ইভটিজিংয়ের মতো আমাকে ‘ডিজিটাল টিজিং’ করা হয়েছে

তথ্যপ্রযুক্তির প্রসার ঘটাতে গিয়ে নানা বাধা ও তাচ্ছিল্যের শিকার হতে হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, যখন ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার ঘোষণা করি তখন প্রথম দিকে আমাকে ও আমাদের সরকারকে টিজ করা হতো। অথচ এখন দেশ সত্যিকারের ডিজিটালের দিকে এগিয়ে চলেছে। ওই সময় ইভটিজিংয়ের মতো আমাদেরকে ‘ডিজিটাল’ টিজিং শুনতে হতো।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর বিজয় সরণিস্থ নভোথিয়েটারের সম্মেলন কক্ষে উন্নয়ন উদ্ভাবন বাংলাদেশ-২০১৬ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের নির্বাচনী মেনিফেস্টোর অন্যতম অঙ্গীকার ছিল ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ বাস্তবায়ন। ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ শব্দটি আমার ছেলে জয়ই আমাদেরকে উপহার দিয়েছে। তারই পরামর্শে ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে আমরা কাজ শুরু করি। এটি এখন আর স্বপ্ন নয়, বাস্তবতা।

শেখ হাসিনা বলেন, জঙ্গিবাদ নতুন উপসর্গ হিসেবে দেখা দিয়েছে। প্রযুক্তির ব্যবহারের যেমন ভালো কাজ হচ্ছে, আবার জঙ্গি সন্ত্রাসীরাও প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। সেজন্য আমাদের সতর্ক হতে হবে। বাংলার মাটিতে জঙ্গি-সন্ত্রাসীদের স্থান হবে না।

তিনি বলেন, আমরা সারাদেশে ৫ হাজার ২৭৫টি ডিজিটাল সেন্টার স্থাপন করেছি। এখান থেকে ২০০ প্রকার ই-সেবা দেয়া হচ্ছে। তথ্য-প্রযুক্তি খাতে ব্যাপকভাবে অবকাঠামোগত উন্নয়ন করা হয়েছে। দেশের সকল উপজেলায় অপটিক্যাল ফাইবার কানেকটিভিটি চালু করা হয়েছে। ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে পারস্পরিক যোগাযোগ দ্রুত ও সহজতর হয়েছে।

ইন্টারনেট ডেনসিটি ও সাবমেরিন ক্যাবলের ক্যাপাসিটি বেড়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে তথ্য-প্রযুক্তিবান্ধব নীতি প্রণয়ন করা হয়েছে। দেশের ৯৯ ভাগ এলাকা এখন মোবাইল নেটওয়ার্কের আওতায় এসেছে। দেশে ৩-জি প্রযুক্তির মোবাইল নেটওয়ার্ক চালু করা হয়েছে। ৪-জি প্রযুক্তিও অচিরেই চালু করা হবে।

সারা দেশে ২৫ হাজারেরও বেশি ওয়েবসাইট নিয়ে ‘জাতীয় তথ্য বাতায়ন’ চালু করা হয়েছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী। এছাড়াও ১ হাজার ৫০০ এর বেশি সরকারি ফরম নিয়ে চালু করা হয়েছে ফর্ম পোর্টাল।

‘মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম’ ও ‘ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরি’ নামে দুটি মডেল উদ্ভাবন করা হয়েছে যার মাধ্যমে দেশের ২৩ হাজার ৩৩১টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং ৪ হাজার ৫০০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় সুবিধা পাচ্ছে। ১০ হাজার বিষয়ে ১ লক্ষ পৃষ্ঠার কনটেন্ট নিয়ে জাতীয় ই-তথ্যকোষ তৈরি করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণ সেবার জন্য আমাদের কাছে আসবে না, আমরাই তাদের কাছে গিয়ে সেবা দিয়ে আসবো- এটাই আমাদের সরকারের নীতি।

সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে আপনারাই মুখ্য ভূমিকা পালন করছেন। আপনাদেরই দেশকে এগিয়ে নিতে হবে। আমি বিশ্বাস করি জনপ্রশাসনের প্রতিটি কর্মকর্তার সেই যোগ্যতা ও দক্ষতা আছে।



মন্তব্য চালু নেই