ইউপি নির্বাচন: ধামরাইয়ে শেষ দিনে চলছে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা

টিপু সুলতান(রবিন), সাভার প্রতিনিধি : শেষ মূহূর্তে গণসংযোগ আর প্রচার-প্রচারণায় জমে উঠেছে  ধামরাই উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন।পঞ্চম ধাপে ২৮ মে উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে নির্বাচনী সহিংসতাও সীমানা জটিলতার কারণে সূতিপাড়া ইউনিয়নটির নির্বাচন পেছানোর জন্য নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

সারাদেশে পঞ্চম ধাপের ৭২৯টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আগামী ২৮ মে ভোটগ্রহন অনুষ্ঠিত হবে।নির্বাচনী এলাকায় বুধবার মধ্যরাত ১২টা থেকে মোটরসাইকেল চলাচলের ওপর নিষেধাঞ্জা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন(ইসি)।

আর আজ(বৃহস্পতিবার)মধ্যরাত মধ্যরাত ১২টায় শেষ হচ্ছে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা।গতকাল(বুধবার)নির্বাচন কমিশনের কাছথেকে যানচলাচল সংক্রান্ত নির্দেশনা সড়ক পরিবহন ওসেতু মন্ত্রনালয়ে পাঠিয়েছেন।আর প্রচারণা বন্ধের জন্য রির্টানিং কর্মকর্তাকে উদ্দোগ নিতে বলেছেন।

আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, বিএনপি, স্বতন্ত্র হয়ে চেয়ারম্যান পদে ৮৭ জন প্রার্থী এবারের নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। এছাড়া সংরক্ষিত আসনে ২৭১ জন, সাধারণ আসনে ৫৭৫ জনসহ মোট ৯৩৩ জন প্রার্থীর প্রচারণায় নির্বাচনী আমেজ বইছে উপজেলার ইউনিয়নগুলোতে।

প্রার্থীরা প্রতিশ্রুতির ফুলঝুরি নিয়ে ভোটারদের মন জয় করতে নির্বাচনী এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন। আর ভোটাররা খুঁজছেন, যোগ্য প্রার্থীকে। অপরদিকে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করতে ইতোমধ্যেই সকল প্রস্তুতি নিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

উপজেলার ইউনিয়নগুলোর অলিগলি ও রাস্তাঘাট ছেঁয়ে গেছে পোস্টারে পোস্টারে। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা নিজের ছবি ও মার্কা সম্বলিত লিফলেট হাতে ছুটছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। প্রচারণা আর গণসংযোগে এক কথায় ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। দিচ্ছেন নানান প্রতিশ্রুতি। তবে ভোটাররা বলছেন, দেখে শুনে যোগ্য প্রার্থীকেই নির্বাচিত করবেন তারা। অবশ্য নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে এলাকার উন্নয়নকেই প্রাধান্য দিচ্ছেন প্রার্থীরা।

ধামরাই উপজেলার বালিয়া ইউনিয়নে চারজন প্রার্থীর মধ্যে আওয়ামী লীগের সাবেক চেয়ারম্যান আহমদ হোসেন বলেন, আমি রাস্তাঘাটের উন্নয়নে কালভার্ট, বক্স-কালভার্ট নির্মাণ করব। বিধবা ভাতা, বয়স্ক ভাতা সম-বণ্টন করে এলাকার মানুষের উন্নয়নে কাজ করব।

ইউনিয়নটিতে বিএনপি মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী খন্দকার শহিদুল ইসলাম ওরফে শহীদ মাস্টার বলেন, জনগণ সঠিকভাবে ভোট দিতে পারবে কিনা এনিয়ে জনগণের মধ্যে আতঙ্ক রয়েছে। কারণ ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীরা বিভিন্নভাবে ভোটারদেরকে হুমকি-ধামকি দিচ্ছে। তাই নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে নির্বাচন কমিশনের পাশাপাশি প্রশাসনের সর্বাত্মক সহযোগিতা চান তিনি।

এই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী মোস্তাক আহাম্মদ সিকদার (জাতীয় পার্টি) এবং স্বতন্ত্র হিসেবে বর্তমান চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান মধু (বিদ্রোহী বিএনপি) সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন। এছাড়া উপজেলার বাকি ইউনিয়নগুলোতেও আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসলে বিএনপি দলীয় প্রার্থীরা সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন।

উপজেলার প্রায় অধিকাংশ ইউনিয়নের ভোটার অভিযোগ করে বলেন, প্রতিবছর ভোটের সময় তাদের দ্বারে দ্বারে ভোট চাইতে আসেন প্রার্থীরা। কিন্তু এরপর আর তাদের খুঁজে পাওয়া যায় না। একটি চেয়ারম্যান সার্টিফিকেটের জন্য ঘন্টার পর ঘন্টা তাদের বসে থাকতে হয় পরিষদে। এছাড়া নির্বাচনের আগে এলাকার উন্নয়নসহ নানা প্রতিশ্রুতি দিলেও তার বাস্তবিক প্রমাণ মেলে কিঞ্চিত পরিমাণ। তাই এবার তারা যোগ্য প্রার্থীকেই নিজেদের

উপজেলা নির্বাচন কমিশনার মো. নাজিম হোসেন জানান, সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করতে ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে সকল প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।

আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে বিএনপি প্রার্থীদের উৎকণ্ঠার ব্যাপারে ধামরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রিজাউল হক জানান, আমরা যে কোন প্রার্থীর অভিযোগ পেলেই দোষী যে কোন দলেরই হোক না কেন তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিব। আর নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রতিটি ইউনিয়নে মোবাইল কোর্ট, থানা পুলিশ, সাদা পোশাকধারী পুলিশ, স্ট্রাইকিং ফোর্স ও আনসর সদস্যরা কাজ করবেন বলেও জানান তিনি।

উল্লেখ্য, ধামরাই উউপজেলায় ইউপি নির্বাচনে ১৫টি ইউনিয়নের ২ লক্ষ ৭২ হাজার ৭ জন ভোটার ১৬৮টি ভোট কেন্দ্রে ৭২০টি বুথে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।



মন্তব্য চালু নেই