আসছে হাতির জন্যও ‘সীমানা আইন’
এক দেশ থেকে আরেক দেশে মানুষের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে রয়েছে সীমানা। আবার বৈধ প্রবেশের জন্য রাখা হয়েছে ইমিগ্রেশন সেন্টার। এরপরও মানুষ ‘সর্টকার্ট’ ওয়ে খুঁজতে গিয়ে বা অবৈধ বাণিজ্য বিস্তার করতে সীমানার গোপন করিডোর ব্যবহার করছে। ধরা পড়লে ভোগ করছে শাস্তিও। এ নিয়ে রাষ্ট্রের সঙ্গে রাষ্ট্রের নানা চুক্তি, চুক্তি লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে বাদ-প্রতিবাদ, এমনকি সীমান্তে গুলি ছুঁড়ে হত্যার ঘটনাও ঘটছে। বাংলাদেশ ভারত সীমান্তেইতো এসব ঘটনা ঘটে অহরহ।
যদিও মানুষের সীমান্ত পারাপার নিয়ে এসব ঝুটঝামেলা আমাদের প্রাত্যহিক ও স্বাভাবিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু একবার ভাবুনতো ঠিক এরকম ঘটনা এবার বন্য হাতির ক্ষেত্রেও ঘটতে যাচ্ছে। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বন, পাহাড় ও জঙ্গলে থাকা হাতিরা যেন এক দেশ থেকে আরেক দেশে অনুপ্রবেশ করতে না পারে তার বন্দোবস্ত হচ্ছে। নেয়া হচ্ছে যৌথ ব্যবস্থা! খবরটা বেশ চমকপ্রদ বৈকি!
সত্যি সত্যিই এধরনের একটি যৌথ রূপরেখা তৈরি করেছে বাংলাদেশ ও ভারত। মজা করে বিষয়টিকে হাতির জন্য ‘সীমানা আইন’ বলেও অভিহিত করছেন অনেকে। সীমান্ত পেরিয়ে হাতির অবাধ আনাগোনা নিয়ন্ত্রণে তৈরি করা এ রূপরেখা অবশ্য হুবহু মানব অনুপ্রবেশ ঠেকানো আইনের মতো নয়।
গত বৃহস্পতিবার কলকাতায় দু’দেশের বন কর্মকর্তাদের উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে হাতির অনুপ্রবেশ ঠেকানোর লক্ষে নির্দিষ্ট রূপরেখাটি তৈরি হয়েছে। ধারাবাহিক পর্যালোচনার ভিত্তিতে পরবর্তীকালে এ বিষয়ে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষরের সম্ভাবনাও প্রবল হয়ে ওঠেছে বৈঠকের মধ্য দিয়ে।
বলা হচ্ছে, জঙ্গল লাগোয়া লোকালয়ে হাতির হানা বাড়ছে দিনকে দিন। তবে জঙ্গল ছেড়ে শুধু লোকালয়ে হানাই নয়, হাতির পালের দেশান্তরী হওয়ার প্রবণতাও বাড়ছে। হাতির এই অনুপ্রবেশ নিয়ন্ত্রণেই এবার নড়েচড়ে বসলো ভারত ও বাংলাদেশের বন দপ্তর। কলকাতায় আয়োজিত উচ্চপর্যায়ের ওই বৈঠকে রাজ্যের বন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।
হাতির অবাধ আনাগোনায় নজরদারি ও দ্বিপাক্ষিক সমন্বয়ের লক্ষ্যে ঠিক হয়েছে- ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে হাতি পারপারের যত করিডোর আছে তা ফিরিয়ে দিতে হবে। হাতি ও মানুষের দ্বন্দ্ব রুখতে দু’দেশেই এলিফ্যান্ট ম্যানেজমেন্টে জোর দেয়ার বিষয়ে ঐক্যমত্যে পৌঁছেছেন বন কর্মকমর্তারা।
সিদ্ধান্ত হয়েছে, ইন্দো-বাংলা সীমান্তে হাতির আনাগোনা সম্পর্কে দু’দেশের বন দপ্তর এবার থেকে তথ্য আদানপ্রদান করবে। হাতির দাঁতের চোরাকারবার কড়া হাতে মোকাবেলা করা হবে।
দু’দেশই হাতি সংক্রান্ত সচেতনতামূলক কর্মসূচি গ্রহণের সিদ্ধান্তও হয়েছে বৈঠকে। হাতির হানাদারি ঠেকাতে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার চাওয়া হয়েছে বাংলাদেশ থেকে। ভারতীয় বন দপ্তরের শীর্ষমহলও এ ব্যাপারে আশা দিয়েছে।
এছাড়াও বৈঠকে সুন্দরবন নিয়ে ট্রান্স বর্ডার প্রোটেক্টেড এরিয়া কনসেপ্টের প্রস্তাবও দেয়া হয় সুন্দরবন বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভের পক্ষ থেকে।
মন্তব্য চালু নেই