সেচ সংকটে বিঘ্নিত বোরো চাষ

উখিয়ার খরস্রোতা রেজুখাল এখন শিশুদের খেলার মাঠ হিসেবে পরিণত

নব্যতা সংকটে উখিয়ার খরস্রোতা রেজুখাল এখন মরাখালে পরিণত হয়েছে। নদীর বুকে চলছে শিশুদের খেলাধুলা। এভাবে ৭/৮টি খাল পানি শূণ্যতা হয়ে মরভূমিতে পরিণত হওয়ায় সেচ সংকটে পড়েছে বোরো চাষীরা। অথচ বর্ষা মৌসুমে পানি নিষ্কাশনে বাধাপ্রাপ্ত হওয়ায় গ্রামের পর গ্রাম জলমগ্ন হয়ে দূর্ভোগ পোহাতে হয় খালের দু’পারে বসবাসরত অসংখ্য পরিবারকে। গ্রামবাসীর দাবী খাল জবর দখল করে স্থাপনা নিমার্ণ ও নির্বিচারে বালি উত্তোলনের ফলে নব্যতা হারিয়ে খালের এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

রুমখাঁ মনির মার্কেট গ্রামে বসবাসরত শামশুল আলম (৫৫), সালামত উল্লাহ (৫২)সহ একাধিক প্রবীণ ব্যক্তি রেজুখালের বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, এক সময় এখালের জোয়ার ভাঁটার পানিতে খালের দু’পারে শত শত একর জমিতে ৩ ফসলী চাষাবাদ হয়েছে। জোয়ারের পানি ব্যবহার করে গৃহিনীরা পরিবারের যাবতীয় চাহিদা পূরণ করেছে। অথচ খরস্রোতা এখাল এখন মরাখালে পরিণত হয়েছে। শিশুরা খালের বুকে খেলা করে আনন্দ বিনোদন করছে। গ্রামবাসীর অভিযোগ স্থানীয় প্রভাবশালী চক্র খাল দখল করে স্থাপনা নিমার্ণসহ নির্বিচারে বালি উত্তোলন করার ফলে এ খালটি সংকুচিত হয়ে পড়েছে। যে কারণে বর্ষাকালে জলমগ্ন হয়ে বন্যার প্রভাব পড়ে দূর্ভোগ পোহাতে হয় গ্রামবাসীকে। তারা আরো জানান ইতিমধ্যে খালের ভাঙ্গনে প্রায় শতাধিক পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়েছে।

২০১৩ সালে কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় প্রায় ৫ কোটি টাকা ব্যয় বরাদ্ধে রেজুখালের ভাঙ্গন প্রতিরোধে আরসিসি ব্লক স্থাপন করা হলেও বর্ষায় পানি নিষ্কাশনে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে অধিকাংশ ব্লক পানির ঢলের সাথে অদৃশ্য হয়ে গেছে। রেজুখাল ছাড়াও থাইংখালী খাল, হিজলিয়া খাল, দোছরী খাল, পালংখালী খাল, মরিচ্যা খাল, থিমছিড় খাল ও গয়ালমারা খাল সহ ৭/৮টি খাল এখন পানি শূণ্য হয়ে ধু ধু মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শংকর কুমার মজুমদার জানান, নব্যতা হারানোর ফলে খরস্রোতা এ খালগুলো এখন জনগণের কোন উপকারে আসছে। উপরোন্তু বর্ষা মৌসুমে অতিরিক্ত পানির কারণে বিস্তুৃর্ণ এলাকা জলাবদ্ধতা হয়ে পড়ার আশংকা রয়েছে।

২০১৩-১৪ অর্থ বছরে বাংলাদেশ কৃষি কপোর্রেশনের আওতায় বালুখালী, গয়ালমারা ও মনখালীতে ২ কি.মি. করে খাল খনন করা হলেও তা জনগণের কোন উপকারে আসেনি বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। বিএডিসির প্রকৌশলী আবুল কাসেম জানান, বরাদ্ধ না থাকার কারণে খাল খনন কার্যক্রম লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। কক্সবাজার পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি দীপক শর্মা দীপু জানান, গ্রামীন জনপদের পরিবেশ সম্মত এ খালগুলো রক্ষনাবেক্ষণের দায়িত্ব স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সহ পরিবেশবাদী সচেতন মহলের। বিদ্যমান এখালগুলোকে বাঁচিয়ে রাখা না হলে খাদ্য উৎপাদন সহ শাক-সবজ্বি চাষাবাদ ও উন্নয়ন কাজে মারাত্মক হুমকির মুখে পড়তে পারে।

এব্যাপারে জানতে চাওয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিল্লোল বিশ্বাস জানান, খাল দখল ও অবৈধ বালি উত্তোলনের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।



মন্তব্য চালু নেই