ইন্টারভিউ বোর্ডে যেসব কথা এড়িয়ে চলবেন..

বর্তমানে চাকরীর বাজার ততটাই প্রতিযোগিতামূলক যতটা হয়তো আপনি আশাও করেন না । আর তাই এত প্রার্থীর ভিড়ে যোগ্য লোকটিকে খুঁজে নিতে প্রতিষ্ঠানের চাকুরিদাতারা নানা চিন্তাভাবনা, কৌশল আর বুদ্ধিমত্তার আশ্রয় নিয়ে থাকেন। ইন্টারভিউ বোর্ডে ঠিক সেটারই প্রতিফলন ঘটে। কিন্তু অনেক প্রার্থী আছেন, যারা যোগ্য হওয়া সত্ত্বেও কিছুতেও যেন তাদের ভাগ্যে জুটছে না চাকরি নামের সোনার হরিণটি। কেননা, ইন্টারভিউ বোর্ডে নার্ভাসনেস, চিন্তা না করেই উত্তর দেয়া, অতিরিক্ত স্মার্টনেসের কারণে এমন কিছু ভুল উত্তর দিয়ে ফেলেন যে চাকরী তো দূরের কথা মানুষটি সম্পর্কেই একটি খারাপ ধারণা তৈরী হয়ে যায়। চাকরীর ইন্টারভিউ বোর্ডে কিছু ভুল কথা কিন্তু একেবারেই বলা যাবে না যা আমরা অনেক সময় বলে ফেলি।

জেনে নিন কি সেই কথাগুলো যা আপনাকে ক্যারিয়ারের দৌড়ে পিছিয়ে রাখছে প্রতিনিয়তঃ

১। দুঃখিত, আমার আসতে একটু দেরী হয়ে গেলোঃ

ইন্টারভিউ বোর্ডে যদি একটু দেরী করেও ফেলেন, এটি বলার প্রয়োজন নেই, কর্তারা জিজ্ঞেস করার আগ পর্যন্ত। কেননা নয়তো এতে তারা ফোকাস করবেন শুরুতেই এবং তারা কি চাইবেন প্রতিদিনই অফিসে দেরী করে আসা একজনকে চাকরি দিতে?

২। আপনাদের বার্ষিক ছুটি বা অসুস্থতার জন্যে নির্ধারিত ছুটি কতদিনঃ

এটা কখনোই জিজ্ঞেস করা যাবে না। নয়তো তারা ভাবতেই পারেন, যে মানুষটি চাকরিতে জয়েন করার আগেই ছুটিছাটার কথা ভাবছে সে যে অফিসে বেশিরভাগ সময়েই অনুপস্থিত থাকবে না তার গ্যারান্টি কি?

৩। আমার একটা জরুরী ফোন এসেছে, একটু রিসিভ করতে পারি?

ওহ না! এটা বলেছেন তো চাকরি শেষ। ফোন বা এসএমএস কোনটির ব্যাপারেই ভাবা যাবে না। সব চেয়ে ভালো হয় ফোনটি সাইলেন্ট করে বোর্ডে ঢুকুন।

৪। আজ থেকে ৫ বছর পর?

আজ থেকে ৫ বছর পর নিজেকে কোথায় দেখতে চান? প্রশ্নকর্তারা এ প্রশ্নটি করতেই পারেন। সাধারণত প্রার্থীরা উত্তর দেন, ‘এখানেই জব করতে চাই’। মোটেই ভালো উত্তর নয়। এভারেজ মানসিকতার প্রকাশ। এর চেয়ে বলুন, আজ থেকে ৫ বছর পর নিজের অর্জিত দক্ষতা ও যোগ্যাতাকে কাজে লাগিয়ে ভালো কোন পজিশনে কাজ করতে আগ্রহী।

৫। আমার আগের প্রতিষ্ঠান ভালো ছিলো নাঃ

কেন জব ছেড়েছেন এ কথার উত্তরে ভুলেও আগের প্রতিষ্ঠানের বদনাম করতে যাবেন না তারা যত খারাপই হোক না কেন। এতে চাকরীদাতারা ভাববেন যে, আপনি এই কোম্পানি ছেড়ে দিলেও এসব কথাই অন্য কোথাও গিয়ে বলবেন। এর চেয়ে বলুন, “আরো ভালো সুযোগ পাবার জন্যে”।

৬। পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেখে আপনাদের ব্যাপারে জেনেছিঃ

মোটেই ভালো ইম্প্রেশন তৈরী করবে না এটা। চাকরীদাতারা সব সময় চান প্রার্থী যেন একটু কষ্ট করে তাদের খুজে বের করে। তাই বলুন, আপনাদের ওয়েবসাইটে চোখ রাখি আমি, সেখানেই দেখে এপ্লাই করেছি চাকরির জন্যে।

৭। আমাকে কি ইউনিফরম বা ফর্মাল পোষাক পরতেই হবে প্রতিদিন?

ফুটো বেলুনের মতই এতক্ষণের আপনার সব স্মার্টনেসে হাওয়া উড়ে যাবে এই প্রশ্নটির মাধ্যমে। যে নিয়ম সে নিয়মেই চলতে হবে আপনাকে। আপনার জন্যে চাকরির পরিবেশ বদলে যাবে না। কিন্তু এই কথায় আপনার চাকরিটা না হবার সম্ভাবনা কিন্তু ৯৯%।

আর একই সাথে ইন্টারভিউ বোর্ডে আসার আগে একটু জেনে আসুন প্রতিষ্ঠানটি সম্পর্কে এবং নিজের অভিজ্ঞতা, পড়াশোনা সম্পর্কে ভালো একটি ব্রিফিং এর চর্চা করে আসুন বাসা থেকেই। ব্যস! আর কে ঠেকায়!



মন্তব্য চালু নেই