‘আ.লীগের সবাই মোশতাক হয় নাই’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন, আওয়ামী লীগের সবাই মোশতাক হয় নাই, বেঈমানী করে নাই।

মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের ৬৬তম প্রতিষ্ঠাবাষিকীর আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, আজ আওয়ামী লীগের গৌরবময় পথচলার ৬৬ বছর। এই ৬৬ বছরের পথচলায় মধ্যে ৩৪ বছর আমাদের দলের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন আজকের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। আমি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এবং আপনাদের পক্ষ থেকে ওনাকে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানাই।

এই ৩৪ বছর হুমকি-ধামকি এবং অনেক প্রতিকূলতার মধ্যে জননেত্রী শেখ হাসিনা নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন। উনি যখন আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পান বয়স ছিল অনেক কম। ছোট দুটি সন্তান। এক ছেলে এবং এক মেয়ের মা। তার ওপর ছিল বঙ্গবন্ধু এবং তার পরিবারের হত্যাকান্ডের ঘটনা।

সৈয়দ আশরাফ আরো বলেন, লন্ডনের ওই দু:সময়ে শেখ হাসিনা আমাকে সাহায্য করেছেন, সহযোগিতা করেছেন এবং আমাকে বলেছেন, ঘাবড়ানোর কিছু নাই। আমরা আবার আওয়ামী লীগকে গড়ে তুলবো এবং বঙ্গবন্ধুর দল আবার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসব।

মন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনাকে হত্যা করার কতবার চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু তারপরও তিনি বিচলিত হন নাই। আজও তিনি এই ৬৬ বছরের দলকে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন। আমি এই মহান আল্লাহ তালার কাছে প্রাথনা করি তিনি যাতে আরো দীর্ঘায়ু হন এবং সেটা আমাদের জন্য অত্যন্ত জরুরি । মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাজ কিন্তু শেষ হয় নাই। তিনি প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, বঙ্গবন্ধুর অবতর্মানে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা তিনি প্রতিষ্ঠা করবেন। সেই সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা করার জন্য শেখ হাসিনা ৩৪ বছর মানুষের মধ্যে ছিলেন, রাজপথে ছিলেন। ত্যাগ-তিতিক্ষায় জননেত্রী শেখ হাসিনার চেয়ে দ্বিতীয় কোন ব্যক্তি নেই এই বাংলাদেশে।

তিনি বলেন, এই গৌরবময় ৬৬ বছরের পথচলা কিন্তু সুখের ছিল না। বারবার আওয়ামী লীগের ওপর আঘাত এসেছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে সপনিবারে জীবন দিতে হয়েছে। হাজার হাজার বঙ্গবন্ধুর কর্মী এবং সমর্থক বিভিন্ন আন্দোলনে নিজের জীবন বিলিয়ে দিয়েছে। রাজনৈতিক দল হিসেবে এমন নজির পৃথিবীতে দ্বিতীয়টি নেই। এ জন্যই বলে, গৌরবময় পথ চলার ৬৬ বছর।

আমার অনেক স্মৃতি মনে পড়ে আজ। কারণ আমার জন্মই আওয়ামী লীগের ঘরে এমন মন্তব্য করে সৈয়দ আশরাফ বলেন, বঙ্গবন্ধু জেলে। আমার পিতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম সাহেবক তখন অ্যাকটিং প্রেসিডেন্ট। তখন ঢাকায় বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে আওয়ামী লীগের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক হত। তখন আমার বাবার কোন গাড়ি ছিল না। ময়মনসিংহের স্টেশনে যাওয়ার জন্য আগের দিন রিক্সাওয়ালাকে বলতে হত, আমি কালকে গাড়ি ধরবো। তুমি এসে নিয়ে নিও।আমার বাবা রেডি। কিন্তু রিক্সা আসে না, আসে না।

আমাদের বাড়ি থেকে ময়মনসিংহ স্টেশন দুই কিলোমিটার দূরে উল্লেখ করে তিনি বলেন, হঠাৎ করে আমার বাবা বলে উঠলেন, রিক্সা আসুক আর না আসুক আমাকে যেতেই হবে। কালকে আওয়ামী লীগের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক আছে। উনি স্যুটকেসটা হাত ধরে মাথায় তুললেন। হেঁটে ময়মনসিংহের ভিতর দিয়ে স্টেশনে চললেন। তাদের নিষ্ঠা ছিল এরকম। তারা বঙ্গবন্ধুর কর্মী ছিলেন, বঙ্গবন্ধুর বন্ধু ছিলেন। জীবনে কোনদিন তারা বেঈমানি করেন নাই। নিজের জীবন দিয়ে প্রমাণ করেছেন। এই গৌরবময় ও গৌরবের ইতিহাসে আওয়ামী লীগের সবাই মোশতাক হয় নাই, বেঈমানি করে নাই।



মন্তব্য চালু নেই