটিকে উত্তর ভারতে পাওয়া দৈত্যাকার কঙ্কালের বলে দাবি করছে, তাও ওই ওয়েবসাইটির ‘ফোটোশপ’ প্রতিযোগিতায় পাঠানো হয়েছিল।

image (13)

 

দৈত্যাকার কঙ্কালের যে তিনটি ফোটোশপ করা ছবি প্রতিযোগিতায় পাঠানো হয়েছিল, তারমধ্যে একটি ছবি।

সবশেষে হোয়াক্সঅরফ্যাক্ট নামে ওই ওয়েবসাইটির দাবি, দৈত্যাকার কঙ্কাল বলে যে ছবিটি ফোটোশপ করা হয়েছে, তার মূল উৎস ‘ক্যালামিটা কসমিকা’ বা ‘কসমিক ম্যাগনেট’ নামে একটি ছবি।
১৯৯০ সালে জিনো ডে ডমিনিকস বলে এক শিল্পী ২৮ মিটার লম্বা এবং ৮ টন ওজনের একটি কঙ্কাল তৈরি করেছিলেন। যার নাম দিয়েছিলেন ‘ক্যালামিটা কসমিকা’ বা ‘কসমিক ম্যাগনেট’। ওই বছরই ফ্রান্সের গ্রেনোবলে সেন্টার ন্যাশনাল ডে-আর্ট কম্পিটিশনে এই দৈত্যাকার কঙ্কালটির প্রদর্শনী করেছিলেন ডমিনিকস।

image (11)

image (12)

 

‘ক্যালামিটা কসমিকা’ বা ‘কসমিক ম্যাগনেট’, শিল্পী— জিনো ডে ডমিনিকস

image (10)

এর পরে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে এই কঙ্কালটির প্রদর্শনী হয়। রোমের সেকোলো মডার্ন আর্ট মিউজিয়ামে রাখা হয়েছিল এই কঙ্কালটিকে। সেই কঙ্কালের ছবি থেকেই ‘ফোটোশপ’ করে উত্তর ভারতে দৈত্যাকার ৮০ ফুট লম্বা কঙ্কালের গল্প ফাঁদা হয়েছে বলে দাবি করেছে হোয়াক্সঅরফ্যাক্ট নামে ওই ওয়েবসাইটি। এমনকী, উত্তর ভারতে যদি ওই দৈত্যাকার কঙ্কাল পাওয়া যায়, তা হলে তার নিবন্ধীকরণ কেন স্থানীয় প্রশাসনের কাছে নেই তার কোনও উত্তর এখনও পাওয়া যায়নি।



মন্তব্য চালু নেই