‘আর কোনো রানা প্লাজা দেখতে চাই না’
পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, ‘আমরা আর কোনো রানা প্লাজা দেখতে চাই না। বর্তমান সরকার এ ব্যাপারে উদ্যোগ নিয়েছে।’
তিবি বলেন, মানবসৃষ্ট দুর্যোগে মৃত্যু আমরা দেখতে চাই না। বিশ্বের সবার মতো আমিও মানুষের স্বাভাবিক মৃত্যু প্রত্যাশা করি। ঢাকা শহরসহ দেশের কোন এলাকায় কী ধরনের ভবন হবে, সে বিষয়ে সব অঞ্চল ম্যাপিং করে যথাযথ পরীক্ষা-নীরীক্ষার মাধ্যমে চিহ্নিত করতে হবে।’
শনিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বিশ্বব্যাংক ও জাইকার অর্থায়নে বাংলাদেশে আরবান বিল্ডিং সেফটি প্রজেক্ট ও আরবান রিসাইলেন্স প্রজেক্টের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন পরিকল্পনামন্ত্রী।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, মানবসৃষ্ট অনাচারে পৃথিবী আজ কঠিন বিপর্যয়ের মুখোমুখি। জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে পৃথিবীর তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে আজ এক ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। এরই প্রভাবে পৃথিবীর অনেক অঞ্চল পানির নিচে তলিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের সিডর আক্রান্ত এলাকা আজও স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরেনি। ২০৩০ সালের মধ্যে পানির উচ্চতা ৩০ ইঞ্চি বেড়ে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। জলবায়ুর বিরূপ প্রভাবে হিটওয়েভে মারা যাচ্ছে অগণিত মানুষ।
মন্ত্রী আরো বলেন, অতি সম্প্রতি পৃথিবীর ৬১৬টি শহরের ওপর একটি জরিপ চালানো হয়। এ থেকে উঠে আসে, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ভয়াবহ বন্যার চিত্র। ১৯৯৮ সালে ফ্রান্সের নিমস শহর, ২০০৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ অরলিন্স, ২০১০ সালে অস্ট্রেলিয়ার ব্রিসবেন এবং দুই সপ্তাহ আগে ভারতের চেন্নাই শহর ভয়াবহ বন্যায় তছনছ হয়ে যায়। কেবল ঢাকা শহর দুর্যোগের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপ্রবণ নয়।
তিনি বলেন, জলবায়ুর পরিবর্তনজনিত দুর্যোগসহ বেশকিছু দুর্যোগ মোকাবিলা করা কঠিন নয়। তবে এ ব্যাপারে জনসচেতনতা সৃষ্টির পাশাপাশি ভবন নির্মাণে সবাইকে আরো সতর্ক থাকতে হবে। সব শর্ত প্রতিপালন করে ভবন নির্মাণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জোরালো ভূমিকা গ্রহণ করছে।
অনুষ্ঠানে ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের উপাচার্য অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মঈনউদ্দিন আব্দুল্লাহ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শাহ কামাল, জাইকার জ্যেষ্ঠ প্রতিনিধি হিরুউকি তমিতা, বিশ্বব্যাংকের জ্যেষ্ঠ দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা বিশেজ্ঞ মারু এস ফর্নি এবং জাইকার চিফ রিপ্রেজেনটেটিভ মিকিও হাতাইডা।
বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের অধিকাংশ নগর অবকাঠামো ও ভবন তৈরিতে বিল্ডিং কোড মানা হয়নি। তারা বলেন, তৈরী পোশাক খাত ৪০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি জিডিপিতে ১৫ ভাগ অবদান রাখছে। কিন্তু এ খাতটির টেকসই সম্প্রসারণ অব্যাহত রাখতে ‘সেফটি স্ট্যান্ডার্ড’ একটি বড় চ্যালেঞ্জ ।
মন্তব্য চালু নেই