উখিয়া, কক্সবাজারের কিছু খবর

উখিয়ায় ডজনখানেক যুবকরা ইয়াবা ব্যবসায় জড়িত : প্রশাসন নিরব

কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলা জুড়ে ডজন খানেক যুবকরা ইয়াবা ব্যবসা করে লাখপতি হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত কয়েক বছর ধরে প্রশাসনের আড়ালে ইয়াবা ব্যবসা করে আসছে উখিয়া সদরে কিছু ইয়াবা ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে রাতারাতি কোটি কোটি টাকার মালিক বনেছে।

ইয়াবা এখন সহজলভ্য হয়ে উঠেছে উপজেলা জুড়ে। যেন হাত বাড়ালেই যেখানে-সেখানে পাওয়া যাচ্ছে এ মরণ ঘাতক ট্যাবলেট ইয়াবা। ফলে দিন দিন আসক্ত হয়ে বিপথগামী হচ্ছে উঠতি বয়সী তরুণ যুবকরা। বিশেষ করে ঘিলাতলী, ফলিয়াপাড়া, মৌলভীপাড়া, মহিলা কলেজ, হিজলিয়া, মালভিটাপাড়া, সিকদারবিল, ফরেষ্ট অফিস, হাজিরপাড়া কেন্দ্রীক একটি ইয়াবা চোরাচালানীর সিন্ডিকেট খোলা বাজারে ইয়াবা সরবরাহ করে নেশা আসক্তের সংখ্যা বাড়াচ্ছে প্রতিনিয়ত।

বলতে গেলে এখন উখিয়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ছদ্মা বেশে মুখোশধারী চিহ্নিত কিছু তরুণ যুবকরা ইয়াবা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এখন ঘরে ঘরে পাওয়া যাচ্ছে ইয়াবা ট্যাবলেট। ইয়াবার এ সহজলভ্যতার কারণে ছাত্র ও যুবসমাজকে নিয়ে প্রায় উদ্বিগ্ন তাদের পরিবার পরিজন। কারণ যে কোন মুহুর্তে তাদের ছেলে-মেয়েদের মাঝে ইয়াবার সংক্রমক নামক এ বিষে আক্রান্ত হওয়ার ভয়ে এলাকার সাধারন মানুষ রয়েছে চরম আতংকে প্রতিনিয়ত।

স্থানীয় মাদক প্রতিরোধ কমিটির একাধিক সদস্যরা জানান, সীমান্তের ইয়াবা তৈরীর কারখানা গুলো থেকে উৎপাদন বন্ধ না হলে এবং দু’দেশের সীমান্ত প্রহরীদের ফাঁকি দিয়ে ইয়াবা প্রবেশ বন্ধ না হলে কোন দিনও এ কালো থাবা থেকে সমাজে তরুণ যুবকরা রক্ষা পাবে না। দেশে সুশিক্ষিত ও আদর্শ জাতি গঠনে মাদক নির্মুল করা সরকার সংশ্লিষ্টদের অত্যবশ্যকীয় জরুরী হয়ে পড়েছে।

উখিয়ার সচেতন নাগরিকদের মতে, এলাকায় চোরাচালানীরা নীরবে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে অনেকটা ভালো মানুষ সেজে বর্তমানে ঘরে ঘরে ইয়াবার মজুদ বৃদ্ধি করছে। আবার সুযোগ বুঝে সেগুলো জেলা সদর থেকে শুরু করে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করে দিয়ে থাকে। যার ফলে ইয়াবার করাল গ্রাসে তলিয়ে যাচ্ছে উখিয়ার যুব ও ছাত্রসমাজ।

একটি সূত্রে যাদের নাম পাওয়া গেছে তাদের মধ্যে মহিলা কলেজের মৃত মোঃ আলীর ছেলে খোরশেদ আলম, মৌলভীপাড়ার ছৈয়দ আকবরের ছেলে মোঃ আব্বু, একই এলাকার মৃত রায়হান মুন্সির ছেলে মামুন, হাজিরপাড়ার ছৈয়দ আহমদের ছেলে জামাল, কালা জসিম, কামাল, পুতু ওরফে পুতিয়া, হিজলিয়া গ্রামের ঠান্ডু মিয়ার ছেলে সাইফুল ইসলাম, মালভিটাপাড়ার আলী চানের ছেলে মোঃ হানিফ, নূরুল আলম ওরফে গাঁজা নুরু, সিকদার বিল এলাকার জয়নাল, ফলিয়াপাড়া এলাকার মোঃ আলী, ফরেষ্ট অফিস এলাকার গফুর ও নাছির উদ্দিনসহ একাধিক যুবকেরা মরণ নেশা ইয়াবা ব্যবসায় জড়িত রয়েছে বলে একটি সূত্রে জানা গেছে।

উখিয়ার কিছু অসাধু ব্যবসায়ীরা এখন কৌশল পাল্টিয়ে ঘরে ঘরে ইয়াবার মজুদ গড়ে তুলেছে। যা পাচারের অপেক্ষায় রয়েছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগে জানা গেছে। এছাড়াও এসব চোরাচালানীর সাথে থানা পুলিশের সাথে অলিখিত চুক্তি রয়েছে বলেও স্থানীয় কিছু গন্যমান্য ব্যক্তিরা মনে করেন।

উখিয়া বাজার ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন ও আব্দুর রহমান বলেন, ইয়াবার প্রচলন দীর্ঘদিনের হলেও সাম্প্রতিক সময়ে এলাকার চি˝িত যুবকেরা কোটিপতি হওয়ার আশায় ঘরে ঘরে এ ব্যবসা গড়ে তুলেছে। এতে হাত বাড়ালেই পাওয়া যাচ্ছে মরণ ঘাতক ইয়াবা।
উখিয়া থানার ওসি জহিরুল ইসলাম খান বলেন, পুলিশ মাদক প্রতিরোধে তৎপরতা আগের চেয়ে বৃদ্ধি রয়েছে। প্রতিনিয়ত কোথাও না কোথাও ইয়াবার চালান আইন শৃংখলা বাহিনীর হাতে ধরা পড়ছে। এতে মামলা ও হচ্ছে আটককৃতরা জেলে যাচ্ছে।

তবে উখিয়া উপজেলাকে মাদক মুক্ত উপজেলায় পরিণত করার তার একার পক্ষের সম্ভব নয়, তবে উখিয়া উপজেলা সাধারণ মানুষরা যদি প্রশাসনকে সহযোগিতা করে তাহলে উপজেলা জুড়ে মাদক মুক্ত সমাজ গড়ে তুলা সম্ভব বলে তিনি মনে করেন।

 

নাশকতা প্রতিরোধ কমিটির সভায় নেতৃবৃন্দরা
উখিয়ার পাড়া মহল্লায় নাশকতা প্রতিরোধ কমিটি গড়ে তুলুন
কক্সবাজারের উখিয়ার কোটবাজার স্টেশন চত্বরে আয়োজিত কক্সবাজার জেলা নাশকতা প্রতিরোধ কমিটির সভায় বক্তারা বলেছেন, ২০ দলীয় জোটের চলমান অবরোধ, হরতালের নামে নাশকতা প্রতিরোধ করতে হলে প্রতিটি পাড়া মহল্লায় যুব সমাজের সমন্বয়ে নাশকতা প্রতিরোধ কমিটি গড়ে তুলতে হবে।

রত্নাপালং ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি আছহাব উদ্দিন মেম্বারের সভাপতিত্বে গতকাল সোমবার সকাল ১০ টায় অনুষ্ঠিত প্রতিরোধ কমিটির সভায় বক্তারা আরো বলেন, জামায়াত-বিএনপি’র ছুড়া পেট্রোল বোমা আঘাতে ক্ষতবিক্ষত নারী-পুরুষ শিশুর আহাজারিতে বার্ন ইউনিটের পরিবেশ ভারী হয়ে উঠেছে। তাই বৃহত্তর জনসাধারণের জানমালের নিরাপত্তার প্রেক্ষিতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ২০ দলীয় জোটের সহিংস কর্মকান্ড প্রতিরোধ করতে হবে।

সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমদ চৌধুরী, বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, জেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক সালাহ উদ্দিন আহমদ সিআইপি, জেলা আ’লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় কৃষকলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম, জেলা আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহাবুবুল হক মুকুল, শহর আ’লীগের সভাপতি মুজিব চেয়ারম্যান, চকিরয়া উপজেলা চেয়ারম্যান জাফর আলম, আ’লীগ নেতা রাশেদুল ইসলাম, উখিয়া উপজেলা আ’লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী, সাবেক সভাপতি আদিল উদ্দিন চৌধুরী, আ’লীগ নেতা ও সাবেক উখিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান মাহমুদুল হক চৌধুরী, উখিয়া উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মুজিবুল হক আজাদ, সাধারণ সম্পাদক ইমাম হোসেন, ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছৈয়দ মোহাম্মদ নোমান। সভা সঞ্চলনা করেছেন রত্নাপালং ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক আলমগীর।

 

অবরোধে বিপর্যস্ত অটোরিক্সা, ভটভটি-সিএনজি চালকরা
কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কসহ বিভিন্ন আঞ্চলিক সড়ক ও উপ-সড়কে চলাচলরত হাজারো অটোরিক্সা, ভটভটি-সিএনজি চালকরা অবরোধের গ্যাড়কলে পড়ে হয়রানি শিকার হচ্ছে। ২০ দলীয় জোটের লাগাতার সহিংস কর্মসূচীর কারণে সংশি¬ষ্ট চালকেরা ছোটখাট যানবাহন চালাতে ব্যর্থ হওয়ায় অনেকইে গাড়ী ক্রয় বাবদ ঋণের টাকা পরিশোধ করতে পারছে না। পাশাপাশি তাদেরকে পরিবার পরিজন নিয়ে অভাব অনটনে দূঃসহ জীবন যাপন করতে হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

জানা গেছে, কক্সবাজার-টেকনাফ সড়ক ছাড়াও কোটবাজার-সোনারপাড়া, ভালুকিয়া-কোটবাজার, সোনারপাড়া, মনখালী, ইনানী-কক্সবাজার, থাইংখালী-তেলখোলা, পালংখালী-বটতলী, বালুখালী, ঘুমধুম, উখিয়ার ডাকবাংলো সড়ক সহ প্রায় অর্ধশতাধিক আঞ্চলিক, সড়ক উপ-সড়কে নিয়মিত যাত্রী পরিবহন করে আসছে প্রায় সহস্রাধিক অটোরিকসা, ভটভটি-সিএনজি। চালকদের অভিযোগ তারা বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা ও এনজিও সংস্থার নিকট থেকে ছড়া সুদে ঋণ নিয়ে অটোরিকসা, ভটভটি ও সিএনজি ক্রয় করেছে। প্রতি সপ্তাহে ওই ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে হয়।

গত ২০ দিন যাবত অবরোধ হরতালের মত কর্মসূচীর কারণে তারা সড়কে গাড়ী বের করতে না পারায় কিস্তি পরিশোধ করতে পারছে না। যে কারণে সুদের উপর সুদ যোগ হয়ে মোটা অংকের দেনার ভার মাথায় নিয়ে দিনযাপন করতে হচ্ছে। টমটম চালক নুরুল ইসলাম জানান, সে ৪শ’ টাকার ভাড়ায় টমটম চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিল। অবরোধের কারণে মালিকপক্ষ নাশকতার আশংকায় তার গাড়ী চালাতে দিচ্ছে না। যার ফলে তাকে ধার দেনা করে অনাহারে অর্ধাহারে দিনযাপন করতে হচ্ছে। উখিয়া মাহিন্দ্রা-সিএনজি-অটোরিক্সা মালিক চালক সমবায় সমিতির সভাপতি মামুন চৌধুরী বলেন, তার সমিতিতে প্রায় হাজারেরও অধিক চালক সদস্য রয়েছে, যাদের অধিকাংশই হতদরিদ্র। এসব চালকেরা নিয়মিত গাড়ী চালাতে না পেরে স্ব-পরিবারে আর্থিক দৈন্যদশায় ভুগছে।



মন্তব্য চালু নেই