ইকবালের ভাতিজাকে বাঁচিয়ে দিল পুলিশ

আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য এইচ বি এম ইকবালের কিশোর ভাতিজা ফারিজ আহমেদকে আটক করেও বাবার জিম্মায় দিয়ে দিয়েছে পুলিশ। অপ্রাপ্ত বয়সে গাড়ি চালানো, দুর্ঘটনায় চার জনকে আহত করা বা গাড়ি থেকে মদ উদ্ধার-কোন ঘটনাতেই মামলা হয়নি তার বিরুদ্ধে।

পুলিশের যুুক্তি, আহত কেউ মামলা করতে রাজি না হওয়ায় তাদের কিছু করার ছিল না। আর লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালানোর দায়ে গাড়িটি জব্দ করা হয়েছে।

১২ অক্টোবর গুলশানে ফারিজ আহমেদের বেপরোয়া গতির গাড়ি দুটি রিকশাকে চাপা দেয় বলে অভিযোগ আছে। এই ঘটনায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের এক চাকুরে ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন যার খরচ দিচ্ছে ফারিজের পরিবার।

ওই ঘটনার পর তোলা বেশ কিছু ছবিতে দেখা যায় ফারিজকে ঘিরে আছেন বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা। এক পর্যায়ে ফারিজ মোবাইল ফোনে কারও সঙ্গে কথা বলে এবং পরে দুইজন পুলিশ কর্মকর্তা একটি মোটর সাইকেলে করে ফারিজকে নিয়ে চলে যায়।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রাস্তা খালি পেয়ে ফারিজ অপর একটি গাড়ির সঙ্গে রেসিংয়ে অংশ নেয়। ফারিজের টয়োটা ফরচুনা গাড়িটি দুটি রিকশাকে সজোরে ধাক্কা দেয়। এ সময় আহত হন রিকশার চালকসহ চারজন। তাদের ইউনাইটেড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে দুইজন চলে গেলেও চিকিৎসা নেন অপর দুইজন।

ওই ঘটনায় টয়োটা ফরচুনা গাড়িটি থানায় নিয়ে যাওয়া হলেও কিশোর ফারিজ এবং তার দুই বন্ধুকে ছেড়ে দেয় পুলিশ। ঘটনার ছয়দিন পার হলেও এখন পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি।

জানতে চাইলে গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘আহতদের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা তারাই করেছেন। গাড়িটি জব্দ করা হয়েছে। ওই ছেলেদেরকে অভিভাবকদের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে। যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাদের পক্ষ থেকে অভিযোগ পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বাদী যদি মামলা না করেন তাহলে পুলিশের কি করার আছে?’

লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালানো বা গাড়িতে মদ উদ্ধারের ঘটনায় কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, জানতে চাইলে সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘গাড়িটি থানায় আনা হয়েছে। আর গণমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মদের যে কথা এসেছে তা অতিরঞ্জিত’।

তবে একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছে, টয়োটা ফরচুনার ভেতরে থাকা ফারিজ ও তার দুই বন্ধু সবাই মদ্যপ অবস্থায় ছিল। আর ফারিজ নিজেও মদের ছবির সঙ্গে নিজের সেলফি তুলে ফেসবুকে আপলোড করে।
দুর্ঘটনার পর তারা পুলিশের কাছে স্বীকার করে যে, তারা তাদের বন্ধুর গাড়ির সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছিল।

এ সময় তারা মদ্যপ অবস্থায় ছিল এবং ছবিও তুলছিল। একপর্যায়ে ফারিজ গাড়ির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে।
এ ব্যাপারে ঢাকা জজকোর্টের আইনজীবী জাহিদুর রহমান মিয়া বলেন, ‘ কেউ যদি সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায় তাহলে চালকের সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদ- হয়। আহত হলে সাজা আরো কম হয়। এক্ষেত্রে পুলিশ নিজেও বাদী হয়ে মামলা করতে পারে। ঢাকাটাইমস



মন্তব্য চালু নেই