উখিয়ায় ডিবি ও মানবপাচারকারী বন্দুক যুদ্ধ : নিহত-১

কক্সবাজারের উখিয়ার উপকূলীয় জালিয়াপালং ইউনিয়নের মোনাফ মার্কেট এলাকায় ডিবি পুলিশ ও মানবপাচারকারীর মধ্যে বন্দুক যুদ্ধের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল রোববার ভোর ৫ টার দিকে একদল মানবপাচারকারীর সাথে কক্সবাজার গোয়েন্দা পুলিশের মধ্যে বন্দুক যুদ্ধের ঘটনায় জাফর আলম (৩৫) নামের তালিকাভুক্ত একজন মানবপাচারকারী নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

কক্সবাজার গোয়েন্দা পুলিশের সুত্রে জানা গেছে রোববার ভোরে উখিয়ার জালিয়াপালং ইউনিয়নের পশ্চিম সোনারপাড়ার মোনাফ মার্কেট সংলগ্ন এলাকায় মানবপাচারকারীদের গোপন বৈঠক চলাকালে কক্সবাজার গোয়েন্দা পুলিশের ওসি দেওয়ান আবুল হোসেনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ হানা দেয়। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মানব পাচারকারীরা গুলি ছুটে। পুলিশ ও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি বর্ষণ করে বলে ডিবি পুলিশের ওসি জানান। তিনি বলেন, অন্যান্য পাচারকারীরা পালিয়ে গেলে গুরুতর আহত অবস্থায় জাফর আলমকে উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

উখিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার জসিম উদ্দিন মজুমদার বলেন, তালিকাভূক্ত ও একাধিক মামলার আসামী মানবপাচারকারী পশ্চিম সোনারপাড়ার জহির আহমদের ছেলে জাফর আলম (৩৫) প্রকাশ লেইট্যা মাঝি দীর্ঘদিন পলাতক থেকে সমূদ্র পথে মানবপাচার চালিয়ে আসছে। এসময় ডিবি পুলিশের সদস্য সোহেল ও আনসার সদস্য মনির আহত হয়। ঘটনাস্থল থেকে ডিবি পুলিশ ৫ রাউন্ড তাজা কার্তুজ ও একটি দেশীয় তৈরি এলজি উদ্ধার করে।

উলে-খ্য সম্প্রতি মালয়েশিয়া সীমান্ত থাইল্যান্ড জঙ্গলে একাধিক গণকবরের সন্ধান এবং প্রায় ২ শতাধিক বাংলাদেশী ও মিয়ানমার নাগরিককে জীবিত উদ্ধার করার ঘটনায় বিশ্বব্যাপী তোলপাড় সৃষ্টি হয়। মানবপাচার ঘটনায় থাইল্যান্ড সরকার ইতি মধ্যে সে দেশের জন প্রতিনিধি ও পুলিশের একাধিক উর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে আইনের আওতায় আনার ঘটনায় বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া, মিয়ানমার ও থাইল্যান্ড জুড়ে মানবপাচারের সাথে সংশি¬ষ্টদের আইনের আওতায় আনতে ব্যাপাক তোড়জোড় সৃষ্টি হয়।

বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে মানবপাচারের ঘটনাকে জিরো ট্রলারেন্স হিসেবে ধরে ব্যাপক অভিযান শুরু করেছে। অভিযানের অংশ হিসেবে গত বৃহস্পতিবার টেকনাফ উপকূলে পুলিশের সাথে বন্দুক যুদ্ধের ঘটনায় ৩ শীর্ষ মানবপাচারকারী নিহত হয় এবং গতকাল ভোরে উখিয়া উপকূলে গোয়েন্দা পুলিশের সাথে মানবপাচারকারীদের বন্দুক যুদ্ধের ঘটনায় একজন মানবপাচারকারী মারা যায়।

এসব ঘটনার প্রেক্ষিতে পুলিশ সহ আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যাপক অভিযানের ফলে উখিয়া ও টেকনাফে কয়েক শতাধিক শীর্ষ মানবপাচারকারী ও দালাল গা ঢাকা দিয়ে আত্মগোপনে রয়েছে। নিহত জাফর আলমের পিতা জহির আহমদ (৭০) ও স্ত্রী ৫ সন্তানের জননী আরেফা বেগম ও ছেলে মেয়েদের আর্তনাদে এলাকার পরিবেশ ভারী হয়ে উঠেছে। তাদের দাবী মানবপাচারকারী গডফাদারদের ইন্দনে নিরীহ বোটের মাঝি জাফরকে ক্রস ফায়ারে নির্মম ভাবে হত্যা করা হয়েছে।

স্থানীয় জালিয়াপালং ইউপি সদস্য আবু তাহের বলেন, যে ভাবে জাফর মাঝিকে মানবপাচারকারী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে সে এ ধরণের নয়। অন্যজনের ফিশিং বোটের মাঝি হিসেবে দিন মজুরী করে সে সংসার চালিয়ে আসছে।



মন্তব্য চালু নেই